বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রিকগনেশন অফ বাংলা এ্যাজ এন অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ইউনাইটেড নেশনস-এর কনফারেন্সে অনুষ্ঠিত মনোয়ারুল ইসলাম সভাপতি ও মমিনুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হাকিকুল ইসলাম খোকন সভাপতি ও হেলাল মাহমুদ সাধারণ সম্পাদক পূণঃ নির্বাচিত সাংবাদিক তমাল ফেরদৌস দুলাল স্মরণে সভা অনুষ্ঠিত এস এ পরিবহন থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্যসহ আটক ১ রবি’র ব্র‍্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন ফুটবলার হামজা চৌধুরী পঞ্চগড়ে হিমেল হাওয়ায় শীতের পুর্বাভাস পঞ্চগড়ের নতুন জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান ছাত্রকে বলাৎকারের দায়ে মাদ্রাসার শিক্ষক গ্রেফতার যুক্তরাজ্যে ঢাকাদক্ষিণ ভিলেজ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকার উপায়

ইসলাম ডেস্ক
  • খবর আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৩৯ এই পর্যন্ত দেখেছেন

অধিক লাভের আশায় মানুষ লোভ করে থাকে। তবে লোভ-লালসার কারণে প্রাপ্তির থেকে হারানোর তালিকাই দীর্ঘ হয়ে থাকে। মানুষকে বিপদের মুখোমুখি করে লোভ। লোভের কারণে মানুষ এমন সব সমস্যার সম্মুখীন হয় যার কোনও ক্ষতি পূরণ হয় না। তাই লোভ থেকে দূরে থাকতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘যারা লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকে তারাই সফলকাম।’ (সূরা হাশর, আয়াত, ৯)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকো, কেননা এ জিনিসই তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করেছে এবং পরস্পরকে রক্তপাত ঘটানোর ব্যাপারে উসকিয়ে দিয়েছে। লোভ-লালসার কারণেই তারা হারামকে হালাল সাব্যস্ত করেছে।’ (মুসলিম)।

অল্পে তুষ্টি

লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকার অন্যতম পদ্ধতি হতে পারে অল্পে তুষ্টি। অল্পে তুষ্টির গুণ অর্জন করতে পারলে মানুষ নিজের যতটুকু সম্বল রয়েছে, এতেই সন্তুষ্ট ও তৃপ্তি খোঁজার চেষ্টা করেন। অধিক প্রাপ্তি অথবা কোনও কিছু না পাওয়ার না থাকার গ্লানি তাকে ছুঁতে পারে না।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে ভুলিয়ে রেখেছে।’ (সূরা আত-তাকাসুর : ১)

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তির জীবনে আখিরাত অর্জন করাই  বড় উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার অন্তরকে অভাব মুক্ত করে দেন। তার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার সম্পদকে সহজ করে দেন। আর দুনিয়া তার কাছে অপমান অপদস্থ হয়ে আসতে থাকে। আর যে ব্যক্তির জীবনে দুনিয়া অর্জন করাই বড় উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দরিদ্রতা ও অভাব তার চোখের সামনে তুলে ধরেন এবং তার ওপর বিশৃঙ্খলা চাপিয়ে দেন। সে যতই চেষ্টা করুক না কেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার ভাগ্যে যতটুকু দুনিয়া লিপিবদ্ধ করেছেন, তার বাইরে সে দুনিয়া হাসিল করতে পারবে না।’ (তিরমিজি)

আল্লাহর ভয় এবং তাকওয়া

লোভ-লালসা থেকে মুক্ত থাকার আরেকটি উপায় হলো আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করা এবং তাকওয়া অবলম্বন করা। কেউ আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন জীবন দান করবেন এমনভাবে রিজিক দেবেন, এতে তার আর কোনও টেনশন ভয় থাকবে না। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘কেউ যদি আল্লাহকে ভয় করে তাহলে তিনি তার জন্যে কোনো পথ তৈরি করে দেবেন এবং তাকে তিনি এমন স্থান থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না। -(সূরা তালাক (৬৫), আয়াত, ২-৩)

অন্য আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘ যে ব্যক্তি মর্যাদা লাভ করতে চায়, (সে জেনে রাখুক-) সমস্ত মর্যাদা আল্লাহরই হাতে। -(সূরা ফাতির, (৩৫), আয়াত, ১০)

হিসাব দিবসে আল্লাহর কাছে জবাবদিহীতার ভয়

পৃথিবীতে মানুষ যা কিছুই করে, আল্লাহ তায়ালার কাছে এসবের জবাবদিহীতা করতে হবে, এই বিশ্বাস অন্তরে রাখতে হবে। হিসাব দিবসের কথা সবসময় অন্তরে থাকলে মানুষের উচ্চাকাঙ্খা কমে যাবে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, কিয়ামতের দিন আদম সন্তানকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এক কদমও নিজের জায়গা থেকে সামনে নড়তে দেওয়া হবে না। তা হলো- ১) তার জীবনকাল কিভাবে অতিবাহিত করেছে, ২) যৌবনের সময়টা কিভাবে ব্যয় করেছে, ৩) ধন সম্পদ কিভাবে উপার্জন করেছে, ৪) এবং তা কিভাবে ব্যয় করেছে, ৫) সে দ্বীনের (ইসলাম) যতটুকু জ্ঞান অর্জন করেছে সেই অনুযায়ী আমল করেছে কিনা বা কতটুকু করেছে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১৬)

দুনিয়ার অসারতা

যেই পৃথিবীতে মানুষ বর্তমানে বসবাস করছে, যেই জীবন নিয়ে উচ্চাকাঙ্খা দেখছে, তা একদিন শেষ হয়ে যাবে। মালাকুল মাউত এসে উপস্থিত হলেই রঙরসে ভরপূর পৃথিবীর সফর শেষ হবে। এই কথা সবসময় মনে রাখতে হবে।

হজরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমাকে বললেন, আমি তোমাকে দুনিয়া ও দুনিয়াস্থিত বস্তুসমূহ দেখাব। আমি আরয করলাম, খুব ভাল কথা। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরে মদীনার একটি জঙ্গলে গেলেন। জঙ্গলের এক জায়গায় মৃত মানুষের মাথার খুলি, মল, হাড়গোড় ও ছিন্নবস্ত্র ছিল। তিনি বললেন, হে আবু হুরায়রা, এসব খুলি তেমনি আকাঙ্খা করত, যেমন তুমি কর এবং তেমনি আশা করত, যেমন তুমি কর; কিন্তু আজ এমন হয়ে গেছে যে, এগুলোর উপর চামড়া পর্যন্ত নেই। কিছুদিনের মধ্যেই এগুলো ভস্ম হয়ে যাবে। এই যে মল দেখছ, এগুলো তাদের খাদ্য ছিল। খোদা জানে কোথা থেকে উপার্জন করে খেয়েছিল। আজ এমন হয়ে গেছে যে, তোমার ঘৃণা হয়। আর এই ছিন্নবস্ত্র ছিল তাদের পোশাক। বায়ু একে এদিক থেকে ওদিকে উড়িয়ে ফিরে। আর এই হাড়গুলো তাদের চতুষ্পদ জন্তুর, যেগুলোর পিঠে চড়ে তারা এক শহর থেকে অন্য শহরে যেত। ক্ষণভঙ্গুর দুনিয়ার যখন এই পরিণতি, তখন এটা শিক্ষা গ্রহণেরই স্থান। (এহইয়াউ উলুমিদ্দীন)

নিউজ /এমএসএম

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102