বয়স ৮০ বছর! কিন্তু এই বয়সও থামাতে পারেনি চোই সুন-হাওকে। দক্ষিণ কোরিয়ার এই নারী এখন মিস ইউনিভার্স কোরিয়া প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বয়স্ক প্রতিযোগী হিসেবে ইতিহাস গড়ার পথে।
১৯৫২ সালে প্রথম মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা শুরুর প্রায় এক দশক আগে জন্মগ্রহণ করেন চোই। এই বছর, তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার ফাইনালিস্টদের মধ্যে একজন হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেছেন। সোমবার, ৮০ বছর বয়সী এই নারী ৩১ জন অন্যান্য প্রতিযোগীর সঙ্গে মাথায় মুকুট পরার লড়াইয়ে নামবেন। তার লক্ষ্য মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করা, যা নভেম্বর মাসে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হবে।
চোই বলেন, আমি পৃথিবীকে চমকে দিতে চাই—একজন ৮০ বছর বয়সী মহিলা কিভাবে এতটা সুস্থ থাকেন? কিভাবে তিনি নিজের শরীরকে ধরে রেখেছেন? তিনি আরো যোগ করেন, যখন মানুষ বয়স্ক হয়, তখন তাদের ওজন বেড়ে যায়। আমি প্রমাণ করতে চাই যে বৃদ্ধ বয়সেও সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব।
দীর্ঘদিন ধরে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় বয়সসীমা ছিল ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। তবে এই বছর, প্রতিযোগিতায় আধুনিকতার ছোঁয়া এনে বয়সসীমা তুলে দেয়া হয়েছে। গত বছর, সংস্থাটি বিবাহিত নারী, গর্ভবতী বা মা হয়েছেন এমন নারী প্রতিযোগীদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিয়েছে।
চোই বলেন, বয়সের বাধা তুলে দেয়ার পরে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, চেষ্টা করে দেখি। আমি এগিয়ে যেতে পারি কি না, সেটা বড় কথা নয়, কিন্তু এই সুযোগ নেয়ার জন্য আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
চোই, যদি মুকুট জয় করেন এবং মেক্সিকোতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, তবে তিনি ৪০ বছর বয়সী মাল্টার বিট্রিস এনজোয়ার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বয়স্ক হবেন। বিট্রিস এনজোয়া বর্তমানে মিস ইউনিভার্স ফাইনালে সবচেয়ে বয়স্ক প্রতিযোগী।
এবারের মিস ইউনিভার্স কোরিয়ার আয়োজকরা প্রতিযোগিতার প্রচারে বলেছেন, স্বপ্ন দেখার জন্য বয়স কোনো বাধা নয়। প্রতিযোগিতায় এবার বিকিনি সেগমেন্টও বাদ দেয়া হয়েছে। সোমবারের প্রতিযোগিতায় চোই সুন-হাও গান গাইবেন, যেখানে অন্যান্য প্রতিযোগীরা নাচ কিংবা কোরিয়ান ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘হনবোক’ পরে হাঁটবেন।
চোই মনে করেন সৌন্দর্যের মান শুধুমাত্র বাহ্যিক নয়; অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, বাহ্যিক সৌন্দর্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে মনকে শান্ত রাখা, অন্যকে সম্মান করা এবং ইতিবাচক চিন্তা করা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রায় ১০ বছর আগে, ৭২ বছর বয়সে আর্থিক সংকট কাটাতে একটি হাসপাতালের সেবিকা হিসেবে কাজ করার সময় চোই মডেলিংয়ের ক্যারিয়ার শুরু করেন। সেই থেকে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ফ্যাশন জগতে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। ৭৪ বছর বয়সে সিউল ফ্যাশন উইকে অভিষেকের মাধ্যমে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় ম্যাগাজিন হার্পার’স বাজার এবং এল-এ ফিচার হন।
মডেল হওয়া আমার জন্য নতুন পথ উন্মোচন করেছে, বলেন চোই। যখন আমার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলো, তখন আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানালাম এবং কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে গেলাম। এটি খুবই মজার এবং আমি এটি করতে ভালোবাসি।
চোইয়ের আত্মবিশ্বাস ও উৎসাহ তাকে শুধু দক্ষিণ কোরিয়ায় নয়, গোটা বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।
নিউজ /এমএসএম