সোমবার (২৩ জুন) যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উদ্দোগে পূর্বলন্ডনের রয়েল রিজেন্সিতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গৌরব ঐতিহ্য সাফল্য সংগ্রামের ৭৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের সঞ্চালনায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান, হাসান মাহমুদ চৌধুরী, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শফিকুর রহমান চৌধুরী, স.আ. ম রেজাউল করিম, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জান চৌধুরী, সাবেক এমপি হাবিব মিল্লাদ, সাবেক এমপি রঞ্জিত সরকার, সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সভার শুরুতেই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা সৈয়দ মাহমুদ আলী। গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠ করা হয়। এর পর উপস্থিত সকলে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবশেন করেন।
সমাবেশে অন্যন্যদের মধ্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হরমুজ আলী, শাহ আজিজুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমেদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক শাহ শামীম আহমেদ, প্রবাসকল্যাণ সম্পাদক আনছারুল হক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক তারিফ আহমদ,গনসংযোগ সম্পাদক রবীন পাল, মানবাধিকার সম্পাদক সারব আলী, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক আস ম মিসবাহ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ছুরুক মিয়া, মহিলা সম্পাদিকা মেহের নিগার চৌধুরী, ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী, খসরুজ্জামান খসরু , প্রচার সম্পাদক মাসুক ইবনে আনিস, কাওছার চৌধুরী, ভিপি খসরুজ্জামান, লুতফুর রহমান সায়েদ, লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল হক লালা মিয়া,সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান মুজাহিদ, ওয়েলস আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মকিস মনসুর, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালিক, নিউপোট আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ তাহির উল্লাহ, ম্যানচেস্টার আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব সুরাবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মীর গোলাম মোস্তফা, যুক্তরাজ্য যুবলীগের সভাপতি ফখরুল ইসলাম মধু, সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ খান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জামাল আহমদ খান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছায়েদ আহমদ ছাদ, শ্রমিক লীগের সভাপতি শামীম আহমদ, তাতিলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম, ছাত্রলীগের সভাপতি তামিম আহমদ, সাধারণ সম্পাদক সজিব ভূইয়া ও সিনিয়র সহ সভাপতি আক্তারুজ্জামান খান জাকির সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগ, স্বেচ্চাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ, তাতীলীগ, কৃষকলীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।অতিথিদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠনের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী গুণীজন।
যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ আয়োজিত দলের ৭৬তম প্রতিষ্টা বার্ষিকীর আলোচনা সভায় গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি, মৌলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, সামসুল হক ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের জন্ম হয়েছিল। জন্মলগ্ন থেকেই দলটি ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছে। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বেই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আওয়ামীলীগই দেশের মানুষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে। এ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের মানুষ এখন প্রতিনিয়তো নিপিড়িত ও নির্যাতিত হচ্ছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন ড. ইউনুস দেশ অস্থিতিশিল করতে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মী দিয়ে জেল খানা ভরে অপরাধিদের মুক্ত করে দিচ্ছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিশ্বাসীদের নানা ভাবে অপমান করা হচ্ছে। আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে প্রধান উপদেষ্টার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী
সাংস্কৃতি কর্মি থেকে সংখ্যালগু কেউই নিরাপদ নেই বলে শেখ হাসিনা বলেন মিডিয়ার স্বাধীনতাও নিয়ন্ত্রীত হয় ইউনুস সেন্টার থেকে।
ভ্যার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা আরো বলেন জঙ্গি-জামাতের সহযোগীতায় অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ইউনুসের জুলুম নিপিড়নের শিকার বাংলার ১৮কোটি মানুষ। স্বাধীনতা বিরোধী দখলদার ইউনুস ৩০লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে ফেলতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বার বার আওয়ামীলীগের উপর আঘাত এসেছে, আদর্শকে ধারন করেই আওয়ামীলীগ তা কাটিয়ে উঠেছে। অন্যায়কারী যত শক্তিশালীই হোকনা কেন ঠিকে থাকতে পারবেনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষেরা তা সহ্য করবেনা। তিনি দলের নেতা কর্মীদের মনোবল শক্ত রেখে কাজ করে যাবার আহবান জানান।
একটি অসাংবিধানিক সরকার অন্যায়ভাবে আমাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে, যেমনটি ১৯৭১ সালে ইয়াহিয়া খানও করেছিল। আমাদের লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে, লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছে। এই দমন-পীড়ন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়, এটি জনগণের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র। এই দুঃসময়ে আমি দলের নেতাকর্মী এবং শান্তিপ্রিয় জনগণকে বলবো- সাহস হারাবেন না। অতীতের মতো এবারও বাংলাদেশকে রাহুমুক্ত করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতার শিক্ষাই আমাদের যুদ্ধ জয়ের অভ্যস্ত।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে শত শত নেতা কর্মী এই সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশ শুরুর আগেই দুই হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হলে তিল ধারনের ঠাই ছিলনা। অনেকেই হলের ভেতরে জায়গা না পেয়ে বাইরে অপেক্ষা করেন। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৮মিনিটের বক্তব্যে নেতা কর্মীদের হতাশ না হয়ে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানিয়ে উনার বক্তব্য শেষ করেন।