মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন

সানী-মৌসুমীর ছেলে ২ কোটি টাকা খোয়ালেন

বিনোদন ডেস্ক
  • খবর আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১২১ এই পর্যন্ত দেখেছেন

তারকা দম্পতি ওমর সানী ও মৌসুমীর ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীন দুই কোটি টাকা খুইয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। নিশাত বিন জিয়া রুম্মান নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন স্বাধীন। শুধু এই তারকা দম্পতির ছেলেই নয়, নিশাতের পাতানো ফাঁদে পা দিয়েছে আরও বেশ কয়েকজন- এমনটা জানালেন চিত্রনায়ক ওমর সানী।

আজ বৃহস্পতিবার নিশাত বিন জিয়া রুম্মান, তার সহযোগি ও প্রতারণার বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ এক ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন ওমর সানী। লেখার শুরুতেই তিনি জানান, আমি একজন ভুক্তভোগী বাবা এবং আমার পরিবার। এই কাজটা আমার ছেলের সঙ্গে করা হয়েছে। লিখেছেন আমার ছেলে ফারদিন।

তার কথাগুলো দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন’র পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো- গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হোক। ৪০-৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং অর্থ পাচার। নিশাত জিয়া আপনারা হয়তো MTFE এমটিএফই এবং এরকম আরো অনেক অ্যাপ-এর মাধ্যমে প্রতারণার কথা শুনেছেন। তবে আজকে কোনো অ্যাপ নয় আজকে একজন ভন্ড প্রতারক এবং অর্থ পাচারকারীর বাস্তব ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরব। এবং তার জলজ্যান্ত প্রমাণ আমি, আমার পরিবার এবং আমার চেনা জানা কিছু মানুষ।

নিশাত বিন জিয়া রুম্মান, এ ব্যক্তির সঙ্গে আমার পরিচয় ২০২২ সালের মাঝামাঝি দিকে। সে নিজেই আমাকে দাওয়াত দিয়ে তার বিয়েতে আগমন জানায়। তারপর থেকেই চেনা জানা এবং বিভিন্ন সময় নিশাত নিজে নিজেই তার একটি আইটি ব্যবসার ব্যাপারে আমাকে এবং আমার কিছু বন্ধুদের বলতে থাকেন। পরিচয় হওয়ার চার মাস পর আমাকে এবং আমার কিছু চেনা পরিচিত মানুষদের সঙ্গে তার একটু বন্ধুত্ব গভীর হওয়ার পরে তিনি আমাদের তার কোম্পানি STASIS GROUP এবং AMAZING FASHIONS LTD- এর কথা বলে কিছু নগদ অর্থ ব্যবসায়িক পুঁজি হিসেবে নেওয়া শুরু করেন।

যদিও পরে জানা যায়, তার কোম্পানির নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দূরের কথা কোনো বৈধ ট্রেড লাইসেন্সই নেই। যতদিন এই অর্থ সে ফেরত না দিতে পারেন, ততদিনের জন্য তার আইটি SURVEY ব্যবসার উপর ১০% লভ্যাংশ মূল অর্থের সঙ্গে ফেরত দিবেন বলে ওয়াদা বদ্ধ হন। যদিও আমার বেলায় লভ্যাংশ ১০% হলেও কিছু মানুষের জন্য সেই লভ্যাংশ ৩০% দিবেন এবং সেটাও প্রত্যেক মাসে দিবেন বলে তাদের সঙ্গে ওয়াদাবদ্ধ হন। আমার টাকাটা এক প্রকার ব্যবসায়িক লোনই বলতে পারেন।

আরো জানিয়ে রাখি- তারা এইসব লেনদেন যেন বাংলাদেশ সরকারের চোখে না পড়ে তাই লেনদেনগুলো বিটকয়েন অথবা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে করে থাকত, তার প্রমাণ ছবি আকারে আমি দিয়েছি। আরো জানিয়ে রাখি, বিটকয়েন অথবা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে লেনদেন বাংলাদেশ প্রচলিত আইনে পুরোপুরি অবৈধ এবং একটি গুরুতর অপরাধ। অর্থাৎ যার কাছে যা বলে টাকা নেওয়া গিয়েছে তিনি সেভাবেই নগদ অর্থ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে নিয়েছেন। আমি ধাপে ধাপে তাকে ব্যবসায়িক ইনভেস্টমেন্ট ধার আকারে ২ কোটি ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেছি। এবং তার বিপরীতে তাকে আমি বলেছি যে, আমাকে সিকিউরিটি হিসেবে আমার ইনভেসমেন্ট মূল্যের ব্যাংকের চেক প্রদান করতে হবে। সেই চেক প্রদান করে সে আমার থেকে জানুয়ারি ২০২৩ সাল ২ কোটি ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বুঝে নেন।

কিন্তু এক মাস যেতে না যেতেই তার বিভিন্ন বাহানা শুরু। প্রথম মাসে আমিসহ সবাইকেই চুক্তি মোতাবেক অর্থ প্রদান করলেও তারপর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন বাহানা। আমি আপনাদেরকে আবারও বলে রাখি, এটি একটি ব্যবসায়িক চুক্তি একজন ব্যবসায়ী আরেকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে। অধিক অর্থ লাভের কোন অ্যাপ বা সফটওয়্যারে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। আমি এবং তার পাশাপাশি আরও ভুক্তভোগী যারা আছেন সকলেই তাকে একজন সুনামধন্য ব্যবসায়ী ALM ZIAUL HAQUE সাহেবের ছেলে নতুন একটি ব্যবসা করতে চাচ্ছে; সেই সুবাদেই অর্থ ইনভেস্টমেন্ট করা। যখন এই ছেলে আমাকে এবং আর কাউকে টাকা দিতে ব্যর্থ হন তখন তার বাবার সঙ্গে আমরা দেখা করলে তার বাবা জনাব এএলএম জিয়াউল হক আমাদেরকে আস্তে আস্তে টাকা দিয়ে দিবেন। তবে তারপর থেকে গোপন সূত্রে আমি জানতে পারি, তারা সবাইকে একই কথা বলে কিছু সময় সবার থেকে আদায় করে নিচ্ছিলেন। আমার সঙ্গে যখন তার বাবার শেষ দেখা হয়েছিল আমাকে বলেছিল, তিনি পাঁচদিনের জন্য সুইজারল্যান্ড যাচ্ছে আর পাঁচদিন পরে এসে আমাকে ফোন দিয়ে মিটিং করার কথা। সেই মিটিং আজ পর্যন্ত হলো না। হয়তো ভণ্ড ছেলের ভণ্ড বাবা এই গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এএলএম জিয়াউল হক তাদের কোম্পানি amazing fashions limited।

যাই হোক, বিভিন্ন সময় তার কাছে আমার হকের টাকা চাইতে গিয়ে আমাকে এবং আমার অফিসের কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। কিন্তু আমরা যখন আমাদের হকের টাকা তার কাছে চাচ্ছি, তিনি তখন তার প্রতারণার পার্টনার তার ভাই সাহিল মুষ্টাভি এবং তার স্ত্রী আফ্রা বাসনিন (যিনি এই পুরো SCAM এর মধ্যে জড়িত) তারা তখন দুবাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিশাত বিন জিয়া প্রতারণা করে অর্থ দুবাই পাচার করে ৩,০০,০০০ দেরহাম অর্থাৎ প্রায় এক কোটি টাকা এক সপ্তাহে ব্যবধানে খরচ করেন তারা দুইজন স্বামী-স্ত্রী। পরে আরও জানা যায়, তিনি প্রতারণার টাকা দিয়ে তার উচ্চবিলাসী জীবন দেখিয়ে গত ৮ মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং পাচার করে থাকে।

আপনারা এমটিএফই’র ব্যাপারে জানতে পেরেছেন কারণ এমটিএফই একটি অ্যাপ এবং এই অ্যাপ-এর মাধ্যমে মানুষের চেনা-জানা অপরিচিত হাজার হাজার মানুষ বিনিয়োগ করেছে। তবে আমি যে কথা বলছি, এটি কোন অ্যাপস নয় এটি একজন প্রতারক তার বাবার কোম্পানি অ্যামেজিং ফ্যাশন লিমিটেডের সুনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় মানুষের থেকে ৩০ কোটি টাকা বা তার ঊর্ধ্বে আত্মসাৎ এবং বাংলাদেশের বাহিরে পাচার করেছেন। এবং যাদের থেকে টাকা নিয়েছেন সকলেই মোটামুটি স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। সকলেই এখন প্রত্যেক দিন তাদের অর্থ কিভাবে উদ্ধার করবে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু এই ভণ্ড প্রতারকের ভণ্ডামি দেখে আমি বুঝে গিয়েছি, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আমার কোন উপায় নেই।