স্টাফ রিপোর্টার: সিলেটের সুনামগঞ্জে বানের পানি কমছে ধীর গতিতে। তবে জেলা শহরসহ কয়েকটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্ধি। এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকালে সুনামগঞ্জের বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও বানভাসিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ পিপিএম (বার)। একই দিনে আইজিপির পাশাপাশি সুনামগঞ্জ পরিদর্শন ও বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও তার টিম।
এদিন সকাল সাড়ে এগারোটায় তিনি র্যাবের একটি হেলিকপ্টারে করে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ফুটবল খেলার মাঠে অবতরণ করেন। এরপর তিনি বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে দুর্গতের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। পরে স্পিডবোট যোগে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ডিআইজি (লজিস্টিক) তৌফিক মাহবুব চৌধুরী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহাম্মেদ পিপিএম (বার), অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব বিজয় সরকার, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (পদোনতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মিজানুর রহমান বিপিএম, নৌ পুলিশ সিলেট অঞ্চলের পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমিন, সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের ইন সাভির্স ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার নিকুলিন চাকমা, অরিক্ত সুপার জয়নাল আবেদীন, সুমন মিয়া, সহকারী পুলিশ সুপার তাহিরপুর সার্কেল শাহিদুর রহমান, তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ তরফদার, ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, আজাদ হোসেন, মাসুক মিয়া প্রমুখ।
এদিকে সুনামগঞ্জের দুর্গম ও বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে সেনা, নৌ, বিমান, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবির উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, ধরমপাশা, ছাতক, দোয়ারাবাজার উপজেলার আকাশে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার, সেনা, নৌ, কোস্টগার্ড ও বিজিবির স্পিডবোটকে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালাতে দেখা গেছে।
তবে সুনামগঞ্জ শহরসহ জেলার সবকটি উপজেলাতেই নিত্যপণ্যের বাজার রয়েছে লাগামহীন। এ যেন সুনামগঞ্জবাসীর ওপর অনেকটাই মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ এর মতো। প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম ২০-৫০% পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার যেনো আকাশের চাঁদ। কোথাও মিলছে তো কোথাও মিলছেনা। যেখানে মিলছে দাম দিগুনের কাছাকাছি।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, বন্যার সুযোগে যারা নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। শিগগিরই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বন্যাকবলিত হওয়ায় শহরের কিছু কিছু এলাকার বাসা বাড়িতে এখনও পানি রয়েছে। যার কারণে অনেক পরিবারই বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা আত্মীয় স্বজনদের বহুতল বাসায় উঠেছেন।
সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ জেলা সদরসহ বেশি আক্রান্ত তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, ধরমপাশা, ছাতক দোয়ারাবাজার ও জগন্নাথপুর উপজেলাসহ জেলার সবকটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তবে পানি কমছে ধীর গতিতে। তিনি আরো বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রসহ বন্যাকবলিত সকল উপজেলায় ত্রাণ পৌছে দেয়া হয়েছে।
ইউকেবিডিটিভি/ বিডি / এমএসএম