শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:২০ অপরাহ্ন

নিবন্ধন ছাড়া টিকা নয়

সংবাদদাতার নাম :
  • খবর আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২১
  • ৪৪৮ এই পর্যন্ত দেখেছেন

অনলাইনে নিবন্ধন ছাড়া কাউকে করোনার টিকা দেবে না সরকার। রাজধানীর চারটি হাসপাতালে এ মাসের শেষ দিকে টিকাদানের মহড়া বা ড্রাই রান হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশব্যাপী টিকা কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। শুরুতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টিকা দেওয়ার অনুমতি পাচ্ছে না।

এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে ভারতের উপহার হিসেবে দেওয়া ২০ লাখ করোনার টিকা আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা। তবে টিকা পেতে নিবন্ধনের জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। টিকা গ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তি ঠিক কবে নিবন্ধনের অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবে, তা এখনই বলতে পারছেন না সরকারি কর্মকর্তারা।

টিকা নিয়ে সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে জানানোর জন্য গতকাল বুধবার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। তাতে সাংবাদিকদের বলা হয়, ব্যাপকভাবে টিকাদান শুরুর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে টিকা দিয়ে সাত দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারী জুয়েনা আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমে টিকার ড্রাই রান হবে। তারপর সারা দেশে পরিকল্পনা অনুযায়ী টিকা দেওয়া শুরু হবে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ২১ জানুয়ারি (আজ) এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে ভারতের উপহার দেওয়া ২০ লাখ টিকা দেশে আসবে। এ মাসের ২৭ বা ২৮ তারিখে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকা দেওয়া শুরু হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিতে পারেন। এই দিন সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, সাংবাদিক, পুলিশসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২০ থেকে ২৫ জনকে টিকা দেওয়া হবে। তবে তারিখ ও হাসপাতাল এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

উপহারের টিকার বাইরে সরকারের সঙ্গে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মার চুক্তি রয়েছে।

রাজধানীর বেশ কিছু বড় হাসপাতাল টিকা দেওয়ার জন্য অনুমতি চেয়েছে। কিন্তু সরকার আপাতত সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে টিকাদান কার্যক্রম চালাতে চাইছে না।

আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, বেক্সিমকোর মাধ্যমে আসা টিকা ৮ ফেব্রুয়ারির আগে সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। তরপরই একযোগে দেশব্যাপী টিকা দেওয়া শুরু হবে। ১৮ বছরের কম বয়সী ও গর্ভবতী নারীসহ মোট ৭ কোটি মানুষ টিকা পাবে না।

স্বাস্থ্যসচিব বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে শারীরিকভাবে বড় কোনো সমস্যা এখনো দেখা দেয়নি। তবে টিকা-পরবর্তী কারও শরীরে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তার তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য টিকাগ্রহীতার সবাইকেই টেলিমেডিসিন সেবা দেবে সরকার।

অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, টিকা গ্রহণকারীদের নিবন্ধনের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেছে আইসিটি বিভাগ। এখন তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। পরীক্ষা দু-এক দিনের মধ্যে শেষ হবে।

অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তারা টিকা গ্রহণকারীরা কীভাবে অনলাইনে নিবন্ধন করবেন, তার কিছু কারিগরি দিক উপস্থাপন করেন। এক প্রশ্নের উত্তরে কর্মকর্তারা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র নেই এমন মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা আপাতত নেই।

সরকারি কর্মকর্তারা টিকার নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেন। টিকার নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, করোনাকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যেভাবে স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রচার করা হয়েছে, একইভাবে টিকা প্রদানের সব তথ্য মানুষের কাছে দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নিয়মিত ভ্যাকসিন বুলেটিন প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বেক্সিমকোর মাধ্যমে আসা টিকা ৮ ফেব্রুয়ারির আগে সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। তরপরই একযোগে দেশব্যাপী টিকা দেওয়া শুরু হবে। ১৮ বছরের কম বয়সী ও গর্ভবতী নারীসহ মোট ৭ কোটি মানুষ টিকা পাবে না।

স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি উদ্যোগে টিকা আনার চেষ্টা চলছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে টিকাদানের অনুমতি দেওয়া হবে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান বলেন, রাজধানীর বেশ কিছু বড় হাসপাতাল টিকা দেওয়ার জন্য অনুমতি চেয়েছে। কিন্তু সরকার আপাতত সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে টিকাদান কার্যক্রম চালাতে চাইছে না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কিছু শর্ত সাপেক্ষে অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। যেমন টিকা সংরক্ষণ ব্যবস্থা কেমন, টিকাদানের পর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে বা মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে তা কীভাবে মোকাবিলা করবে, তার তথ্য সরকারকে জানানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। এই বিষয়টি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টিকা নিতে আগ্রহীদের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া কী হবে, তা এখনো আইসিটি বিভাগ ঠিক করেনি বলে জানা গেছে।

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102