শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

‘ছোটবেলায় পালাতাম, এখন স্বেচ্ছায় টিকা দিলাম’

সংবাদদাতার নাম :
  • খবর আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২১
  • ৩৯৫ এই পর্যন্ত দেখেছেন

করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার জন্য সকালেই হাসপাতালে হাজির হন তাঁরা। প্রথমে নিবন্ধন, এরপর শারীরিক সুস্থতার কিছু পরীক্ষার পর একে একে তাঁদের দেওয়া হচ্ছে করোনাভাইরাসের টিকা। তারপর আধা ঘণ্টার জন্য বিশ্রাম।

রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে। প্রথম করোনার টিকাটি নেন হাসপাতালটির সিনিয়র কনসালট্যান্ট নন্দিতা পাল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোটবেলায় যখন ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল, পালিয়ে গিয়েছিলাম। ধরে এনে ভ্যাকসিন দিয়েছিল। আর এখন স্বেচ্ছায় ভ্যাকসিন দিলাম। এটাই ভালো লাগছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘টিকা দেওয়ার আগে কোনো রকম ভয়ভীতি ছিল না। টিকা দেওয়ার পর আরও অনুপ্রাণিত হয়েছি। ভালো লাগছে, এর অংশ হতে পারলাম। গর্বিত মনে হচ্ছে।’

আজ রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। আজ পাঁচটি হাসপাতালে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে টিকা দেওয়ার কথা।

চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, যেকোনো ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেও ব্যবস্থা আছে। কোনো জটিলতা হলে হাসপাতালেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মুগদা হাসপাতালে দ্বিতীয় যে ব্যক্তি আজ করোনার টিকা নিলেন তিনি হাসপাতালটির কনসালট্যান্ট আবু সাঈদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার একদম ভয় বা অস্বস্তি লাগেনি। কিছু সমস্যা হতে পারে, যেমন: একটু ব্যথা হতে পারে, জ্বর হতে পারে, শরীরে র‌্যাশ হতে পারে। এর জন্য আমরা তৈরি আছি। আমরা এগিয়ে এলে সাধারণ মানুষ উৎসাহিত হবে। মানুষের দ্বিধা অমূলক নয়। এটা কেটে যাবে।’

মুগদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ এ হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, স্টাফসহ ৬০ জনকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে। সকাল সোয়া ১০টা থেকে চলছে টিকা কার্যক্রম।

মুগদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. আহমাদুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের স্টাফদের অনেকেই করোনার টিকা দিতে চাইছেন। প্রাথমিকভাবে সাধারণ মানুষের ভীতি দূর করা দরকার। টিকার সে রকম কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গুজবও আছে। তিনি আরও বলেন, ধীরে ধীরে মানুষের সংশয় দূর হয়ে যাবে। মানুষও টিকা দিতে আগ্রহী হবে।

এদিকে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়। এখানে আজ ১২০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রথম করোনার টিকা নিয়েছেন হাসপাতালটির নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিনের কার্যক্রমে টিকা নিতে পেরে ভালো লাগছে। আমার কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। টিকাস্থানে কোনো ব্যথা হচ্ছে না, ফুলে যায়নি, জ্বরও আসেনি। এ রকম সমস্যা কম ক্ষেত্রে হতে পারে।’ এই অধ্যাপক বলেন, ‘তবে করোনার টিকা নেওয়া মানেই শতভাগ নিরাপদ হলাম, তা নয়। সব সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহকারী পরিচালক আশরাফুল আলম প্রতিষ্ঠানটির করোনা টিকাদান কেন্দ্রের ফোকাল কর্মকর্তা। তিনি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টিকা নেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে প্রায় ১০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আরও মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। চিকিৎসক হিসেবে টিকা নিতে আমরা উৎসাহ দিই।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজে সাত দিন পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী টিকা কার্যক্রম চলবে বলে জানান আশরাফুল আলম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের আনসার সদস্য রেশমা আক্তার পারভীন করোনার টিকা নিয়েছেন আজ সকালে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিকা নিয়েছি। টিকা নেওয়ায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। দেওয়ার আগেও আনন্দিত ছিলাম, দেওয়ার পরও ভালো লাগছে।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজে আজ সকালে করোনার টিকা নিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। টিকা নেওয়া শেষে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ভীতি আছে যে ভিআইপিরা টিকা নিচ্ছেন না। সে ভীতি কাটানোর জন্য আজ টিকা নিয়েছি। আমার শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে না। এ টিকা নিয়ে কারও ভয়ের কোনো কারণ নেই।’

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102