

স্টাফ রিপোর্টার:মৌলভীবাজারে নির্মাণ হচ্ছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। এরইমধ্যে এ সংক্রান্ত সুপারিশ অনুমোদন হয়েছে। এজন্য জেলায় উপযুক্ত জমি খুঁজছে জেলা প্রশাসন।কর্মক্ষম জনশক্তির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এখন রয়েছে সর্বোচ্চ অবস্থানে। এই জনশক্তিকে সম্পদে রূপান্তর করতে প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় জোর দিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতায় বস্ত্র অধিদফতরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নির্মাণের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। গত ১১ জানুয়ারি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে লিখিত ডিও লেটার মাধ্যমে মৌলভীবাজারে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সুপারিশ করেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমেদ। এটি অনুমোদন হয়ে গত ৩১ মার্চ মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে আসে। বিষয়টি ইউকেবিডি টিভি কে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান এবং সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী ইমরান শাওন।ডিও লেটারে বলা হয়- চা শিল্পের রাজধানী খ্যাত এ জেলায় ৭ টি উপজেলার ২৫ লক্ষ লোকের জন্য নেই কোন বিশ্ববিদ্যালয়। জেলায় ২৪ টি কলেজের মধ্যে সরকারি কলেজ ৩ টি ও ২১ টি বেসরকারি কলেজ। প্রতিবছর ১৫ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যামিক পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে বিড়ম্বনায় পরেন। অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পেয়ে বিদেশে পাড়ি জমান। মেয়েরা নিজের জেলা থেকে বিভিন্ন জেলা গিয়ে পড়ালেখা করতে আগ্রহ দেখান না। ব্যবসায়ী ও মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সুহাদ আহমদ ইউকেবিডি টিভি কে বলেন- জেলায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা হলে কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরি সুযোগ সৃষ্টি হবে, কয়েকগুণ বাড়বে রেমিট্যান্স। শিল্পখাতে তৈরি হবে ব্যাপক সম্ভাবনা।মৌলভীবাজার পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র মহসিন আহমেদ বলেন, এটা অনেক ভালো উদ্যোগ। আমার অনেক ইচ্ছে ছিল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ালেখা করার। এটা মৌলভীবাজারে স্থাপন হতে হতে আমার পড়ালেখা শেষ যাবে। মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমেদ ইউকেবিডি টিভি কে বলেন, আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজর জন্য একটি ডিও লেটার পাঠিয়েছিলাম। অনেক প্রক্রিয়ার পর অনুমোদ হয়েছে। এখন ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তারপর মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ে নীতিমালা প্রনয়ণ করে টেন্ডার করবে। অবশ্য এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, মৌলভীবাজারের ছেলে মেয়েরা কারিগরি শিক্ষায় উচ্চ শিক্ষিত হবে, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হবে। পড়া শেষ করার আগেই চাকরি পাবে। চাকরি জন্য আর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবেনা। এটা আমাদের জন্য নতুন দ্বার খুলে দেবে।প্রবাসী কমিউনিটি লিডার, ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের মহাপরিচালক সাইদুর রহমান রেনু (জেপি) ইউকেবিডি টিভি কে বলেন, মৌলভীবাজার প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নির্মাণ হলে এখানকার তরুণ প্রজন্ম কারিগরি শিক্ষা্য় শিক্ষিত হবে। দেশ এবং বিদেশে তারা কাজ করার সুযোগ পাবে। বিদেশে দক্ষ ও শিক্ষিত জনবল রফতানি করতে পারবো। এটা আমাদের মৌলভীবাজার তথা সিলেট অঞ্চলের জন্য অনেক কাংখিত একটা বিষয়। এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহীদ আহসান ইউকেবিডি টিভি কে বলেন- মৌলভীবাজারবাসীর জন্য আমাদের এমপি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিবকে একটি ডিও লেটার দিয়েছিলেন। তাঁর ব্যাক্তিগত প্রচেষ্টায় আমরা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ পেতে যাছি। এ বিষয়ে অনুমোদনের চিঠি আমাদের কাছে এসেছে। এখন জায়গা নির্বাচন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। তিনি আরো বলেন,এটা বাস্তবায়ন হলে আমরা প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে কারিগরি শিক্ষাকে প্রমোট করতে পারবো। ২০৪১ সালের মধ্যে নুন্যতম ৫০ ভাগ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হবে দেশ। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নির্মাণ হলে আমাদের কারিগরির মান উন্নত হবে।