আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায়, আওয়ামী লীগ সরকার তা নিশ্চিত করেছে।
আজ শুক্রবার সকালে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু স্মারক স্তম্ভ’ উদ্বোধন শেষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে দেশে আইন বিষয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আইন পেশায় বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে আইন বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আইন বিশ্ববিদ্যালয় করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। এখানে আইনমন্ত্রী আছেন, আমি বলব, এ বিষয়ে দ্রুত কাজ করা দরকার। এটি আমরা করে দেব।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উঠে এসেছে। সে জন্য তারা (আইন পেশার মানুষ) যেন দক্ষ হয়ে উঠতে পারে, বিশ্বমানের সেবা দিতে পারে সে জন্য আমরা আইন বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব, কথা দিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইনজীবী ভবনও করে দিতে পারব, কিন্তু এখনই নয়। তবে আবার সরকারে এলে এটি করে দেব। এ মুহূর্তে সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা। প্রতিটি ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হচ্ছি, মিতব্যয়ী হচ্ছি। তার পরও মানুষের চাহিদা পূরণ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চম সংশোধনীর রায় দিয়ে বিচারকরা গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ায় জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর হত্যার রায়, যুদ্ধাপরাধীদের রায়, পঞ্চম সংশোধনীর রায়, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় এবং অবৈধ দখলদার যেন ক্ষমতায় আসতে না পারেন সেজন্য আপনারা রায় দিয়েছেন সেজন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা হিসেবে এটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আপনারা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে এ স্মারক স্তম্ভ করেছেন। আজকে আমাকে এখানে আমন্ত্রণ করেছেন। পরবর্তী প্রজন্ম এ থেকে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস জানবে।
অনুষ্ঠানে সরকারের একাধিক মন্ত্রী, প্রধান বিচারপতিসহ আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সাবেক বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকসৌধ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
১৯৭২ সালে সুপ্রিম কোর্ট উদ্বোধনের দিন জাতির পিতা যে স্থানে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন সে স্থানটি স্মরণীয় করে রাখতে এ স্মারকসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। স্তম্ভটির নির্মাণকাজ শেষ করে কারুকাজ ও রং করে উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।
স্মারকসৌধে সংবিধানে স্বাক্ষররত এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বক্তৃতারত জাতির পিতার স্থিরচিত্র মুর্যাল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৬৯ জন আইনজীবীর নামের তালিকাও।
নিউজ /এমএসএম