সরকার অসুস্থ্য খালেদা জিয়াকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেবে এমনটাই প্রত্যাশা বিএনপির।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা আশা করি খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে পাঠানোর জন্য যে ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে, এই অবৈধ সরকার অবৈধ হলেও তারা তাকে বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেবে।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে এক ‘মহিলা সমাবেশে’ খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে পাঠানোর একটি আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রদানের প্রেক্ষাপটে বিএনপি মহাসচিব এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে ‘সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে বিকালে এই মহিলা সমাবেশ’ হয়। সারাদেশ থেকে মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেয়।
দেশের দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, চাল-ডাল-লবণ প্রত্যেকটি জিনিসের দাম যেভাবে বেড়েছে তা কমাতে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আজকেও পত্রিকায় আছে সরকার জিনিসপত্রের দাম বেধে দিয়েছে কিন্তু কেউ সেই দামের কথা মানছে না। আজকে তারা জোর করে আবার ক্ষমতায় থাকতে চায়। আপনারা কি সেটা দেবেন? মা-বোনদের কাছে জানতে চাই, ওদেরকে আবার ক্ষমতায় আসতে দেবেন না কী।
বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার অবদানের কথা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া তিনি সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটক রেখে, এখন গৃহবন্দি রেখে অসুস্থ্য অবস্থায় মৃত্যুর তাকে দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ সরকার জানে, খালেদা জিয়া তিনি বাইরে থাকলে তার পক্ষে জনগণের যে স্রোত তা বন্ধ করতে পারবে না এবং তাদের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
এই সরকারের আমলে গণতন্ত্রের জন্য মিছিল মিটিং অংশ নিতে গিয়ে মহিলা দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সরকারের হাতে মানুষের নিরাপত্তা নাই, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়, বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নাই।
ফখরুল অভিযোগ করেন, এই আওয়ামী লীগ তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এতো বেশি অহংকারী হয়ে উঠেছেন, এতোবেশি প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়েছে যে, দেশের মানুষের অবস্থা চিন্তা করছেন না। সেই কারণে আজকে এককভাবে সমগ্র দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলো বলছে যে আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। তখন সেটা তিনি উড়িয়ে দিয়ে আবারো সেই পুরনো কথা সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে। এই সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না।
তিনি বলেন, এই সরকার যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে মহিলাসহ কোনো মানুষেরই কোনো নিরাপত্তা থাকবে না, আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে হারাবো, আমাদের সার্বভৌমত্বকে হারাব, আমাদের গণতন্ত্র চিরতরে চলে যাবে, আমাদের কোনো অধিকার আর থাকবে না। তাই আসুন আগামী দিনগুলোতে আমরা নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঐক্য গড়ে তুলি, সেই ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা সরকারকে বাধ্য করব পদত্যাগ করতে। এটাই রাজনৈতিক সমাধানে একমাত্র পথ।
মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আফরোজা খানম রীতা, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মহিলা দলের নাজমুন নাহার বেবী, নেওয়াজ হালিমা আরলি, ইয়াসমীন আরা হক, হেলেন জেরিন খান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
নিউজ /এমএসএম