নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বৈকুন্ঠপুরে ৩ জনকে বেঁধে রেখে কয়েকটি দোকানের তালা কেটে ডাকাতির ঘটনায় ৭ ডাকাতকে গ্রেফতার এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, সিএনজি এবং লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। ডাকাতির পরে গত ৫ দিনে নওগাঁ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করা হয়।
গত ১০ আগষ্ট (বৃস্পতিবার) রাত্রিতে বৈকুন্ঠপুর বাজারে ২ জন নৈশ্য প্রহরীসহ ৩ জনকে বেঁধে রেখে কয়েকটি দোকানের তালা কেটে কীটনাশক, মনোহারী সামগ্রী ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন মালামাল লুন্ঠন করে ডাকাতরা। এ ঘটনায় বদলগাছী থানায় মামলা দায়ের করেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক। মামলা দায়েরের পর পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ গাজিউর রহমানকে মামলাটি ডিটেকশনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ গাজিউর রহমান, পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহাদেবপুর সার্কেল জয়ব্রত পাল, অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান মামলার ঘটনাস্থল পরির্দশন করে সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ডাকাতদের সনাক্তের পর তাদের অবস্থান সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহপূর্বক ডাকাতদের চিহ্নিত করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ গাজিউর রহমান পিপিএম এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার, ডিবি ইনচার্জ মোঃ হাশমত আলী, এসআই (নিরস্ত্র) বদরুদ্দোজা জিমেল এবং বদলগাছী থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত পুলিশের একটি টিম গত ৫ দিন নওগাঁ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির সাথে যুক্ত মোট ৭জন ডাকাতকে গ্রেফতার করে এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, সিএনজি এবং লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ১০ আগষ্ট দুপুরে আসামী মোঃ নান্টু (৪৫), পিতা-মোঃ আব্দুল জলিল, গ্রাম চকপ্রাচী, নওগাঁ। মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে নওগাঁ সদর থানার তিলকপুর ইউনিয়ন এলাকায় রাত্রি বেলা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হাজির হওয়ার জন্য বলে। পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী মোঃ ওয়াজ কূরনী (৩৭), পিতা-মোঃ ওসমান সরদার, গ্রাম বলরাম চক (চৌধুরীপাড়া), থানা-আত্রাই, জেলা-নওগাঁ নিজস্ব সিএনজি নিয়ে তিলকপুর ইউনিয়ের ভবানীপুর গ্রামে যায়। সেখান থেকে অপরাধীদের নিয়ে বদলগাছী থানার বৈকন্ঠপুর বাজারের উদ্দ্যেশ্যে রওনা করে। ১১ আগষ্ট রাত ০৩:০০টায় অপরাধীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন বৈকণ্ঠপুর বাজারে গিয়ে ২ জন নৈশ্য প্রহরীসহ মোট ৩ জনকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ঘটনাস্থল হতে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে মরিচ ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে কাঁচা পাট ও কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখে। প্রায় ১ ঘন্টা ব্যাপি কয়েকটি দোকানের তালা কেটে মালামাল লুণ্ঠন করে সিএনজি যোগে তারা পালিয়ে যায়।
মামলার ঘটনার সাথে জড়িত মোট ৮ জন ডাকাতের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার এবং লুন্ঠিত কীটনাশক ও মনোহারী সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। আসামী রবিউল বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামি গ্রেফতারের এবং বাকি মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।