মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে জমে থাকা পানিতে দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া সারা বছর ধরে জমে থাকা পানির কারণে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-মৌলভীবাজার সড়কটিতে।
দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা শ্রীমঙ্গলে নেই কোনো স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড। গত প্রায় ২০ বছর ধরে শহরতলীর হবিগঞ্জ সড়কে র্যাব ও পাওয়া গ্রিড অফিসের পাশে গড়ে ওঠে অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড। যেখান থেকে হবিগঞ্জ, সিলেট ও ঢাকাসহ দূরপাল্পার যানবাহনের যাত্রী ওঠা-নামা করানো হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই স্ট্যান্ডের দুই পাশে স্থাপনা হয়ে যাওয়ার কারণে রাস্তায় পানি জমে থাকে। সেখানকার ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা একটি অস্থায়ী ড্রেন নির্মাণ করে। কিন্তু এর শেষ সীমানায় পানি যাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় দোকানপাট ও বাসাবাড়ির ময়লা পানিও ওই রাস্তায় জমে। ফলে চরম ভুগান্তিতে ফেলেছে শ্রীমঙ্গল থেকে চলাচল করা যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।
জমানো পানি এড়াতে গিয়ে গাড়ির নিচে চাপা পড়ে সম্প্রতি প্রাণ হারিয়েছেন এক যুবকও। নিহত যুবক সুমন রায় সন্ধানী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
ওই এলাকার দেবব্রত দত্ত হাবুল বলেন, সুমন মারা যাওয়ায় তার পরিবারটি এখন নিঃস্ব। সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচিৎ ছিল তার পরিবারকে কিছু সহায়তা দেওয়া। বছরের পর বছর ধরে এই রাস্তাটিকে অবহেলায় ফেলে রাখার কারণে সুমনের এই দুর্ঘটনা।
শ্রীমঙ্গল-হবিগঞ্জ বিরতিহীন পরিবহনের ম্যানেজার কামরুল হাসান দুলন বলেন, আমাদের ভুগান্তির শেষ নেই। গাড়ি না চাপাতে পারলে জুতা পড়ে কোনো যাত্রী গাড়িতে উঠতে পারেন। তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলে আগত পর্যটকরা যাওয়ার সময় এই দূরাবস্থার জন্য গালিগালাজ করে যান।
স্থানীয় মো. ছায়েদ আলী বলেন, “সরকার দেশে এতো উন্নয়ন করছে কিন্তু এই জায়গাটির উন্নয়নে কেন এতো অনিহা? প্রতিদিন শত শত মুসল্লি এই রাস্তা দিয়ে নামাজ পড়তে মসজিদে যান। রাস্তার ময়লা পানি অপসারণ করা জরুরি।”
শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় বলেন, এখানে দীর্ঘ ড্রেন করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদ্যসের ডিও লেটার নিয়ে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথে জমা দেওয়া হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন জানান, সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনি ওই স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। পানি নিষ্কাশনে শিগগিরই কিছু একটা করা হবে।
মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, “সেখানকার বাসা-বাড়ির পানি রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে পানি জমে থাকে।
“স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিওসহ একটি প্রকল্প তৈরি করে ঊধর্্বতন কর্তপক্ষের কাছে পাঠায়। তবে এটি অনুমোদন হতে একটু বিলম্ব হতে পারে। তাই কাছাকাছি সময়ে বাসস্ট্যান্ড থেকে বুড়বুড়িয়া ছড়ায় একটি ড্রেন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।
নিউজ /এমএসএম