সৌদিআরবে নির্যাতনের শিকার হয়ে ভিডিও বার্তায় বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন হবিগঞ্জ চুনারুঘাটের গৃহবধু আমিনা বেগম। তিনি উপজেলার টিলাবাড়ি গ্রামের মিশন মিয়ার স্ত্রী।
সম্প্রতি, একটি ভিডিও বার্তায় ওই গৃহবধুকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে কান্না জড়িত কণ্ঠে দেশে ফিরতে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন। কয়েকদিন ধরে ভিডিও বার্তাটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
প্রায় ৫ মাস ধরে আমিনার সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না তার স্বামী মিশনসহ পরিবারের লোকজন। সে সৌদি আরবে নিখোঁজ থাকায় পরিবারের লোকজনের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
জানা যায়, প্রায় ৭ মাস পূর্বে স্থানীয় দালাল শাহিন মিয়ার মাধ্যমে সৌদি আরবে যান টিলাবাড়ি গ্রামের মিশন মিয়ার স্ত্রী আমিনা খাতুন। সেখানে পৌছার এক মাস পর তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে স্বামী মিশন মিয়ার ইমু নাম্বারে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান আমিনা। ভিডিও বার্তায় আমিনা তার ঠোটে নির্যাতনের চিহ্ন দেখান। এরপর থেকে মাঝে মধ্যে ফোন করে পরিবারের লোকজনের সাথে কান্নাজড়িত কন্ঠে কথা বলতেন আমিনা। ফোন করেই তাকে দেশে ফেরাতে আকুতি করতেন বলে জানান তার স্বামী মিশন মিয়া।
এদিকে, সৌদি আরবে নির্যাতিত আমিনার ভিডিও বার্তাটি কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও বার্তায় দেখা যায়, আমিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছেন, ‘দালাল শাহিন আমারে আইন্না বড় একটা বিপদে পালাইছে। আমারে মারধর করে, খানি-বানি দেয় না। আমার ঠোটে ঘুসি মারছে। আমি লোকাইয়া একটা ফিলিপাইন মেয়ের কাছ থেকে মোবাইল আইন্না আমি ভিডিও করতাছি। আপনাদের কাছে ছাড়লাম। আপনারা তারাতাড়ি আমারে বাঁচাইয়া নেন। প্রশাসন, পুলিশ হাসিনা সরকারের কানে দিয়ে আমারে বাঁচাইয়া নেন এখান থেকে। আমি বিপদে আছি, আতংকে আছি। বাঁচমু কিনা জানি না।
আমারে খুব মারধর করতাছে, আমি সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাই। আমারে খুব মারধর করতাছে দেখাইবার মত না। আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা চাইলাম’। তবে ভিডিও বার্তা দেয়ার পর প্রায় দুই মাস পর্যন্ত আমিনা পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে। প্রায় ৫ মাস ধরে আমিনা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছে না। বর্তমানে সে সৌদি আরবে নিখোঁজ রয়েছে। এতে করে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
গৃহবধুর স্বামী মিশন মিয়া বলেন, ‘প্রায় ৫ মাস ধরে সৌদি আরবে নির্যাতিত স্ত্রী আমিনার সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি। আমিনা সৌদি আরবে নিখোঁজ রয়েছে। এতে তিনি টেনশন ও হতাশায় রয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি দালাল শাহিনকে আসামী করে আদালতে একটি মানব পাচার আইনে মামলা দিয়েছেন। মামলাটি তদন্ত হয়েছে’।