প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আওয়ামীলীগ সরকার শিক্ষা খাতসহ অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি খাতে আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) তৈরি ও ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস এবং বিগ-ডাটা সমন্বিত ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ সরকার দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
শুক্রবার (১৫ মার্চ) ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আজ দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে শেখ হাসিনা বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল ভোক্তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি, ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করি’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন স্থাপন করেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়। জাতির পিতার হাত ধরেই রচিত হয় একটি আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশের ভিত্তি। জাতির পিতার দেখানো পথ ধরেই আওয়ামী লীগ সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তোলে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের অগ্রযাত্রায় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। প্রণয়ন করা হয়েছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন’ ২০৪১, যেখানে ‘স্মার্ট নাগরিক’, ‘স্মার্ট সরকার’ ‘স্মার্ট অর্থনীতি’ এবং ‘স্মার্ট সমাজ’- এই চারটি মূল ভিত্তির উপর গড়ে উঠবে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ ও ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজ প্রতিরোধে ২০০৯ সালে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’ প্রণয়ন করে। আইনটি প্রণয়নের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা ভোক্তা অধিকারের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বচ্ছ ও নিরাপদ ব্যবহার ভোক্তা অধিকার সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য। ভোক্তা অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর প্রচার ও প্রচারণার ফলে জনগণ তথা ভোক্তা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে। ফলে ভোক্তার অধিকার আদায়ে অভিযোগের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ সফলভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেনাকাটা, ব্যবসা-বাণিজ্য, আর্থিক লেনদেন এখন অনেক কিছুই ডিজিটাল বা অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে এবং প্রতিদিন এ খাতে ভোক্তাদের ঝুঁকির নতুন নতুন মাত্রা যুক্ত হচ্ছে। তাই অনলাইন কেনাকাটা বা আর্থিক লেনদেন যেন স্বচ্ছ হয়, এখানে যেন কোনো ধরনের প্রতারণা বা অনিয়ম না হয় এবং গ্রাহকরা যেন তাদের ন্যায্য অধিকার পান, সে বিষয়ে সকল ব্যবসায়ী ও ভোক্তা প্রত্যেকেই নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি দায়িত্বশীল হতে হবে।
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, আইনের সঠিক প্রয়োগের পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান, উৎপাদক, বিক্রেতা ও সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে নিষ্ঠার সঙ্গে যথাযথ ভূমিকা রাখবে।
তিনি ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
সুত্রঃ বাসস