

জাতিসংঘের ৬টি দাপ্তরিক ভাষা রয়েছে- এই ভাষা গুলো হচ্ছে ইংরেজি,ফরাসি,আরবি, চীনা,রাশিয়ান ও স্প্যানিশ। আর পৃথিবীতে চার সহস্রাধিক ভাষার মধ্যে সপ্তম স্থানে থাকা বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরীক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে র্দীঘদিন ধরে ক্যাম্পেইন করে যাওয়া সংগঠন রিকগনেশন অফ বাংলা এজ এন অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ইউনাইটেড নেশনস এর কনফারেন্স যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা বার্মিংহামের মাল্টিপারপাস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আসা সংগঠনের বিভিন্ন রিজিওনের নেতৃবৃন্দসহ কমিউনিটির শীর্ষজনরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্টানে সংগঠনের শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত নানা কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশিত দ্বিতীয় বই জাতি সংঘে বাংলা নামক স্বারক গ্রন্থের আনুষ্টানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও দোয়া করেন মাওলানা ওলিউর রহমান চৌধুরী দুবাগী ।
রিকগনেশন অফ বাংলা এজ এন অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ইউনাইটেড নেশনস এর কেন্দ্রীয় সভাপতি তফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ফয়জুর রহমান চৌধুরী এমবিই‘র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাধারণ সভা ও বুক লাঞ্চিং অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৃটিশ এমপি ব্যরিষ্টার আইয়ুব খান তাঁর সামর্থ্যের মধ্যে বাংলাকে জাতিসংঘে দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে অন্তর্ভুক্তি করতে প্রচারণার চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান সহ সংগঠনের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং সমাজে ‘ডাইভারসিটি’-এর উন্নয়ন ও চর্চায় এমন সংগঠন যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন -বাংলা একটি সমৃদ্ধ ভাষা ।বিশ্বের ৩৩ কোটি লোক বাংলা ভাষায় কথা বলেন ।তাই বাংলা যাতে জাতিসংঘের পূর্ণ দাপ্তরিক ভাষা হয় সে জন্য তিনি সমর্থন প্রদান করে যাবেন।
বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘে দাপ্তরিক ভাষায় অন্তর্ভুক্তিকরণের লক্ষ্যে অব্যাহত প্রচারণার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রবীণ কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব কে কে এম আবু তাহের চৌধুরী, সুইনডন কমিটির সভাপতি আরজু মিয়া এমবিই, কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য আব্দুল লতিফ জেপি, সাউথ ওয়েলস রিজিওনাল সভাপতি সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ মফিজুর রহমান, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আবু তাহের এমবিই, বার্মিংহাম বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী যুবরাজ, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুল হাছান চুনু, কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল কাদির আবুল, কেন্দ্রীয় সদস্য ফিরোজ খান, পোর্টসমাউথ-এর সভাপতি মাসুদ আহমদ, সাবেক কাউন্সিলার শাহীদ আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য সাংবাদিক ফারুক যোশী, লন্ডন মহানগরের সভাপতি নাজমুল হোসেন চৌধুরী, কমিউনিটি নেতা ডাক্তার আব্দুল খালিক, সংগঠনের ম্যানচাষ্টার কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট মীর গোলাম মোস্তফা, পোর্টস মাউথ-এর সাধারণ সম্পাদক আবু সোয়েব তানজাম, বাংলা কাগজের চেয়ারম্যান আজাদ আবুল কালাম,বাংলা কাগজের সহ সম্পাদক কলামিস্ট শেবুল চৌধুরী, কমিউনিটি নেতা মাফিজ খান, লেখক নাসির উদ্দীন হেলাল, কমিউনিটি নেতা আঙ্গুর মিয়া, কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট রাসিয়া খাতুন, ও মিসেস রশিদ প্রমুখ।
সভাপতি তফাজ্জল হোসেন চৌধুরী তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সভাপতি মরহুম তজাম্মেল টনি হক এমবিই সহ সকল প্রয়াত নেতাকে একবিংশ শতাব্দীর ভাষা সৈনিক হিসাবে অভিহিত করে বলেন, কমিউনিটি তাঁদের অবদানকে ভুলবে না বলে উল্লেখ করে সংগঠনটির বিপুল তৎপরতায় ২০২২ সালের ৬ই জুন বাংলা ভাষা জাতিসংঘে আংশিক স্বীকৃতি পেলেও পূর্ণাঙ্গ স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এবং এই কাজে সকলের সহযোগিতা কামনার পাশাপাশি মায়ের ভাষাকে সমুন্নত রাখতে উক্ত সংগঠনের প্রচেষ্টাকে উপস্থিত সকলেই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্টানে প্রবাসে বাংলা চর্চায় নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে এবং বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও শহরে বাংলা স্কুল চালু, বিভিন্ন স্কুলে বাংলা পাঠ্যবই হিসেবে নিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো ও বাংলা সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করার আহ্বান জানানো হয় বলে সাংবাদিক জেসমিন মনসুর জানিয়েছেন।
সভায় জাতিসংঘে বাংলা ভাষা যাতে পূর্ণ দাপ্তরিক ভাষা হয় সে জন্য বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করা হয় ।২০২২ সালে বাংলাকে জাতিসংঘের অদাপ্তরিক ভষা হিসাবে স্বীকৃতি ও চালু করায় জাতিসংঘের মহাসচিবকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয় ।
সভায় বৃটেনের বাংলাদেশ হাই কমিশনের হাই কমিশনার বা সহকারী হাই কমিশনার অথবা হাই কমিশনের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় ।
উল্লেখ্য বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরীক ভাষার স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে সংগঠনটি দেশ ও প্রবাসে বিভিন্নভাবে কাজ করে আসছে। খুব শীঘ্রই তারা এ বিষয়ে সফল হবেন বলে সম্মেলনে আগতরা প্রত্যাশা করছেন। পরিশেষে মধ্যাহ্ন ভোজের মাধ্যমে সভার সফল সমাপ্তি ঘটে।