আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য দেশের আইন ও পবিত্র আদালত অবমাননার শামিল।
বুধবার (৩১ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি। বিবৃতিতে সই করেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতির মামলায় ইতোপূর্বে বিএনপির দুই নেতাকে নিম্ন আদালতের দেয়া সাজা বহাল রেখে দেশের উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছে, সে সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে ‘ফরমায়েশি রায়’ বলে মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছে তা দেশের আইন ও পবিত্র আদালত অবমাননার শামিল। বিএনপির এই দুই নেতার আজকের পরিণতি তাদের ধারাবাহিক অপরাজনীতিরই ফসল।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনমালে হাওয়া ভবন খুলে তারা দুর্নীতি ও লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠেছিল, যার পরিণতিতে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সে সময় হাওয়া ভবনের কর্ণধার জিয়াপুত্র তারেক রহমানের দুর্নীতির খতিয়ান বিশ্ব গণমাধ্যম ও বিশ্বখ্যাত গোপন নথি প্রকাশকারী সংস্থা উইকিলিকসে বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির দুই নেতার দুর্নীতির মামলার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো যোগসূত্র নেই। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ও তাদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার পর নিম্ন আদালত শাস্তিমূলক রায় দেয়। প্রায় ১৬ বছর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে আদালত তাদের সাজা দিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের পবিত্র সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান, কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। যার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও আইন ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এমনকী বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড ও বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায়ও ছাত্রলীগের নেতারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভোগ করছেন।
সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিএনপিই বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছিল।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার মধ্য দিয়ে পবিত্র সংবিধানকে কলঙ্কিত করেন। মূলত জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু করে। অন্যদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিচারহীনতার সংস্কৃতির পরিবর্তে দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। বিএনপি দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে। দলের চিহ্নিত শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দিয়েছে। অনুরূপভাবে তারা বিজ্ঞ আদালতের রায়কে ‘ফরমায়েশি রায়’ বলে দেশের উচ্চ আদালত ও পবিত্র সংবিধানকে অবমাননা করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর বিএনপি তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে করুণা প্রাপ্তির আশায় সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। উচ্চ আদালতের রায়কে ফরমায়েশি বলা তাদের সেই চলমান ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এই ধরনের অপরাধের জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে তাদেরকে অচিরেই জবাবদিহি করতে হবে।
নিউজ /এমএসএম