বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বৃহস্পতিবার ১৪ সেপ্টম্বর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দুপুরে কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জিয়ারত ও অসহায় দুঃস্থদের মাঝে রান্নাকরা খাবার বিতরণ করা হয়।
শহরের শ্রীমঙ্গল সড়স্থ সৈয়দ মহসীন আলী ফাউন্ডেশনের আয়োজনে সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রীর সহধর্মিনী সৈয়দা সায়রা মহসীন’র সভাপতিত্বে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী সৈয়দ মহসিন আলীর বাবার সৈয়দ শরাফ আলী একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। মা সৈয়দা আছকিরুনন্নেছা খানম একজন গৃহিণী।
কলকাতার আলীপুরে ছিলো তাদের বিশাল বাড়ি। সেই বাড়িতে ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর মহসীন আলী জন্মগ্রহণ করেন। ৫ ভাইদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।
সৈয়দ মহসিন আলীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় কলকাতায়। তিনি কলকাতার সেন্টজেবিয়ার্স স্কুলে জুনিয়র কেমব্রিজ ও সিনিয়র কেমব্রিজ পাস করেন।
পরবর্তীকালে আবার বাংলাদেশে এসে বাংলা মাধ্যমে কিছুদিন পড়াশুনা করেন। তবে আবারো তিনি কলকাতা থেকে ম্যানেজমেন্টে ডিপ্লোমা করেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। দেশমাতৃকার প্রতি তার মমত্ববোধের কারণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। যুদ্ধ চলাকালে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সিলেট বিভাগে সিএনসি স্পেশাল ব্যাচের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কাজ করেছেন যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ গঠনেও।
তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত স্নেহভাজন সৈয়দ মহসিন আলী মৌলভীবাজার মহকুমা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে জেলা আওয়ামী লীগেরও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতাত্তোরকালে তিনিই একমাত্র নেতা যিনি পৌরসভায় পরপর ৩ বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় তাকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে।
২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোকে ঢেলে সাজিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন বলে রাজনীতি করেও কিছু করতে পারেননি।
সব সময় মানুষের সেবা দেয়ার জন্য সর্বদা জাগ্রত ছিলেন। মন্ত্রী হয়েও কিভাবে মানুষের কাছাকাছি থাকা যায় তা তিনি সরকারি মিন্টু রোডের বাসা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রেখে প্রমান করে গেছেন।
বিনিময়ে তিনি পেয়েছেন মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। এই দানবীর ব্যক্তি মরে অমর হয়ে আছেন। তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতাদের একান্ত আপনজন ও সত্যিকারের গণমানুষের নেতা ছিলেন সৈয়দ মহসীন আলী।
নিউজ /এমএসএম