শুক্রবার থেকে গত রোববার পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় ফরাসি উপকূল থেকে নৌকা নিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন এক হাজারের বেশি অনিয়মিত অভিবাসী। চলতি বছর এ পর্যন্ত ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
ব্রিটিশ হোম অফিসের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় অনিয়মিত অভিবাসীদের ডিঙ্গি ও ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
হোম অফিস জানিয়েছে, সর্বশেষ তথ্য অনুসারে ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত চ্যানেল পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের সংখ্যা ১০ হাজার ১৩৯ জন। অবশ্য গত বছরের তুলনায় সংখ্যাটি এখনও কম। ২০২২ সালে একই সময়ে এই সংখ্যাটি ছিল ১১ হাজার ৩০০।
২০২২ সালের পুরো সময়ে মোট ৪৫ হাজার ৭৫৫ জন অনিয়মিত অভিবাসী ব্রিটিশ উপকূলে পৌঁছেছিল। অন্যদিকে, ১৬ জুন শুক্রবার থেকে ১৮ জুন রোববার বেশ কিছু উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার প্রথম অভিযানে ১০টি ছোট নৌকায় উত্তর ফ্রান্স উপকূল থেকে আসা ৪৮৬ জন ব্যক্তিকে উপকূলে নিয়ে আসা হয়।শনিবার আরও সাতটি ডিঙ্গি নৌকায় আসা ৩৭৪ জনকে ডোভার উপকূলের আশ্রয় প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ইউকে বর্ডার ফোর্স জানায়, সর্বশেষ অভিযানে রোববার চারটি নৌকায় আসা ২১০ জন ব্যক্তিকে চ্যানেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জাতীয় স্বাস্থ্যখাত এনএইচএস অপেক্ষমাণ তালিকা কমিয়ে আনা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাড়ানো, মুদ্রাস্ফীতি অর্ধেকে কমানো এবং জাতীয় ঋণ কমানোর পাশাপাশি ছোট নৌকায় অনিয়মিত অভিবাসীদের পারাপার বন্ধ করাকে তার শীর্ষ অগ্রাধিকারগুলোর একটি বলে গত মাসে ঘোষণা দিয়েছেন।
মন্ত্রিসভায় ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলেছেন, ছোট নৌকায় আসা অভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধির এই পরিসংখ্যান প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের হতাশাজনক ব্যর্থতা। ঋষি সুনাকের পরিকল্পনা জনসাধারণের চোখের সামনে ভেঙে যাচ্ছে।
হোম অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই বিপজ্জনক পারাপারের মাধ্যমে অভিবাসীদের ঝুঁকি নেওয়ার অগ্রহণযোগ্য সংখ্যা আমাদের আশ্রয় ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব চাপ সৃষ্টি করছে।
আমাদের অগ্রাধিকার হলো নৌকাগুলো বন্ধ করা। আমাদের অপারেশনাল কমান্ড ফরাসি অংশীদার এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে পাচারকারীদের বাধা দিতে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার আইন প্রবর্তন করে এ পদক্ষেপে আরও এগিয়েছে। এটির মাধ্যমে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে আগতদের আটক করা হবে এবং অবিলম্বে তাদের মূল দেশে বা নিরাপদ তৃতীয় দেশে সরিয়ে নেওয়া হবে।
বর্তমানে আশ্রয়প্রার্থীদের অস্থায়ীভাবে হোটেলে রাখার ব্যবস্থা করতে যুক্তরাজ্যকে প্রতিদিন সাড়ে পাঁচ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস
নিউজ /এমএসএম