মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা দায়ের ও প্রতিপক্ষকে হয়রানির অভিযোগে মামলার বাদী সুন্দর আলীর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য মৌলভীবাজার মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গত বুধবার দুপুর ১২ টায় এই আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১৫ জুন নিতেশ দাশ ও গীতারানী দাশ তাদের মেয়ের বিবাহ উপলক্ষে বাদী সুন্দর আলীর নিকট হতে ৪ লক্ষ টাকা কর্জ নিয়ে টাকা পরিশোধ করছেন না মর্মে বর্ণিত আসামীদের বিরুদ্ধে সুন্দর আলী বাদী হয়ে চলতি বছরের ২৭ জুন ১নং আমলগ্রহণকারী আদালত মৌলভীবাজার সদরে মামলা করলে আদালত মামলা আসামীদের প্রতি সমন ইস্যু করে ৯ নভেম্বর মামলার তারিখ ধার্য করেন। উক্ত তারিখে জামিন শুনানীর সময় আদালতে উপস্থিত আসামীপক্ষের আইনজীবী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ফজলুর রহমান এর মাধ্যমে আদালত অবগত হন যে, বাদী সুন্দর আলীর নিকট হতে আসামীগণ চিকিৎসা সংক্রান্তে টাকার প্রয়োজনে মাত্র ২৫ হাজার টাকা কর্জ করেন। পরবর্তীতে আদালত স্থানীয় ওই ইউপি সদস্য ও আসামী নিতেশ দাশ এর জবানবন্দি গ্রহণ করলে তারা আদালতকে অবহিত করেন যে, সুন্দর আলী মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জাল চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে উক্ত মামলা দায়ের করেন এবং বাদী সুন্দর আলী একজন দাদন ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
স্থানীয় অনেক মানুষকে সুদে টাকা প্রদান করেন ও পরবর্তীতে চক্রবৃদ্ধিতে সুদের টাকা আদায়ের জন্য বিভিন্ন প্রকার নির্যাতন করেন। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান বিস্তারিত অবহিত হয়ে বাদী সুন্দর আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজার মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়ে তাকে কোর্ট কাস্টডিতে প্রেরণ করেন এবং আসামীদের জামিনের আদেশ দেন।
শুনানীর সময় বিচারক আদালতে উপস্থিত মৌলভীবাজার জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বদরুল হোসেন ইকবালসহ উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এ দেশের অধিকাংশ মানুষই অসহায় দারিদ্রপীড়িত। গরীব, অসহায় ও নির্যাতিত সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে থেকে আইনী সেবা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন এবং মানুষ যেন মিথ্যা মামলায় হয়রানি না হয় সেজন্য মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে আইনজীবীদের আরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন।
মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক পিপি এ. এস. এম. আজাদুর রহমান বলেন, অনিবন্ধিত সুদের কারবারীর বিরুদ্ধে ব্যতিক্রমী ও যুগান্তকারী আদেশের ফলে সমাজে অবৈধ সুদের কারবার হ্রাস পাবে।
পাবলিক প্রসিকিউটর রাধাপদ দেব সজল বলেন, সুদ মানুষকে প্রকৃত অর্থনৈতিক কার্যকলাপ থেকে ফিরিয়ে রাখে। আদালতের উক্ত আদেশের ফলে সমাজে অবৈধ সুদের কারবারীর সংখ্যা হ্রাস পাবে । ভবিষ্যতে আর কোন সুদ কারবারী মিথ্যা মামলা করতে আসবে না।
ইউকেবিডিটিভি/ বিডি / এমএসএম