সিরাজগঞ্জে বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী সন্ত্রাসী হামলায় নিহত। গাইবান্ধায় পুলিশের গাড়িতে আগুন, র্যাব–ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের মহড়া আর বিএনপির সক্রিয় উপস্থিতি না থাকা—সাম্প্রতিক সময়ে ভোটের এই প্রবণতাই আবার দেখা গেল দ্বিতীয় ধাপের ৬০টি পৌরসভার নির্বাচনে। তবে ব্যতিক্রম হচ্ছে, শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকেই বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি। এর বাইরে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, ধাওয়া, মেয়র পদে অনেক পৌরসভায় প্রকাশ্যে সিল মারা, গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ভোটারকে নৌকায় ভোট দিতে প্ররোচিত বা বাধ্য করা, গতকাল শনিবারের ভোটে কম–বেশি এর সবই দেখা গেছে।
ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে বিজয়ী মো. তরিকুল ইসলাম খানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। আর গাইবান্ধায় ভোট শেষে রাতে একটি কেন্দ্রের ব্যালট বাক্স ও মালামাল নিয়ে ফেরার পথে পুলিশের ওপর হামলা হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট ও র্যাবের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা এই হামলা–ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত।
এবার প্রচারের সময়ও সংঘাত-সহিংসতায় দুজন নিহত হয়েছে। তবে গতকাল ভোটের দিন রাজশাহীর আড়ানী, ঝিনাইদহের শৈলকুপাসহ সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট হয়েছে। এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া প্রহরা ছিল। নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরাও নজরদারি করেছেন। তবে সে তুলনায় বুথ ও গোপন কক্ষ ছিল অনেকটাই অরক্ষিত। যেসব স্থানে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হয়েছে, সেগুলোতে সহযোগিতার নামে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিরা গোপন কক্ষে অবস্থান নিয়ে মেয়র পদে বাটন চেপেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর ব্যালটের ভোটের ক্ষেত্রে ভোটারকে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটেছে। তবে কাউন্সিলরের ভোটে জবরদস্তি করার তেমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
করোনা মহামারির মধ্যে ভোট হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা ছিল নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। তবে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা মাস্ক পরলেও ভোটারদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখা গেছে। বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা খুব একটা দেখা যায়নি।
জাল ভোট, জবরদস্তি ও প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগ এনে পাঁচটি পৌরসভায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। এগুলো হচ্ছে বাগেরহাটের মোংলা, পাবনার ঈশ্বরদী, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ ও মেহেরপুরের গাংনী।
নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা ভোটের দিন মাঠছাড়া হয়ে পড়ছেন। বুথে এজেন্টও থাকছে না। অন্যদিকে নৌকার ব্যাজধারী ও আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি সর্বত্র, যা ভোটের ফল নির্ধারণে ভূমিকা রাখছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগ যেকোনো মূল্যে জেতার কৌশল নিয়েছে। কিন্তু বিএনপি যেকোনো মূল্যে মাঠে থাকার চেষ্টা করছে না। এর ফলে ভোটে অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও ফল আওয়ামী লীগের পক্ষে আসছে। আর বিএনপি মাঝপথে ভোট-বর্জন ও অনিয়মের নানা অভিযোগ নিয়ে হাজির হচ্ছে। বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে, ভোটের দিন কেন্দ্র দখলে থাকবে, কিছু অনিয়ম হবে, দিন শেষে জিতবে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপি মাঠে থাকতে পারবে না, অভিযোগ দিয়ে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করবে।
তবে গতকাল বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। দু-একটি ঘটনা যা ঘটেছে, তা একেবারেই নগণ্য। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে তাঁর ধারণা।
অনিয়মের অভিযোগে বর্জন
পাবনার ঈশ্বরদীতে ‘ঘাড় ধাক্কা’ খাওয়ার পর ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বিএনপির প্রার্থী রফিকুল ইসলাম। বেলা দেড়টার দিকে পৌরসভার পূর্ব টেংরি এলাকায় নিজ বাড়িতে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বলেন, প্রতিটি কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে।
বাগেরহাটের মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. জুলফিকার আলী এবং পৌরসভার সব ওয়ার্ডের বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীসহ মোট ১৫ জনকে নিয়ে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্র দখল করেছে। এজেন্ট থাকতে দেয়নি, ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বিএনপির প্রার্থী নুরুল মিল্লাত। অসদাচরণ, এজেন্ট বের করে দেওয়া ও মারধরের অভিযোগ করেন তিনি।
ভোট দিতে বাধা, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক ভোট বর্জন করেন বেলা সোয়া ১১টায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সকালে তিনি ছেলে ও ভাতিজাকে নিয়ে চানপাড়া শহীদ সেকেন্দার মেমোরিয়াল আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেননি। তাঁর সমর্থকদেরও লাঞ্ছিত করা হয়।
মেহেরপুরের গাংনীতে অনিয়ম ও ইভিএমে জোর করে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বিএনপি, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীসহ চার মেয়র প্রার্থী।
সহিংসতা-ব্যালট ছিনতাই
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে উত্তেজনা আগেই ছিল। তবে ভোটের দিন তা সংঘাতে রূপ নিয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীকুল মীরদাহ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদারের নেতৃত্বে ভোটে প্রভাব বিস্তার ও ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পৌরসভার মধ্যেরগাতী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর ১২টার দিকে পীকুল মীরদাহ ও লিয়াকত শিকদার পর্যবেক্ষক কার্ড গলায় ঝুলিয়ে কেন্দ্রে যান। তাঁরা চলে যাওয়ার পর একদল ব্যক্তি কেন্দ্রে ঢুকে নিজেরাই নৌকায় সিল মারতে চান। এর প্রতিবাদ করায় একজন পোলিং এজেন্টকে দেয়ালে মাথা ঠুকে আঘাত করা হয়। এ সময় চলে হামলা-ভাঙচুর। সাতটির মধ্যে পাঁচটি ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকেরা জাল ভোটের অভিযোগে কেন্দ্রে হামলা করেন। এ সময় পুলিশ পাঁচটি গুলি ছোড়ে। এরপর এলাকার কয়েকটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে ওই কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়।
সংঘর্ষের কারণে পৌরসভার ছোলনা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকে বোয়ালমারী সরকারি কলেজ কেন্দ্রও।
ফেনীর দাগনভূঞার একটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণে এক আনসার সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। সকাল ১০টার দিকে পৌরসভার গণিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগের মনোনীত ও দলটির বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
ঝিনাইদহের শৈলকুপার ঝাউদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী তৈয়বুর রহমান খান কেন্দ্রের বাইরে গাড়ি রেখে ভেতরে যান। এ সময় পেছন থেকে কয়েকজন তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করে চলে যান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় একটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই এবং আরেক কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী কামাল উদ্দীন আহমদ আহত হন। এ ঘটনায় এক ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে।
কিশোরগঞ্জ সদর পৌরসভায় ওয়ালী নেওয়াজ খান কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টরাও হামলার শিকার হন। পরে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
ভোটার উপস্থিতি বেশি
সকাল থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি দেখা যায় বেশির ভাগ পৌরসভায়। কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা সারি ছিল। নারী ভোটারের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
গাইবান্ধা পৌরসভার জুবলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুরে ভোটারদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৫৮৯টি। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ভোট পড়ে ১ হাজার ৪০২টি। পৌরসভার উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুখনগর নারায়ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোটারের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার ভোটেও।
ভোটারের ব্যাপক উপস্থিতি ও শান্তিপূর্ণভাবে পৌরসভা ভোট সম্পন্ন হয় বগুড়ার শেরপুর ও সান্তাহারে। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ঘন কুয়াশা ও শীতের দাপট ছিল। এরপরও ভোটারদের উপস্থিতি ভালো ছিল। দিনভর কোনো অঘটন ছাড়াই ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৬৫-৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে। নাটোরের গুরুদাসপুরে ভোট উপলক্ষে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। এ ছাড়া নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও কেন্দুয়া, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা, গাজীপুরের শ্রীপুর এবং দিনাজপুর সদরে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। ভোটারের উপস্থিতিও ছিল বেশি।
ইভিএমে জালিয়াতি
বগুড়ার সারিয়াকান্দি পৌরসভার বাটিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি বুথে নৌকার পোলিং এজেন্ট ছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন। তাঁকে সকাল থেকেই গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ভোটারের বদলে নিজেকেই ইভিএমের বাটন চেপে ভোট দিতে দেখা গেছে। এর প্রতিবাদ করায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে পিটিয়ে বের করে দেন তিনি।
বেলা পৌনে একটার দিকে এই কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে অন্যের ভোট দেওয়ার সময় হাতেনাতে শাহাদাতকে ধরেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিষ্কৃতি হাগিদক। পাশাপাশি ভোটারকে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করারও প্রমাণ পান। দুই অপরাধে তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
নওগাঁর নজিরপুর পৌরসভার বাসিন্দারা প্রথমবার ইভিএম দেখেছেন। এ নিয়ে আগ্রহ ছিল ভোটারদের। তবে কেউ কেউ নিজের ভোট নিজে না দিতে পারার আক্ষেপ করেছেন। তাঁদেরই একজন সাইফুর রহমান। তিনি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নজিরপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন। তাঁর ভাষ্য, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে আঙুলের ছাপ দিতেই স্ক্রিনে আমার ছবি ভেসে ওঠে। এ সময় পাশে থাকা এক ব্যক্তি বাটন চেপে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে দেন। এরপর ওই লোক আমাকে কাউন্সিলর প্রার্থীর ভোট পছন্দ অনুসারে দিতে বললেন।’ ওই কেন্দ্রে অনেক ভোটারই মেয়র পদে নিজের পছন্দে ভোট দিতে না পারার অভিযোগ করেন। নজিরপুর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আনারুল ইসলাম নামের এক ভোটার জানান, সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর তাঁর ভোট দিয়ে দেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর এজেন্ট।
গোপন কক্ষে অবস্থান করে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের বাটন চাপা, ভোটারকে নৌকায় ভোট দিতে প্ররোচিত কিংবা বাধ্য করার অভিযোগ কম-বেশি সব পৌরসভাতেই পাওয়া গেছে। কোথাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট, কোথাও নৌকার সমর্থক, আবার কিছু কিছু স্থানে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পৌরসভা নির্বাচন পরিদর্শন করতে গতকাল সাভারে যান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সেখানে তিনটি কেন্দ্রের ১৮টি বুথ পরিদর্শন করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনটি বুথে বিরোধীদলীয় প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট দেখতে পাননি। এলাকায় বিরোধীদলীয় প্রার্থীর কোনো পোস্টারও দেখা যায়নি। এমন অবস্থায় এই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলা যায় না।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা]