পাহাড়ি মানুষ ও দেশ-বিদেশের পর্যটকদের যাতায়াত ব্যবস্থাকে অনেক সহজ ও নিরাপদ করে দিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। পাহাড়-সমতল সব জায়গায় সমান তালে উন্নয়নের জয়যাত্রা। দুর্গম পাহাড়ের মানুষ এখন অবলীলায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্বল্প সময়ের মধ্যে যানবাহনের মাধ্যমে যাতায়াত করতে পারছে। এসবকিছু কল্যাণকর কাজের দাবীদার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৭ জুন) বান্দরবানে সাড়ে আট কিলোমিটার পাকা সড়ক উদ্বোধন এবং রেইচা বাজার এলাকায় গ্রামিণ বাজার উদ্বোধন শেষে বান্দরবানের রেইচা বাজারে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি আজ বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ের কোলঘেষা সাড়ে আট কিলোমিটার নির্মিত নতুন রাস্তার উদ্বোধন করেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর তত্ত্বাবধানে ৭ কোটি ৭৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ব্যয়ে পাকা সড়কটি নির্মাণ করা হয়। বান্দরবান সদরের কেবি রোড থেকে কানাপাড়া পর্যন্ত সাড়ে আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি এখন স্থানীয় এলাকাবাসী ও পর্যটকদের কাছে বহুপ্রতিক্ষিত দ্রুত যাতায়াতের পথকে অনেক সহজ করেছে।
এছাড়া মন্ত্রী একই দিনে বান্দরবানের রেইচা বাজার এলাকায় ৩ কোটি ৮২ লাখ ২৯ হাজার টাকা ব্যয়ে চতুর্থ তলা ফাউন্ডেশনের ২য় তলা বিশিষ্ট রেইচা গ্রামিণ বাজারের উদ্বোধন করেন।
মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি দেশের সার্বিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, পুর্বে তিন পার্বত্য জেলার মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল দুর্গম এলাকাগুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের অশান্তি দুর করে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। শেখ হাসিনা পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
তিনি বলেন, একসময় বান্দরবান জেলা শহরের দুর্গম থানচি এলাকায় যেতে আসতে ৩/৪ দিন সময় লেগে যেতো। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে এখন অনায়াসে এক দিনের মধ্যেই থানচিতে যাওয়া আসা করা যায়। তিনি বলেন, দুর্গম পার্বত্য এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করে জন ও যান-চলাচলের পথকে অধিকতর সহজ করে দিয়েছে এই আওয়ামী লীগ সরকার।
মন্ত্রী বলেন, কৃষকরা এখন তাদের উৎপাদিত ফলন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নির্বিঘ্নে বহন করতে পারছেন। সরকার কৃষকদের ফসল বাজারজাতকরণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গ্রামিণ বাজার সৃজন করে দিচ্ছে। যার ফলে কৃষকরা সেখানে সহজেই গ্রাহক পাচ্ছেন এবং তাদের ফলনের উপযুক্ত মূল্যও পাচ্ছেন। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে কৃষকদের উন্নতমানের বীজ, সার বিতরণ অব্যাহত রেখেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।
মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের কল্যাণে ব্রীজ, কালভার্ট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, বিহার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ অব্যাহতভাবে করে যাচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলের সকল কিছুর উন্নয়নের কৃতিত্বের একমাত্র দাবিদার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে মন্তব্য করেন পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর। আগামিতেও দেশের মানুষের কল্যাণে ও পাহাড়ের মানুষের শান্তির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দরকার আছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বান্দরবান সদরের সহকারী কমিশনার অরুপ কুমার সিংহ, অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার মোজাফফর হোসেন, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হক মজুমদারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।