দিনের শুরু থেকেই আমরা ভীষণ ব্যস্ত। সকালে চোখ খোলার পরই চট করে রেডি হয়ে মুখে কিছু একটা পুরে অফিসের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়তে হয়। তারপর বাসের ভিড় ঠেলতে ঠেলতে পৌঁছাতে হয় গন্তব্যে।
এদিকে অফিসে পৌঁছানোর পরই শুরু হয়ে যায় কর্মযজ্ঞ। একের পর এক কাজ সারতে সারতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। তারপর কাজ শেষে আবার সেই বাসে বাদুর ঝোলা হয়ে বাসায় ফেরা। বাসায় ফেরার পরই ক্লান্তিতে জুড়িয়ে আসে চোখ। তাই তড়িঘড়ি খেয়েই সোজা বিছানায় শুতে চলে যান অধিকাংশ বাঙালি। এটাই গড়পড়তা কর্মজীবী বাঙালির প্রতিদিনের রুটিন।
কিন্তু জানেন কি, রাতে খেয়েই দ্রুত বিছানায় চলে যাওয়ার অভ্যাসটা শরীরের বড়সড় সব ক্ষতি ডেকে আনে? হ্যা, এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। চলুন তবে জেনে আসি এই অভ্যাস কী কী বিপদ ডেকে আনতে পারে।
অ্যাসিডিটির ফাঁদ
খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়ার কারণে অনেক সময় খাবার পাকস্থলী হয়ে উপরের দিকে খাদ্যনালীতে উঠে আসে। এই সমস্যার নামই হলো রিফ্লাক্স ডিজিজ। এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর বুকে জ্বালা হয়, মুখ টক হয়ে যায়। এমনকি খাবার ঠিকমতো হজমও হয় না। তাই এই ধরনের সমস্যার ফাঁদ এড়াতে চাইলে রাতে খেয়েই আর ঘুমের দেশে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।
বাড়বে ওজন
রাতে খাওয়ার পর বিছানায় গা এলিয়ে দিলে কিন্তু ওজন বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। তেল, মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার পর তা খরচ না করলে দেহে মেদের পরত তো চড়বেই। তাই যারা রাতে ভারী খাবার খেয়ে শুতে চলে যান, তাদের ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে। সুতরাং অত্যধিক ওজনের মার না সইতে চাইলে আজ থেকেই এই বদভ্যাস দূর করুন।
অনিদ্রার ভ্রুকুটি
রাতে খাবারের পরই শুতে গেলে শরীরের সার্কাডিয়ান রিদমের গড়বড় হয়ে যায়। এই কারণেই অনিদ্রার মতো গুরুতর অসুখের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সেই সঙ্গে রাতে তেল, ঝাল, মশলা বেশি খেলে শরীরে একটা অস্বস্তি হতে পারে। এই কারণেই রাতে শোয়ার পরও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা স্বাভাবিক। তাই নিজেকে ইনসোমনিয়ার ফাঁদ থেকে রক্ষা করতে চাইলে এই ভুল আর করা চলবে না।
সন্তানসম্ভবা অবস্থায় বিপদ আরও বেশি
গর্ভাবস্থায় রাতের খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিছানায় গা এলিয়ে দেয়ার অভ্যাস থাকলে কিন্তু সমস্যার শেষ থাকবে না। এই কৃতকর্মের জন্য গ্যাস, অ্যাসিডিটিসহ একাধিক পেটের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। তাই গর্ভবতী নারীরা রাতে খাওয়ার পরপরই ঘুমের দেশে পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করবেন।
খাওয়ার কতক্ষণ বাদে ঘুমাতে যাবেন?
রাতে খাওয়ার অন্ততপক্ষে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বাদে ঘুমাতে যাওয়া উচিত বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ৮টা-৯টার মধ্যে কিছু হালকা খাবার খেয়ে ১১টা কিংবা ১২টা নাগাদ শুতে গেলে শরীর সুস্থ থাকে।
তাই এই নিয়মটা মেনে চলার চেষ্টা করুন। সব থেকে ভালো হয়, রাতে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হেঁটে নিলে। এতে খাবার সহজেই হজম হয়ে যায়। এমনকি শরীরে কিছু হ্যাপি হরমোন বের হয়। তাই ঘুম আসতে সময় লাগে না।
নিউজ /এমএসএম