সম্প্রতি সিলেটের কুলাউড়া থেকে জঙ্গি গ্রেপ্তারের ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চলমান এক দফা আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতে সরকার জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নাটক সাজিয়েছে।
তিনি বলেছেন, হঠাৎ করে এত বিস্ফোরক কোথা থেকে এলো, কারা আনল, কীভাবে আনল? যখনই আন্দোলন তুঙ্গে থাকে, তখনই এই জঙ্গি–নাটক অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (১৩ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের (কোকো) ৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন-বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আবদুস সালাম। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে ক্রীড়াঙ্গনে দলাদলি করেনি। এখন শুধু ক্রীড়াঙ্গনে না, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে অস্থিরতা চলছে। ক্রীড়াঙ্গনে ক্রীড়াবিদদের উচ্ছিষ্টে পরিণত করা হয়েছে। দুর্নীতি আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে। ক্যাসিনো বাণিজ্য করে ক্লাবগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে।
সভায় বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাবেক পরিচালক শরীফুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় এই জঙ্গিবিরোধী অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, সরকার কূটকৌশলী। হঠাৎ কুলাউড়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযান। এত বিস্ফোরক, ডেটোনেটর—কী ভয়ানক ব্যাপার! হঠাৎ করে কোথা থেকে এলো, কারা আনল, কীভাবে আনল?
চলমান এক দফা আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতেই এমন জঙ্গিবিরোধী অভিযান দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যখন আন্দোলন তুঙ্গে থাকে, তখনই এই জঙ্গি–নাটক অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমা বিশ্বকে জুজুর ভয় দেখাবে, যে দেখ আমরা না থাকলে জঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। নাটক করতে করতে সরকার এই জায়গায় এসেছে।
মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া খাতের দুরবস্থার বিষয় তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে প্রতিদিন ১০-১২ জন মারা যাচ্ছেন। কারাগারে শোয়ার মতো করে হাসপাতালের মেঝেতে শিশুরা চিকিৎসা নিচ্ছে। এত সরকার মেগা উন্নয়নের কথা নলে, তাহলে এমন পরিস্থিতি কেন? জনগণের প্রতি সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামে জনগণের নাভিশ্বাস অবস্থা।
নেতা-কর্মীরা ঘরে ঘুমাতে পারেন না—দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, যাঁরা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন, তাঁরাও রেহাই পাচ্ছেন না। বিএনপির কর্মীকে না পেলে তাঁর বাবা, ভাইকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র না থাকলে এমন হতেই থাকবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের একটাই দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন। আওয়ামী লীগ জানে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন দিলে তারা শতকরা ১০টি আসনও পাবে না। এই একটাই কারণ তাদের কোনো কথাই শুনতে না চাওয়ার।
পরিবর্তন আসছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অনেকে বলেন, আপনার মুখে সব সময় হাসি থাকে কেন? কারণ, আমি দেখতে পাচ্ছি, এই ভয়াবহ দানব সরে যাচ্ছে। দেশের মানুষ এই সরকারের পতন দেখতে চায়। নিশ্চিত থাকেন, পরিবর্তন আসছে, পরিবর্তন আসবে।
সভায় ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আরাফাত রহমানের অবদান নিয়ে আলোচনা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, আরাফাত রহমান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। সব কিছুকে রাজনৈতিকভাবে দেখার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। যোগ্যতা থাকা ব্যক্তিও বঞ্চিত হন। আরাফাত রহমানের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
নিউজ /এমএসএম