বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ১২:০২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মাদকসেবী ও চাঁদাবাজদের দৌরাত্মের প্রতিবাদে নবীগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ট্রাইবুনাল গঠনের দাবি আওয়ামীলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে লন্ডনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মা দিবসে বৃদ্ধাশ্রমে খাবার পরিবেশন পঞ্চগড় সীমান্তে নীলগাই উদ্ধার হবিগঞ্জে ইজিবাইক চড়া নিয়ে সংঘর্ষ আহত ৪০ পুলিশের অভিযানে নগদ অর্থসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক মানব কল্যাণে ধম্মকথা’র দিনব্যাপী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত চালকের অসাবধানতায় শ্রীমঙ্গলে তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত মৌলভীবাজার ওয়েলফেয়ার এন্ড এড্যুকেশন ট্রাষ্ট ইউকের সেমিনার ও ডিনার পার্টি অনুষ্ঠিত

প্রশ্ন ফাঁস: আরও ৫ চিকিৎসক গ্রেপ্তার

ফাঁসকৃত প্রশ্নে মেডিকেল পরীক্ষা দিয়ে ১১তম হন লামিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • খবর আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৭৪ এই পর্যন্ত দেখেছেন

মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও ফাঁসকৃত প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে খুলনা থেকে ৫ চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ডা. মো. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম (৪০), ডা. লুইস সৌরভ সরকার (৩০), ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া (২৫), ডা. শর্মিষ্ঠা মন্ডল (২৬) ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন তিশা (২৪)।

খুলনার চার চিকিৎসক সিআইডির কাছে কেন, জানতে চেয়ে সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে পরিবারের করা সাংবাদিক সম্মেলনের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তারের কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানায় পুলিশের বিশেষায়িত এ তদন্ত সংস্থাটি।

জানা গেছে, গ্রেপ্তার ডা. মো. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম চিকিৎসা সেবা বাদ দিয়ে কোচিং ব্যবসায় জড়ান। খুলনা শহরের থ্রি ডক্টরস নামে মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে নিজেকে চিকিৎসক তৈরীর কারিগর হিসেবে পরিচয় দিলেও আসেলে তিনি মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে শত-শত শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সরকারী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। তিনি ও তার স্ত্রীর একাউন্টে প্রায় ২৫ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি। হাসপাতাল, ফ্ল্যাট, জমি, মাছের ঘের ও হোটেল শেয়ারসহ হয়েছেন বিপুল সম্পদের মালিক।

এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃত ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া, ডা. শর্মিষ্ঠা মন্ডল ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন তিশা থ্রি ডক্টরস নামে মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা ২০১৫-১৬ সেশনে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে মেডিকেলে চান্স পান।

এরমধ্যে লামিয়া মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ১১তম স্থান অর্জন করে। তাকে বাসায় প্রাভেটও পড়াতেন ডা. তারিম। এর আগে গত ২০২০ সালের জুলাই মাসে জসিম উদ্দিন ও অক্টোবর মাসে আবদুস সালাম নামে দুজনকে মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিরপুর থানায় মামলা হয়। তার তদন্তে নেমেই মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চলতি বছরের গত ৩০ জুলাই থেকে ৯ আগস্টের মধ্যে ৭ চিকিৎসকসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

মেডিকেল শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রেস স্টাফ আব্দুস সালাম ও তার চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিন মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রশ্নফাঁস চক্র গড়ে তোলে। সম্প্রতি গ্রেপ্তারকৃত ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদেই এই ৫ জনের নাম বেরিয়ে আসে। এরই মধ্যে ৫ জনকে ১৮ আগস্ট হেফাজতে নিলেও সিআইডি বিষয়টি এতোদিন স্বীকার করেনি।

এরই মধ্যে খুলনা বিএমএ ভবনে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদমাধ্যমের সামনে চিকিৎসকের পরিবার জানায়, গত ১৮ আগস্ট ভোরের দিকে কয়েকজন সিআইডি পরিচয়ে তাদের বাড়িতে যান। ওই দলের সঙ্গে ২ নারী সদস্যও ছিলেন। পরে ওই চার চিকিৎসককে এক ধরনের জোর করে সাদা মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু কেন ও কী কারণে তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা জানানো হয়নি। তাদের কাছে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিল না।

অভিভাবকরা আরো জানান, চিকিৎসদের নিয়ে যাওয়ার সময় যোগাযোগ করার জন্য একটি মুঠোফোন নম্বর দিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু ওই নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেনি। অভিভাবকরা জানান, তাদের সন্তানরা খুবই মেধাবী। তদের বিরুদ্ধে যে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ করা হচ্ছে তা সত্য নয়। ওই চার চিকিৎসক থ্রি ডক্টরস নামের একটি মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টারে কোচিং করেছেন বলে জানান অভিভাবকরা।

সিআইডির গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদেই এদের বিষয়ে জানা যায় ও তাদের সিআইডি হেফাজতে নেয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃত ডা. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা পেশা বাদ দিয়ে থ্রি ডক্টরস নামে মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার গড়ে তোলেন। তিনি নিজেকে চিকিৎসক তৈরীর কারিগর হিসেবে পরিচয় দিলেও মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে শত-শত শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সরকারী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়ে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তারিম ও তার স্ত্রীর একাউন্টে প্রায় ২৫ কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে।

ডা. লুইস সৌরভ সরকার খুলনা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। খুলনা শহরের আলোচিত মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার থ্রি ডক্টরস এর শিক্ষক। বর্তমানে একটি বেসরকারী এনজিওতে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকলেও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ছিল সে।

এদিকে গত ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ১১তম স্থান অর্জন কারী ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া খুলনা থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালক তারিমের স্পেশাল ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

এছাড়াও তাকে বাসায়ও পড়াতো সে। কম মেধাবী হওয়ার পরও তারিমের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে তিনি মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। তারিমের ঘনিষ্ঠজন ও তৎকালীন কোচিংয়ের ৩ জন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। জাতীয় মেধায় ১১তম হওয়ার পরও সে ৪টি ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষায় সব বিষয়েই ফেইল করেছে। পরবর্তীতে একাধিকবারের চেষ্টায় সে পাশ করেছে।

লামিয়ার প্রশ্ন পেয়ে চান্স পাওয়ার বিষয়টি খুলনার চিকিৎসক মহলে ওপেন সিক্রেট। লামিয়ার ভর্তি জন্য তার স্বামী শেখ ওসমান গনি ও ডা. তারিমের মাঝে প্রায় ১৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া ডা. শর্মিষ্ঠা মন্ডল ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন তিশা উভয়েই ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় তারিমের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্র ক্রয় করে খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদেরকে মিরপুর মডেল থানার অধীণে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নিউজ /এমএসএম

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102