রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০২ অপরাহ্ন

পশ্চিমাদের পরিবর্তে এখন মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে দহরম-মহরমে রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • খবর আপডেট সময় : বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩
  • ১০৫ এই পর্যন্ত দেখেছেন

রাশিয়ার তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কাজানে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দুদিনব্যাপী রাশিয়া-ইসলামিক ওয়ার্ল্ড ফোরাম সম্মেলন। ২০০৯ সালে প্রথম এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর লক্ষ্য রাশিয়া ও মুসলিম দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা। মূলত ইউক্রেন যুদ্ধের পর  পশ্চিমাদের সঙ্গে দূরত্বের কারণে রাশিয়া এখন মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে ।

কাজান ফোরামের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে রাশিয়া এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) এর ৫৭টি সদস্য দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং বৃদ্ধিবৃত্তিক সম্পর্ক জোরদার করা। অবশ্য রাশিয়া ওআইসির পূর্ণ সদস্য নয়। পুতিনই প্রথম অমুসিলম দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন যাকে ২০০৩ সালে ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়অর জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। চেচনিয়া (ককেসাসে অবস্থিত) এবং আফগানিস্তানে মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের পর ইসলামি বিশ্বে রাশিয়ার ভাবমূর্তি উন্নত করার লক্ষ্যে পুতিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার মাত্র তিন বছরের মাথায় ওআইসির মঞ্চে দাঁড়ানোর সুযোগ করে নিয়েছিলেন। দুই বছর পরে পুতিনের কূটনৈতিক বিজয় হয়েছিল, অর্থাৎ ওআইসির পর্যবেক্ষকের মর্যাদা দেওয়া হয় রাশিয়াকে।

মস্কোতে ফ্রেঞ্চ-রাশিয়ান অ্যানালিটিক্যাল সেন্টার অবজারভো (সিসিআই ফ্রান্স-রাশিয়া) এর উপপ্রধান ইগোর ডেলানো বলেন, ‘সংগঠনে রাশিয়ার একীভূতকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নতুন উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এসেছে, বিশেষ করে ইরাক সম্পর্কিত এবং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের সৌদি আরবের ইচ্ছার প্রতিক্রিয়া ছিল।

ওআইসিতে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা রাশিয়াকে মুসলিম বিশ্বে মস্কোকে আপন ভাবার একটি সুযোগ করে দিয়েছে। আর পুতিন এই অবস্থান সৃষ্টিতে সবসময় জোর দিয়েছিলেন। তিনি ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়ার ধর্মীয় ও জাতিগত বৈচিত্র্যকে বৈদেশিক সম্পর্কের হাতিয়ার হিসাবে প্রচার করেছেন যাতে দেশটিকে পশ্চিম ও পূর্বের মধ্যে একটি প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসাবে স্থান করে দেয়।

মুসলিম দেশগুলোর ওপর প্রভাব বজায় রাখার জন্য রাশিয়া ২০০৬ সালে একটি ‘কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রুপ’ তৈরি করেছিল। এর নেতৃত্বে রাখা হয় তাতারস্তানের প্রধান রুস্তম মিনিখানভ। ২০১০ সালের গোড়ার দিকে আরব বসন্ত বিদ্রোহের ফলে গোষ্ঠীটির কাজ পিছিয়ে যায়। কিন্তু ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করার পর এবং পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে গোষ্ঠীটি তাদের কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে। পশ্চিমের সাথে এই প্রাথমিক বিচ্ছেদ রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সূত্রপাত ঘটায়।

ইউক্রেনের যুদ্ধ যেহেতু বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে নতুন দিকে নিয়ে গেছে, তাই এটি কাজানে আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনকে প্রভাবিত করবে তা নিশ্চিত। পশ্চিম থেকে দূরে রাখার কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে পুনরায় জোরদারের করার একটি স্পষ্ট অভিপ্রায় রয়েছে রাশিয়ার। মার্চ মাসে ক্রেমলিন প্রথমবারের মতো ‘ইসলামিক’ শব্দটি যুক্ত করে, যা নতুন পররাষ্ট্র নীতির দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে এবং আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সাথে মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক গভীর করার অভিপ্রায় প্রকাশ করে।

মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার রাশিয়াকে তাৎক্ষনিক কিছু সুবিধাও এনে দিয়েছে। এর সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত হচ্ছে, গত বছর জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করার জন্য ভোট দিতে অস্বীকার করেছিল মুসলিম সদস্য দেশগুলো।

নিউজ /এমএসএম

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102