শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনায় যে দক্ষতা রয়েছে সেটা নিশ্চয়ই বিএনপির কোনো নেতাদের নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
আজ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিনি এ কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘একাধিক দুর্লভ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী আমাদের নেত্রী। তার অন্যতম হলো পিতার প্রতি বিরল ভালবাসার উদাহরণ স্থাপন করা। এই রকম একজন মানবিক এবং সংবেদনশীল ব্যক্তি, যে সারা জীবন দেখেছে তার পিতাকে এদেশের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করতে, যে শিশু বয়সে নিজে পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সেই মানুষটির ১৫ই আগস্টের শোক বহন করতে হয় আজীবন ধরে। বঙ্গবন্ধু পরিবার রক্ত দিয়ে ১৫ই আগস্টে যে মূল্য দিয়েছে তাতে আজীবন জাতি বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রতি ঋণী থাকবে। ১৫ই আগস্টের অভিজ্ঞতা থেকে ফিরে এসে এদেশের মানুষের প্রতি আমাদের নেত্রীর যেই ভালবাসা দেখিয়েছেন, তা তার উদারতা আর মহত্বের প্রমাণ বহন করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা জন্ম না নিলে আমরা গণতন্ত্র পেতাম না, সামাজিক ন্যায় বিচার পেতাম না, অর্থনৈতিক মুক্তি পেতাম না, ভোট ও ভাতের অধিকার পেতাম না, একটা মর্যাদাশীল দেশও পেতাম না এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হত না। আমরা এখন গর্ব করে বলি এ দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রায় ৪০ বিলিয়ন টাকা বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাঙালি জাতি পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন আমাদের নেত্রী। তিনি বাংলাদেশকে মর্যাদাশীল আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।
শেখ পরশ্ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সঙ্কটের গভীরতার সঙ্গে বিএনপি কোন নেতারা ওয়াকিবহাল না। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল পাঁচটি অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করবে এবং এই সকল কাজে সুফল একমাত্র শেখ হাসিনার সাহসী দক্ষ নেতৃত্বই সম্পন্ন করতে পারবে। অতএব, বিএনপি নেতাদের বলবো, ক্ষমতায় যাওয়ার লিপ্সা পরিহার করেন এবং যোগ্যতা বাড়ান। প্রতিযোগিতায় আসেন। ভোটে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। যোগ্যতার মাপকাঠিতে শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানোর দক্ষতা অর্জন করুন।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, ‘বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা কাদের ভয় দেখায়। ওদের কি কোনো আক্কেল নাই। বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করার জন্য যুবলীগই যথেষ্ট। যুবলীগকে দেখলে ভয়ে শয়তানও পালিয়ে যায়, আবার আপনাদের মত শয়তানরা এক দফার ভয় দেখান।’
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে। কিভাবে মানুষের অধিকার আদায় করতে হয় সেই দীক্ষা শেখ হাসিনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা ধ্বংস করতে চায়। শেখ হাসিনা আমাদের প্রেরণার উৎস, আমাদের বাতিঘর। সেই ঘাতক চক্র আবারও, ষড়যন্ত্র করছে দেশের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশকে পাকিস্তানী করার ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে আমরা দেশ ছেড়ে দিতে পারি না। দেশকে যারা ধ্বংস করতে চায় তাদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা, শেখ হাসিনার সৈনিকেরা বসতে পারে না। এই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাদেরকে রাজপথে প্রতিহত করতে হবে।
সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোষেন খান নিখিল বলেন, ‘আমরা স্মরণ করে দিতে চাই জাতিকে, স্মরণ করে দিতে চাই, যুবসমাজকে স্মরণ করে দিতে চাই বিদেশি শক্তি ও প্রভুদের যারা বাংলাদেশকে নিয়ে নাড়া-চারা করছেন। বাংলাদেশকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের কথা বলে আপনারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নামে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে যারা ভূলুণ্ঠিত করল, পদদলিত করল সেই বিএনপি-জামায়াতকে আপনারা বাংলার মানুষের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন।
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী, মো. এনামুল হক খান, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, মশিউর রহমান চপল, প্রফেসর ড. মো. রেজাউল কবির, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা মো. খলিলুর রহমান সরদার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. মাহফুজার রহমান উজ্জ্বল, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।
নিউজ /এমএসএম