সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন

আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে গরীবের পেটে ভাত থাকে, গরীবের মাথা গোজার ঠাঁই হয়— শেখ হাসিনা

ইউকে বিডি টিভি নিউজ ডেস্ক
  • খবর আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪
  • ৭০ এই পর্যন্ত দেখেছেন

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশবাসী তাদের পক্ষে রয়েছে, কাজেই তাঁর সরকারের পতন ঘটানো এবং দেশকে আবার অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা (বিএনপি-জামায়াত) আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার স্বপ্ন দেখছে। তারা কীভাবে ভুলে যায় যে, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের পাশে থাকে। যার জন্য জনগণ তাদের বারবার ভোট দেয়। সোমবার (১৮ মার্চ) জাতির পিতার ‘১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষ্যে তেঁজগাওস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং  উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম এর সঞ্চালনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি রমজান মাসে গরিব মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণ না করে সরকারের সমালোচনা করে। নিজেরা ইফতার খায়, আর আওয়ামী লীগের গীবত গায়। আর কবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করবে সেটাই দেখে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং এর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ইফতার পার্টি না করে সারাদেশে গরিবদের মাঝে ইফতার বিতরণ করছে। দেশবাসী ও আওয়ামী লীগকে বার বার সমর্থন করেছে। কারণ তারা তাদের প্রয়োজনে আওয়ামী লীগকে সবসময় পাশে পেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই রমজান মাসে আমি সবাইকে বলব আপনাদের আশপাশে যারা দরিদ্র সাধারণ মানুষ রয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়ান এবং তাদেরকে সহযোগিতা করুন। আমরা যেমন ইফতার বন্টন করছি তাদেরকে সহযোগিতা করছি আপনাদেরকেও সেটা করতে হবে।’ তিনি সংযমের এই মাসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে মূল্যস্ফীতিতে দেশের সাধারণ জনগণেরর পাশে না দাঁড়ানোয় বিএনপি’র রাজনীতির সমালোচনা করে বলেন, তারা ইফতার পার্টি করে করুক, কিন্তু আপনারা দেখাবেন যে মানুষের পাশে আছেন। ‘আর এই কারণেই তো মানুষ আমাদেরকে ভোট দেয়। বাংলাদেশের মানুষ যে বারবার আমাদেরকে ভোট দেয় সেটাতো এই কারণেই,’ যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রসঙ্গে বলেন, এখন এই দাবির পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। তারা কোন সাহসে সেটা চায় কারণ, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারই ছিল। খালেদা জিয়াও সুস্থ ছিলেন, যদিও রাজনীতি করবে না বলে তারেক রহমান মুছলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে হাওয়া ভবনের খাওয়া খেয়ে লন্ডনে তো তখন তারও রমরমা অবস্থা। কিন্তু সে সময়েও তারা আসন পেয়েছিল ৩০টি, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩৩টি আসন। এটাও তো তাদের মনে রাখা উচিত। কাজেই কীসের আশায় তারা চায়, বুঝতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এদেশের গরীবের পেটে ভাত থাকে, গরীবের মাথা গোজার ঠাঁই হয়।’
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। কোন মানুষ ভূমিহীন-গৃহহীন যে থাকবে না আমরা সেটারই বাস্তবায়ন আমরা ঘটিয়ে যাচ্ছি, আর সেটাই ওদের সহ্য হয় না। সাধারণ মানুষ, গরীব মানুষ ভালো থাকলে সেটা তাদের পছন্দ হয় না।

তিনি বলেন, ‘কাজেই তারা যে চায় সেটা ইলেকশনের জন্য নয়, বাংলাদেশকে আবার অন্ধকার যুগে ঠেলে দেওয়ার জন্য। কাজেই এই দেশকে আর কখনো অন্ধকার যুগে ফেলে দিতে পারবে না। কারণ, এটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশ। মুজিব জন্মগ্রহণ করেছেন এই দেশের দু:খী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আর তাঁর আদর্শ ধারণ করেই আমরা সেটা করে যাব ইনশাআল্লাহ।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি এবং শেখ বজলুর রহমান ও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।

একুশে পদক বিজয়ী আবৃত্তি শিল্পী রূপা চক্রবর্তী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত  ‘কারাগারের রোজনামচা’ থেকে তাঁর ৪৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন নিয়ে লেখার কিছু লাইন এবং বিশিষ্ট কবি সৈয়দ শামসুল হকের ‘আমার পরিচয়’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে রাস্তাঘাটে হাড্ডি কঙ্কালসার মানুষ দেখা যেত কিন্তু আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরে টানা চার মেয়াদে দেশ পরিচালনার সুযোগে এখন আর সে অবস্থা নেই। যেখানে মানুষের পরিধেয় বস্ত্রের ঠিক ছিল না সেখানে এখন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান সহ সকল প্রকার মৌলিক এবং নাগরিক সুবিধাগুলো তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক এর মাধ্যমে হাতের নাগালে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে মানুষকে বিনামূল্যে ৩০ প্রকারের ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে। কাজেই আমরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করি এবং সেই ভাগ্য পরিবর্তন একেবারে গ্রাম পর্যায়ের মানুষ পর্যন্ত।

তিনি বলেন, ধন-দৌলত-সম্পদ কেউ কবরে নিয়ে যেতে পারে না। কাজেই এর জন্য মারামারি কাটাকাটি কেন? এগুলোতো ফেলে রেখেই চলে যেতে হয়। কাজেই এগুলো যতটা মানুষকে দিয়ে দেওয়া যায় এবং মানুষের কল্যাণ করা যায় সেটুকুই সাথে থাকে। এটাই সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, আওয়ামী লীগের অপরাধ কি, তারা গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ায়? দেশটা আজ উন্নত করেছে সেটাই কি অপরাধ? বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে, অথচ আমরাই কিন্তু গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। কেননা  জাতির পিতাকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারি সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে ঐ দলের সৃষ্টি। কোন গণতান্ত্রিক ধারায় নয়। কাজেই তারা না গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে না, গণতন্ত্র বানান করতে জানে!

তিনি বলেন,  দেশে এবং নিজ দলের ভেতর গণতন্ত্র চর্চা করে আওয়ামী লীগ। অথচ তারা তোতা পাখির মত বলেই যাচ্ছে, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে।  আজকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বলেই তারা এত কথা বলতে পারে। যদিও মিডিয়ার বিভিন্ন টক শো’তে ঢালাও সমালোচনার পর এটাও বলা হয় যে, তাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ দেশের মানুষ যদি কিছু পেয়ে থাকে, তা আওয়ামী লীগের হাত থেকেই পেয়েছে। স্বাধীনতা পেয়েছে, গণতন্ত্র পেয়েছে, গণতান্ত্রিক অধিকার পেয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। তিনি এ সময় ‘মুজিব একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি সবাইকে দেখার পরামর্শ দিয়ে বলেন স্বল্প পরিসরে হলেও এতে দেশমাতৃকার প্রতি তাঁর প্রগাঢ় ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগের নিদর্শন রয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, এত বড় জীবনটাকে স্বল্প জায়গায় আনা খুব কষ্টকর, কিন্তু তারপরেও এটা একটা ডকুমেন্ট হয়েছে।  এই সিনেমাটা দেখলে মানুষ চোখের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সংগ্রামের কিছু চিত্র দেখতে পারবে। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে জাতির পিতা রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা রিপোর্ট নিয়ে রচিত ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ সিরিজের বইগুলো পড়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন যা তাদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হয়েছিল বলেই আজ দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই আজকে দেশের সাধারণ মানুষ উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে পারছে। জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ গড়ে তুলে আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দিয়ে যান, সেখান থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। ইনশাআল্লাহ ২০৪১ নাগাদ জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব, আজকের দিনে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।

সুত্রঃ বাসস

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102