শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহ্বান.. প্রধানমন্ত্রী

সংবাদদাতার নাম :
  • খবর আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১
  • ২০৮ এই পর্যন্ত দেখেছেন

স্টাফ রিপোর্টার:রোনাভাইরাস মোকাবিলায় সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন  বাংলাদেশ সরকারেরপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ।

পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস-মাহে রমজান এর শুরুতে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে পবিত্রমাহে রমজানের মোবারকবাদ ও বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ এর শুভেচ্ছা জানিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ মঙ্লবার সন্ধ্যায় জাতীর উদ্দেশে ভাষণ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একই সঙ্গে তিনি ভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভে দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েবলেন, তাঁর সরকার সর্বদা জনগণেরপাশে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,আপনাদের শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই।সরকার সব সময় আপনাদের পাশে রয়েছে।দ্বিতীয় ঢেউআঘাত হানার পর আমি দরিদ্র-নিম্নবিত্ত মানুষদের সহায়তার জন্য কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে পল্লী অঞ্চলে কর্মসৃজনের জন্য ৮০৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং পবিত্র রমজান ও আসছেঈদুলফিতর উপলক্ষে ৬৭২ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি।এর দ্বারা দেশের প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৪২ হাজার নিম্নবিত্ত পরিবার উপকৃত হবেন।গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে ভিজিএফ, টেস্ট রিলিফসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষাকার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।তিনি দেশে বিদেশে অবস্থানকারি সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আজ আবাহনের দিন।’এসো হে বৈশাখ, এসো এসো/মুছে যাক গ্লানি’-কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী এই গান গেয়ে আজ আমরা আবাহন করবো নতুন বছরকে।

গত বছরের মত এ বছরও আমরা বাইরে কোন অনুষ্ঠান করতে পারছিনা কারণ করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নতুন করে আঘাত হেনেছে সমগ্র দেশে।দ্বিতীয় ঢেউয়ের করোনাভাইরাস আরও মরণঘাতীহয়ে আভির্ভূত হয়েছে।পয়লা বৈশাখের আনন্দ তাই গত বছরের মত এবারও ঘরে বসেই উপভোগ করবো আমরা।টেলিভিশনচ্যানেলসহ নানা ডিজিটাল মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হবে।সে সব অনুষ্ঠান উপভোগ ছাড়াও আমরা নিজেরাও পরিবারেরসদস্যদের নিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে আনন্দ উপভোগ করতে পারি।

তিনি বলেন, অতীতের সকল জঞ্জাল-গ্লানি ধুয়ে-মুছে আমরা নিজেদের পরিশুদ্ধ করবো।দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাবো সামনের দিকে।গড়বো আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যত- এই হোক এবারের নতুন বাংলা বছরের শপথ।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গত বছর আমরা চারটি মূলকার্যক্রম নির্ধারণ করেছিলাম।চারটি কার্যক্রম হচ্ছে:

(১) সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা: সরকরি ব্যয়ের ক্ষেত্রে ‘কর্মসৃজনকেই’ প্রাধান্য দেওয়া

(২) আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন: অর্থনৈতিক কর্মকা- পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা এবংউদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখা

(৩) সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি: দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী জনগণ,দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিককর্মকান্ডে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি

(৪) মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা: অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব উত্তরণে মুদ্রা সরবরাহ এমনভাবে বৃদ্ধি করা যেন মুদ্রাস্ফীতি না ঘটে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই চার মূলনীতির ভিত্তিতে আমাদের কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে।আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ২৪হাজার ৫৩ কোটি টাকার ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।কলকারখানায় যাতে উৎপাদন ব্যাহত না হয় সে ব্যবস্থাআমরা নিয়েছি।কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি।আমরা দিন মজুর, পরিবহন শ্রমিক, হকার, রিক্সাওয়ালা, দোকানকর্মচারি, স্কুল শিক্ষক, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিন, অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেরসেবাদানকারী, সাংবাদিকসহ নিম্ন আয়ের নানা পেশার মানুষকে সহায়তা দিয়েছি।প্রায় আড়াই কোটি মানুষকে বিভিন্ন সরকারি সহায়তারআওতায় আনা হয়েছে।

করোনাভাইরাস মোকিবিলায় ইতোমধ্যেই বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম।আমাদের সৌভাগ্য টিকা উৎপাদনের শুরুতেই উল্লেখযোগ্যপরিমাণ টিকার ডোজ আমরা নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি।ইতোমধ্যেই ৫৬ লাখের ও বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়াা সম্পন্ন হয়েছে। তারা প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে।আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের সকলকেটিকার আওতায় নিয়ে আসবো।আমাদের সরকারের সে প্রস্তুতি রয়েছে।

তিনি বলেন, তবে, টিকা দিলেই একজন সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত হবেন এমন নিশ্চয়তা নেই বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।কাজেই, টিকা নেওয়ার পরও আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি জেলায় করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসা সুবিধার আওতা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীবলেন, ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেনসরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।বিদ্যমান আই.সি.ইউ. সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আমাদের নিজের, পরিবারের সদস্যদের এবং প্রতিবেশীর সুরক্ষা প্রদানের।কাজেই ভিড়এড়িয়ে চলুন বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন। ঘরে ফিরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গরম পানির ভাপ নিন।করোনাভাইরাসমোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে ১৮-দফা নির্দেশনা জারি করেছে।আমরা যদি সকলে করোনাভাইরাস মোকাবিলার স্বাস্থ্যবিধিমেনে চলি, অবশ্যই এই মহামারিকে আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ।

সূত্র : বাসস

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102