শস্যভাণ্ডারখ্যাত চলনবিলের বড়াইগ্রামসহ পাশের উপজেলাগুলোর মাঠে মাঠে রোপা ও বোনা আমন ধানকাটা শুরু হয়েছে। কৃষাণ-কৃষাণিরা ধানকাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বর্তমানে বিভিন্ন হাটবাজারে নতুন ধান বেচাকেনাও শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু নতুন ধান উঠলেও চালের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন জাতের চালের দাম কেজিপ্রতি ৩-৪ টাকা বেড়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ১৫ হাজার ৯২৩ হেক্টর জমিতে রোপা ও তিন হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ধানের চাষ হয়েছে। কার্তিকের মাঝামাঝিতে ধানকাটা শুরু হয়েছে। উপজেলার সর্ববৃহৎ ব্যবসা কেন্দ্র মৌখাড়াহাটসহ লক্ষ্মীকোল বাজার, আহম্মেদপুর, বনপাড়া, রাজাপুর ও জোনাইলসহ অন্যান্য বাজারে নতুন ধান বিক্রিও শুরু হয়েছে।
বাজিতপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক ও রিপন হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে সার ও তেলের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি মৌসুমের শুরুর দিকে প্রচণ্ড খরা থাকলেও পরে বৃষ্টি হওয়ায় আমনের মোটামুটি ভালো ফলন হয়েছে। এবার হাইব্রিড জাতের ধানি গোল্ড ও তেজ ধান বিঘাপ্রতি ২০ মণ এবং ব্রি-৮৭, ব্রি-৪৯, ব্রি-৩৯, বিনা ৭ ও বিনা ১৭ জাতের ধান ১৫-১৬ মণ হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ধানের এমন ফলনে চাষিরা বেশ খুশি।
গতকাল বুধবার সরেজমিন বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য বছর নতুন ধান বাজারে এলে দাম কিছুটা কমে। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমেও দাম না কমে উল্টো বেড়েই চলেছে। ফলে ভরা মৌসুমে নতুন ধান উঠতে শুরু করলেও চালের দাম বেড়েই চলেছে। চলতি সপ্তাহে বাজারে নতুন ব্রি-৯০ ধান প্রতি মণ ১৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়।
একইভাবে ব্রি-৪৯, ব্রি-৫১ সহ স্থানীয় জাতের ধানের দামও বেড়েছে। ফলে ধান কাটার ভরা মৌসুমেও চালের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি, বরং প্রতি কেজি চালের দাম ৩-৪ টাকা বেড়েছে। উপজেলার হাটবাজারগুলোতে ৭-১০ দিন আগে প্রতি কেজি স্বর্ণা চাল ৪৪ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৪৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪৯ জাতের চাল ৪৩ টাকার জায়গায় ৪৫ ও কাটারিভোগ ৬৩ টাকার জায়গায় ৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
লক্ষ্মীকোল বাজারের চাল ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান জানান, বাজারে নতুন আমন ধান ওঠা শুরু করেছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম কমার পরিবর্তে বাড়ছে। এ কারণে চালের দামও কমার পরিবর্তে বেড়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শারমিন সুলতানা জানান, উপজেলায় আমন ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। তবে অগ্রহায়ণে ধান পুরোপুরি কাটা হয়ে গেলে চালের দাম কিছুটা কমতে পারে বলে তিনি জানান।
ইউকেবিডিটিভি/ বিডি / এমএসএম