লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বহির্বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ। ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ী লন্ডনে এসে যোগ দেন এই অনন্য মহাসমাবেশে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর এবং দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হওয়ার পরে এটি ছিল সবচেয়ে বড় শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ। উপস্থিত ছিলেন একাধিক সাবেক মন্ত্রী, বিশিষ্ট নেতা ও বাংলাদেশ থেকে আগত কিছু শিষ্য পর্যায়ের কর্মী।
এই সমাবেশ ছিল শুধু উদযাপন নয়—এটি ছিল একটি প্রতিজ্ঞা, একটি শপথ—বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার, দেশের মানুষের অধিকার পুনরুদ্ধারের, এবং একটি অসাম্প্রদায়িক, উন্নয়নমুখী রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রামে অবিচল থাকার।
সমাবেশের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ অংশ ছিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা-এর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেওয়া আবেগময় ভাষণ। তিনি বলেন:
“বিপদ যত গভীর হোক না কেন, তা কেটে যায়। রাত যতই অন্ধকার হোক, ভোরের আলো ততই কাছে আসে।”
তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে, বিচারবহির্ভূতভাবে নির্যাতন চলছে। দেশজুড়ে ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণ, দুর্নীতি ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। নয় মাসে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে বিদেশে।
বর্তমানে দেশ পরিচালনা করছে সেই চক্র যারা একসময় স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল—জামাত-রাজাকার এবং তাদের দোসররা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ইনস্টিটিউশনগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে ৬৬৬ কোটি টাকা মওকুফ করে দিয়েছে তারা। গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, আর ম্যানপাওয়ার ব্যবসায় দালালদের লাইসেন্স দিয়ে বৈধভাবে মানব পাচার উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এই চক্রের হাতে এখন কোনো অপকর্মই বাকি নেই—দোষীদের সাজা মাফ করে দিচ্ছে, অথচ নিরীহ মানুষদের গুম-খুন-কারাবন্দি করে রাখছে।
আজকের এই সমাবেশের বার্তা ছিল স্পষ্ট—
আওয়ামী লীগ শেষ হয়নি, কোনো ষড়যন্ত্রে শেষ হবে না।
জনগণের শক্তিই আওয়ামী লীগের মূল শক্তি।
গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের পথে আওয়ামী লীগ আবার ফিরবে—প্রবাস থেকে শুরু করে দেশের মাটিতে, প্রতিটি বাংলার ঘরে।
লেখকঃ শমসাদুর রহমান রাহিন
কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক