

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এই আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ও গত জুলাইয়ের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ নেতা অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আবদুল হাকিম চৌধুরী এবং হেলাল উদ্দিনসহ একাধিক নেতা দীর্ঘদিন ধরে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এর মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরীর আকস্মিক প্রচারণায় বিভ্রান্তি ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দলীয় সূত্র জানায়, গুলশান কার্যালয়ে তলব করা হলে তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, তিনি সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহী নন। পরবর্তীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, সিলেট-১ আসন বা সিটি মেয়র হিসেবে মনোনয়ন না পেলে তিনি আসসালামুআলাইকুম জানাবেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি অবস্থান পরিবর্তন করে নিজেকে সিলেট-৪ আসনের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন।
তার এই ঘোষণার পরপরই আবদুল হাকিম চৌধুরী ও হেলাল উদ্দিনের সমর্থকরা এলাকায় মশাল মিছিল বের করে প্রতিবাদ জানান। স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবি, অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামানের বিশাল কর্মী বাহিনী এবং অন্য প্রার্থীদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমকে পাশ কাটিয়ে আরিফুল হক সুবিধা করতে পারছেন না। ফলে তিনি নিজের অবস্থান শক্ত করতে বিতর্কিতদের দলে ভেড়াচ্ছেন।
আরিফুল হক চৌধুরীর প্রচারণায় এমন সব ব্যক্তিদের দেখা যাচ্ছে, যারা বিভিন্ন সময়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন এবং বালু-পাথর লুটপাটসহ নানা অপকর্মের দায়ে অভিযুক্ত।
তার পক্ষে মিছিল ও সমাবেশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান ও বিএনপি থেকে বহিষ্কার হয়ে সদ্য দলে ফেরা শাহ আলম স্বপন এবং জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও বহিষ্কৃত নেতা মো. শাহপরাণ।
নিজ দলের ত্যাগী নেতাদের পাশ কাটিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শৈলেন্দ্র চন্দ্র নাথের বাড়িতে গিয়ে বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিগত ১৭ বছর যারা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা চালিয়েছে, তাদের সাথে আরিফের সখ্যতাকে ‘শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা।
জৈন্তাপুর উপজেলা যুবদল নেতা করিম আহমদ জুয়েল বলেন, সিলেট-১ আসনে জায়গা না পেয়ে আরিফ সাহেব হঠাৎ এখানে এসে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তিনি আসার আগ পর্যন্ত যারা আত্মগোপনে ছিল, সেই সব বহিষ্কৃত ও অপরাধীরা এখন মাঠে নেমে নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এমনকি জনগণের টাকায় হওয়া সড়কের কাজগুলোকেও নিজের কাজ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা সফল আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বৈরাচার সরকারের গত ১৭ বছরে যারা আমাদের গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে, আরিফুল হক এখন তাদের কাছে টানছেন। যুবলীগ নেতার বাড়িতে তার যাতায়াত দলের আদর্শের পরিপন্থী।