বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০২:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নবীগঞ্জে তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা সিলেট-৪ আসনে বহিষ্কৃত ও চিহ্নিত অপরাধীদের নিয়ে আরিফের প্রচারণা কর্মবীর মাওলানা আব্দুর রহমান সিংকাপনী গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত ‘শুধু প্রিয়ংবদার জন্য’ কাব্য গ্রন্থের পর্যালোচনা পক্ষপাতদুষ্ট ও অস্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া আইনের শাসনকে ব্যাহত করবে লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং কর্ণফুলী এলিট এর চার্টার এনিভার্সারি উদযাপিত বিজিবি কতৃক ৬ টি ভারতীয় গরু উদ্ধার ক্বারি নুরুল ইসলাম প্রেসিডেন্ট ও কামরুল ইসলাম সেক্রেটারি নির্বাচিত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে সুধীজনের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত

ক্ষোভে ফুঁসছেন তৃণমূলের কর্মীরা

সিলেট-৪ আসনে বহিষ্কৃত ও চিহ্নিত অপরাধীদের নিয়ে আরিফের প্রচারণা

এম এ আহমদ আজাদ
  • খবর আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১২ এই পর্যন্ত দেখেছেন
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে নির্বাচনী উত্তাপ এখন তুঙ্গে। বিএনপির হাইকমান্ড থেকে এই আসনে এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করা হলেও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন একাধিক হেভিওয়েট নেতা। তবে সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে হঠাৎ করেই সিলেট-৪ আসনে নিজেকে ‘মনোনীত প্রার্থী’ হিসেবে ঘোষণা করে প্রচারণায় নেমেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তার এই হঠাৎ আর্বভাব এবং প্রচারণায় দলের বহিষ্কৃত নেতা, মামলার আসামি ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এই আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ও গত জুলাইয়ের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ নেতা অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আবদুল হাকিম চৌধুরী এবং হেলাল উদ্দিনসহ একাধিক নেতা দীর্ঘদিন ধরে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এর মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরীর আকস্মিক প্রচারণায় বিভ্রান্তি ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দলীয় সূত্র জানায়, গুলশান কার্যালয়ে তলব করা হলে তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, তিনি সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহী নন। পরবর্তীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, সিলেট-১ আসন বা সিটি মেয়র হিসেবে মনোনয়ন না পেলে তিনি আসসালামুআলাইকুম জানাবেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি অবস্থান পরিবর্তন করে নিজেকে সিলেট-৪ আসনের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন।

তার এই ঘোষণার পরপরই আবদুল হাকিম চৌধুরী ও হেলাল উদ্দিনের সমর্থকরা এলাকায় মশাল মিছিল বের করে প্রতিবাদ জানান। স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবি, অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামানের বিশাল কর্মী বাহিনী এবং অন্য প্রার্থীদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমকে পাশ কাটিয়ে আরিফুল হক সুবিধা করতে পারছেন না। ফলে তিনি নিজের অবস্থান শক্ত করতে বিতর্কিতদের দলে ভেড়াচ্ছেন।

আরিফুল হক চৌধুরীর প্রচারণায় এমন সব ব্যক্তিদের দেখা যাচ্ছে, যারা বিভিন্ন সময়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন এবং বালু-পাথর লুটপাটসহ নানা অপকর্মের দায়ে অভিযুক্ত।
তার পক্ষে মিছিল ও সমাবেশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান ও বিএনপি থেকে বহিষ্কার হয়ে সদ্য দলে ফেরা শাহ আলম স্বপন এবং জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বহিষ্কৃত নেতা মো. শাহপরাণ।

জানাযায় গত ৫ আগস্টের পর পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় স্বপন ও শাহপরাণের বিরুদ্ধে জাফলং ও আশপাশের এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন এবং লুটপাটের অভিযোগে মামলা রয়েছে।
এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে বহিষ্কৃত উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান এবং শোকজপ্রাপ্ত ছাত্রদল নেতা আজির উদ্দিনকেও আরিফের সাথে দেখা গেছে।
সবচেয়ে বেশি সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে জাফলংয়ে আরিফুল হকের এক সমাবেশে গোয়াইনঘাট সীমান্তের তালিকাভুক্ত শীর্ষ চোরাকারবারী কামাল মেম্বারের বক্তব্য রাখা নিয়ে। এ ঘটনায় পুরো উপজেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

নিজ দলের ত্যাগী নেতাদের পাশ কাটিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শৈলেন্দ্র চন্দ্র নাথের বাড়িতে গিয়ে বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিগত ১৭ বছর যারা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা চালিয়েছে, তাদের সাথে আরিফের সখ্যতাকে ‘শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা।

গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপি নেতা আবদুল মতিন বলেন, আরিফুল হক চৌধুরী অপরাধীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলায় তৃণমূলের কর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তার অনুষ্ঠানে বালু-পাথর লুটকারী, বহিষ্কৃত নেতা ও সীমান্তের চোরাকারবারী গডফাদারদের উপস্থিতি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

জৈন্তাপুর উপজেলা যুবদল নেতা করিম আহমদ জুয়েল বলেন, সিলেট-১ আসনে জায়গা না পেয়ে আরিফ সাহেব হঠাৎ এখানে এসে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তিনি আসার আগ পর্যন্ত যারা আত্মগোপনে ছিল, সেই সব বহিষ্কৃত ও অপরাধীরা এখন মাঠে নেমে নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এমনকি জনগণের টাকায় হওয়া সড়কের কাজগুলোকেও নিজের কাজ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা সফল আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বৈরাচার সরকারের গত ১৭ বছরে যারা আমাদের গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে, আরিফুল হক এখন তাদের কাছে টানছেন। যুবলীগ নেতার বাড়িতে তার যাতায়াত দলের আদর্শের পরিপন্থী।

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102