বাংলাদেশে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, নিপীড়নের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হত্যা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে, জামিনও দেয়া হচ্ছে না। প্রায় ১৬০ জন সাংবাদিকের নামে মামলা করা হয়েছে। এতে শঙ্কিত রয়েছেন সাংবাদিকরা। কারাবন্দি সাংবাদিকদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন লন্ডনপ্রবাসী সাংবাদিক সমাজ ও বিশিষ্টজনেরা। সেইসঙ্গে সাংবাদিকদের মুক্তি না দিলে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তারা। সভা থেকে এই দাবি জানান সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজনেরা।
সাংবাদিক ড. আজিজুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক কামরুল আই রাসেলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রবীণ সাংবাদিক ও এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য রিচার্ড বর্ন। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ নাহাস পাশা।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিল কাজী ওবিই, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, বিবিসির প্রাক্তন সাংবাদিক শামিম চৌধুরী, সাংবাদিক উর্মী মাজহার, সাংবাদিক মো. রেজাউল করিম মৃধা, মানবাধিকার কর্মী আব্দুল আহাদ চৌধুরী, সাজিদুর রাহমান, জামাল আহমদ খান, সাংবাদিক জুয়েল রাজ, নজরুল ইসলাম অকিব, ইমদাদুন খান, মিফাতুল নূর সহ বাংলাদেশে কারারুদ্ধ সাংবাদিকদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে লন্ডনের ওই প্রতিবাদ সভায় কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক ও বিশিষ্ট নাগরিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রবীণ সাংবাদিক ও এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য রিচার্ড বর্ন বলেন, বাংলাদেশি সাংবাদিকদের প্রতি সহমর্মিতা। বাংলাদেশের মানুষের জন্য সহমর্মিতা। যারা বিনা কারণে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন, তাদের প্রতি সমব্যথী। সঠিক আইনি সহায়তা যেন নিশ্চিত করা হয়, সেজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানান রিচার্ড বর্ন।
ব্যারিস্টার তানিয়া আমির তার বক্তব্যে বলেন, জেল থেকে জঙ্গি জেহাদীদের ছাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকার বিনা শর্তে তাদের ছেড়ে দিল, এটি কি করে সম্ভব? আমি হতবাক। কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে এটি কিভাবে হতে পারে? তিনি বলেন, জঙ্গিদের বের করে জেল খালি করে দিল সরকার, আর ওই খালি জায়গায় মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হলো। সংখ্যালঘু, আইনজীবীদের জেলে ভরে দেয়া হচ্ছে। দরগা শরীফ, লালন মেলা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এর দ্রুত অবসান চাই।
প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, দেশের বড় বড় সন্ত্রাসীরা জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছে আর নিরীহ সাংবাদিকদের দিয়ে জেল ভরে রাখা হচ্ছে। দিন দিন দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে। তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস প্রতিশ্রুতি দিলেও সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি বরং তাদের ওপর নির্যাতন বেড়েছে। সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। বিনা কারণে হয়রাণি না করে তাদেরকে মুক্ত করে দেয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করা হয়।