শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

স্কুলে ভর্তির আবেদন শেষ, ১২ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • খবর আপডেট সময় : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৫৬ এই পর্যন্ত দেখেছেন

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে আবেদন করার সময় শেষ হয়েছে শনিবার (৩০ নভেম্বর)। ওইদিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রথম থেকে নবম শ্রেনিতে ভর্তির জন্য মোট ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৭০৪ জন শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করেছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা যায়, এরমধ্যে সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন পড়েছে ৬ লাখ ২৫ হাজার ৯০৩ টি, আর বেসরকারি স্কুলগুলোতে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০টি আবেদন পড়েছে। এবারও শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ডিজিটাল লটারি ছাড়া অন্য কোনো পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না- বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিসেম্বরেই এ সকল আবেদনের লটারি হবে। যা শিগগিরই শুরু হবে বলে জানা গেছে। লটারির মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হবে, তারাই ভর্তির সুযোগ পাবে। এর আগে গত ১২ নভেম্বর থেকে অনলাইনে ভর্তির আবেদন শুরু হয়।

ভর্তির আবেদন বেশি সরকারি স্কুলে

সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে দেশের মোট ৫ হাজার ৬২৫টি স্কুলে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। মাউশি’র তথ্যানুযায়ী, এ সংখ্যক বিদ্যালয়ে ভর্তিযোগ্য শূন্য আসন ১১ লাখ ১৬ হাজার ৩৩৩টি। এরমধ্যে সরকারি ৬৮০টি স্কুলে ১ লাখ ৮ হাজার ৬৬২টি ভর্তিযোগ্য শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ৬ লাখ ২৫ হাজার ৯০৪টি। অর্থাৎ সরকারি স্কুলের শূন্য আসনের তুলনায় প্রায় ৬ গুণ বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছে। তাই আসন স্বল্পতায় এখানে পড়ার সুযোগ পাবে না আবেদন করা ৫ লাখ ১৭ হাজার ২৪২ জন।

বেসরকারি স্কুলগুলোতে ৭৬ শতাংশ আসন ফাঁকা

ঢাকা ও বিভিন্ন মহানগর ও জেলা সদর পর্যায়ের ৩ হাজার ১৯৮টি বেসরকারি স্কুলের ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭১ টি আসনে ভর্তির জন্য আবেদন পড়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০টি। তারা পছন্দ দিয়েছে মোট ৬ লাখ ১৩ হাজার ৭টি। সরকারি স্কুলের চেয়ে ৮ গুণ বেশি আসন হওয়ার পরও এখানে ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৮৭১টি বেশি আসন এখনো খালি।

এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, সরকারি স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষার মান বেড়েছে। এখন বেসরকারি বিদ্যালয়ের চেয়ে মান অনেক ভালো। আবার সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানকে সরকারি স্কুলে ভর্তি করাতে চায়। বিশেষ করে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন মহানগর ও জেলা সদরে এ প্রবণতা বেশি। আবার খরচও কম।

ভর্তি প্রক্রিয়া 

স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনলাইন আবেদনের সময় শেষ হয়েছে শনিবার (৩০ নভেম্বর)। এবার ডিজিটাল লটারি হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে লটারির পর ফল প্রকাশ করা হবে। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ ডিসেম্বর লটারির দিন ঠিক করা আছে। আর এর দু’দিন পর ১২ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ করার কথা রয়েছে।

সূত্র জানায়, আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ভর্তি কার্যক্রম। এটি চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রথম অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তি শুরু হবে ২২ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় অপেক্ষামান তালিকার ভর্তি চলবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

শিক্ষার্থী ভর্তির বয়স

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ৬ বছরের বেশি। পরবর্তী শ্রেণিতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। ভর্তির বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় নির্ধারণ করবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে। যেমন- ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে অর্থাৎ সর্বনিম্ন জন্ম তারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ জন্মতারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত।

ভর্তিতে সংরক্ষিত কোটা

স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির কোটায় এবার কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন এত দিন মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার নিয়ম ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। না পাওয়া গেলে মেধাতালিকা থেকে এই আসনে ভর্তি করতে হবে। এছাড়া-

* ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির মোট আসনের ১০ শতাংশ কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

* বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। কোনো আসন শূন্য থাকলে তা অপেক্ষমান তালিকা থেকে পূরণ করতে হবে।

* মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তর, সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষ্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হলে নিজেদের মধ্যে লটারি অনুষ্ঠিত হবে।

*কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর ভাই বোন বা যমজ ভাই/বোন যদি আগে থেকে অধ্যয়নরত থাকে, সেসব সহোদর/সহোদরা বা যমজ ভাই/বোনের জন্য ৩ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। তবে এ সুবিধা কোনো দম্পতির সর্বোচ্চ ২ সন্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

*ঢাকা মহানগরের সরকারি বিদ্যালয়সংলগ্ন ক্যাচমেন্ট এরিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করার নিয়ম রয়েছে।

স্কুল পছন্দক্রম করা যাবে যেভাবে

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫টি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে ২টি পছন্দক্রম বিদ্যালয় সম্পাদন হয়েছে বলে গণ্য হবে। বিদ্যমান অনলাইন ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে কোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি সফটওয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ভর্তি ফি

দেশের মফস্বল এলাকার স্কুলে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি ৫০০ টাকা। উপজেলা ও পৌর এলাকায় ১ হাজার টাকা, মহানগর এলাকায় (ঢাকা বাদে) সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে রাজধানীর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নিতে পারবে ৫ হাজার টাকা। আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ফি নিতে পারবে ৮ হাজার টাকা। তবে ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা। তা ছাড়া রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতিবছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনঃভর্তি ফি নেওয়া যাবে না।

নিউজ /এমএসএম

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102