বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:২১ অপরাহ্ন

তীব্র খরায় নতুন কুঁড়ি না আসায়

লোকসানের শঙ্কায় হবিগঞ্জের ২৪টি চা বাগান

কিবরিয়া চৌধুরী
  • খবর আপডেট সময় : সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৯২ এই পর্যন্ত দেখেছেন
হবিগঞ্জ জেলার চারটি উপজেলায় তীব্র খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে চা বাগানে পুড়ে যাচ্ছে চা পাতা। দীর্ঘ ৫ মাস যাবৎ বৃষ্টি না হওয়ায় চা গাছে পোকা-মাকড় বাসা বাধছে। গাছগুলো রোদে পুড়ে মরে যাচ্ছে। এতে করে লোকসানের শঙ্কায় পড়েছেন জেলার ২৪টি চা বাগানের মালিকপক্ষ।
নতুন কুঁড়ি না আসায় গত বছরের এই সময়ের তুলনায় চলতি বছর চায়ের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশের মতো।
অপরদিকে ভরা মৌসুমে গাছে নতুন কুঁড়ি না থাকায় কমে গেছে হাজারো শ্রমিকের কাজ। তবুও শ্রমিকরা পাহাড়ের নিচু এলাকা থেকে কলসি দিয়ে পানি এনে গাছে নতুন কুঁড়ি গজানোর চেষ্টা করছেন। চোখে-মুখে স্বপ্ন নিয়ে অধীর আগ্রহে বসে আছে বৃষ্টির আর নতুন কুঁড়ির আশায়।
চলতি বছরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এখনো চা বাগানে চা-পাতার কুঁড়ি বের হচ্ছে না। তীব্র রোদের কারণে চা বাগানে আশঙ্কাজনক হারে চা পাতার উৎপাদন কমেছে। প্রতিটি চা বাগানের ভেতরে থাকা ছোট-বড় ছড়াগুলো শুকিয়ে গেছে। যে কারণে চা বাগানগুলোতে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, জেলায় মোট ২৪টি চা বাগানের আয়তন ১৫,৭০৩,২৪ হেক্টর। প্রতি হেক্টর জমিতে ২০শ থেকে ২৫শ কেজি চা-পাতা উৎপাদন হয়। প্রতি বছর মার্চ মাস থেকে শুরু হয় চা-পাতা উত্তোলন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাগানে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি উঠছে না। পানির জন্য অনেক শ্রমিক দূর-দূরান্ত থেকে পানি এনে খাবার খাচ্ছেন। এমনকি গোসল করতে তাদের যেতে হচ্ছে দূরের বস্তিতে। বাংলো ও স্টাফ কোয়ার্টারগুলোতেও নেই পানি।
চুনারুঘাটে লালচান্দ চা বাগানের চা শ্রমিক পপি রাণী বাউরী বলেন, প্রতি বছরে মার্চ মাস আসলে আমরা দিনভর চা-পাতার কুঁড়ি উত্তোলন করি কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না হওয়াতে চা-পাতার কুঁড়ি বের হচ্ছে না। যার কারণে আমাদের কাজ ও মজুরি কমে গেছে। আমরা গোসল ও খাওয়ার পানি পাচ্ছি না। বাগানে নতুন কুঁড়ি না থাকায় আমাদের কাজ-কর্ম কমে গেছে। চা-পাতা না তুললে বাগান কর্তৃপক্ষও মজুরি দিবে না।
সুরমা চা বাগানের পার্বতী বাওড়ি বলেন, বাগানে কাজ করেই আমাদের সংসার চলে। আবার কেউ বাগানে কাজ না করে বাইরে বস্তি ও শহরে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। কিন্তু চা গাছে পাতা না আসলে আমাদের কপালে দুঃখ আছে।
দেউন্দি চা বাগানের ডেপুটি সহকারী ম্যানেজার দেবাশীষ রায় জানান, আমাদের দেউন্দি টি কোম্পানিসহ জেলার প্রতিটি চা বাগানে অনাবৃষ্টির কারণে চা উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতি হচ্ছে। মার্চ মাস চায়ের ভরা মৌসুম, এমন অবস্থা চলতে থাকলে দিনদিন আমাদের লোকসানের পাল্লা ভারী হবে।
মাধবপুর উপজেলা নোয়াপাড়া চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক সোহাগ আহমেদ বলেন, গত ২০২৪ সালে তীব্র রৌদ্রে শ্রমিক অসন্তোষসহ নানা কারণে বাগানগুলোতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চা-পাতা উৎপাদন কম হয়। চলতি বছর বৃষ্টি না হলে ক্ষতির পরিমাণ আর-ও বাড়তে পারে। বিশাল বাগান কৃত্রিম পানি দিয়ে পোষানো সম্ভব নয়।

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102