বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন

ছাতক বাজার ষ্টেশন পরিদর্শন শেষে রেলওয়ের মহা পরিচালক আফজাল হোসেন

শীঘ্রই চালু হবে সিলেট-ছাতক রেলপথ

সেলিম মাহবুব,ছাতক
  • খবর আপডেট সময় : রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ১৯ এই পর্যন্ত দেখেছেন
বাংলাদেশ রেলওয়ের ছাতক বাজার ষ্টেশন, কংক্রিট শ্লীপার প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেছেন রেলওয়ের মহা পরিচালক আফজাল হোসেন। শুক্রবার বিকেলে সিলেট থেকে তিনি ছাতক বাজার এসে পৌছেন। এ সময় তিনি সিলেট-ছাতক রেলপথ চালু এবং রেলওয়ের ছাতক কংক্রিট শ্লীপার প্লান্ট চালুর বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
শনিবার তিনি ছাতক-ভোলাগঞ্জ রজ্জুপথ ও রেলওয়ের ভোলাগঞ্জ কোয়ারি এলাকা পরিদর্শন করেন।।তিনি বলেন, সিলেট-ছাতক  রেলপথ ও ষ্টেশন সংস্কারে মোট ২ শত ১৭ কোটি  ৩৪ লক্ষ  ৪  হাজার ৩৬৯ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প একনেক থেকে ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল অনুমোদিত হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের ব্যয়ের ৮০ শতাংশ ইউএস ডলার ও ২০ শতাংশ বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধ করা হবে। এ প্রকল্পের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি দরপত্র জমা পড়লে চারটি দরপত্রই টেকনিক্যালি রেসপনসিভ বিবেচিত হয়। দরপত্রের সকল প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মীর আখতার হোসেন লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। শীর্ঘ্রই সিলেট-ছাতক রেলপথ সংস্কার কাজ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
সিলেট-ছাতক রেলপথ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.সালেহ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জানা যায়, বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রেলওয়ের সিলেট থেকে ছাতক বাজার সেকশন (মিটার গেজ ট্র্যাক) পুনর্বাসন প্রকল্পের ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট থেকে ছাতকবাজার পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার রেললাইনের এমব্যাংকমেন্ট ও রেলপথ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে সিলেট-ছাতক রেল চলাচল বন্ধ আছে। করোনা মহামারির সময় থেকে এ পথে রেল যোগাযোগ প্রথমে বন্ধ হয়ে পড়ে। ২০২২ সালের বন্যায় ৩৪ কিলোমিটার রেলপথের প্রায় ১২ কিলোমিটার রেলপথ লন্ডবন্ড হয়ে পড়ে। রেলপথটি পুনর্বাসন করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করার জন্য নতুন এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।
ব্রিটিশ আমল থেকে শিল্প শহর হিসেবে রয়েছে ছাতকের খ্যাতি। সে সময় সিলেট থেকে ছাতক পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারিত হয়েছিল বাণিজ্যিক কারণে। এরপর পরিকল্পনা ছিল সেখান থেকে সুনামগঞ্জ জেলা শহর (তৎকালীন মহকুমা) পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা।আওয়ামীলীগের প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রেলমন্ত্রী থাকাকালে সেই পুরোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি আলোচনায় আসে। তবে রেল মন্ত্রণালয় থেকে তিনি সরে গেলে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। নতুন পরিকল্পনায় রেললাইন টি ছাতককে বাদ দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জে লাইন নেয়ার কথা বলা হয়। এর প্রতিবাদে সেই সময়ে সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এতে মন্ত্রী-এমপির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। যার ফলে পুরোনো সিলেট -ছাতক রেল লাইন ও ষ্টেশন সংস্কার কাজ চাপা পড়ে থাকে। প্রায় ৫ বছর ধরে সিলেট-ছাতক রেলপথ বন্ধ থাকার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রেলপথটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এ দিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ছাতকস্থ কংক্রিট শ্লীপার প্লান্ট দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। এ প্লান্টটিও দ্রুত চালুর আশ্বাস দেন তিনি।
কংক্রিট শ্লীপার প্লান্টে কয়েকটি শ্লীপার উৎপাদন করার মধ্য দিয়ে রেলওয়ের মহা পরিচালক আফজাল হোসেন উৎপাদন পক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করেন। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে ছাতক রেলওয়ে  পরিদর্শন কালে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা পরিচালক আফজাল হোসেনের সাথে ছিলেন রেলওয়ের মহা-ব্যবস্থাপক(পুর্ব) মোঃ সুবক্তগীন, প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া, ডি.আর.এম. আরিফ মহি উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী ছাতক বাজার (অ.দা.) আহসান হাবিব, চীপ কমান্ডড্যান্ট আছাবুল ইসলাম, উর্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) ছাতক বাজার আব্দুল নুর সহ কর্মকর্তাবৃন্দ।

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102