হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে মোঃ ফয়েজ আহমদ নামের এক ব্যবসায়ী অপহরণের ৭ মাস অতিবাহিত হলেও তাকে এখনো উদ্ধার করতে পারেনি ডিবি পুলিশ। চরম হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন অপহৃত ব্যবসায়ীর পরিবারের লোকজন।
গতকাল(রবিবার) নিখোঁজ মামলার প্রধান আসামী জাকির হোসেন আদালতে হাজির হলে তাকে জামিন না-মঞ্জুর করে আদালত জেল হাজতে পাঠান। পরে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশ উক্ত আসামীর ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে। সোমবার রিমান্ড শুনানি হবে।
জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার ছেলে জিয়াপুর নতুন বাজার এলাকার হাসান হোসাইন ভ্যারাইটিজ স্টোর এর স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী মোঃ ফয়েজ আহমদ (২৩) কে সাথে নিয়ে তার বন্ধু একই এলাকার বাদে রায়ঘর গ্রামের আতা মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (২৮) গত ৩০ সেপ্টেম্বর (২০২২) শুক্রবার সন্ধ্যার সময় নিজ বাড়ী থেকে বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলি বাজারে আসামী জাকির হোসেন এর বোনের বাড়ীতে বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে যায়।
এরপর থেকেই ফয়েজ আহমেদ নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর থেকেই তার বন্ধু জাকির আত্বগোপন করে। সে মাঝে মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা বলে আবার ফোন বন্ধ করে দিতো।
এদিকে অপহৃত ব্যবসায়ী ফয়েজের মাতা খাদেজা বেগম তার ছেলে উদ্ধারের জন্য গত ২৪ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কগ-৫ আদালতে (মামলা নং জিআর ২১৫/২২ নবী,বিজ্ঞ আমল আদালত) ফয়েজের বন্ধু জাকির হোসেন সহ ৪-জনের নাম উল্লেখ করে গং ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে উক্ত মামলাটি আমলে নিয়ে এফ,আই,আর গন্যে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন নবীগঞ্জ থানা পুলিশ কে কিন্তু উক্ত মামলায় কোনো আসামী কে পুলিশ ধরতে ব্যর্থ হয়। মামলার বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে মামলাটি হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। ডিবি পুলিশও মামলার আসামীদের ধরতে ব্যর্থ হয়।
এদিকে দীর্ঘ দিন পলাতক থাকার পর গত বছরের ২৮ নভেম্বর মামলার ২নং আসামী বানিয়াচং থানার নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত মজর উল্লার পুত্র সামছুল হক (৩২) বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বেচ্ছায় হাজিরা দিলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। দীর্ঘ দেড় মাস জেল হাজতে থাকার পরে সে বিজ্ঞ আদালত হতে অস্থায়ী জামিনে মুক্তি পায়৷
এর পর ফয়েজ আহমেদ অপহরণ মামলার প্রধান আসামী ফয়েজের বন্ধু মোঃ জাকির হোসেন ৭মাস পর গতকাল রবিবার, স্বেচ্ছায় হাজিরা দিতে গেলে বিজ্ঞ বিচারক আসামীর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামীরা হলো নিকেশ বৈষ্ণব, পিতা- জগিন্দ্র বৈষ্ণব, সাং- কবিরপুর, উপজেলা- বানিয়াচং, জেলা-হবিগঞ্জ এবং নিখোঁজ ফয়েজের মুক্তিপণ দাবী করে ৪০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া অপহরণকারী যুবক দিনাজপুর জেলার বিরল থানার আখরপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের পুত্র মোঃ সুমন রানা (৩৫) সহ গং ৪ জন রয়েছেন৷
এবিষয়ে মামলার অপহৃত ফয়েজের মা খাদেজা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন আমার ছেলেকে জাকির তার আত্বীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবার কথা বলে মার্কুলি নিয়ে অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় আমার ছেলেকে অপহরন করে গুম করেছে। আমার ছেলে এখন কোথায় আছে জাকির হোসেন ভালো বলতে পারবে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা আসামী আদালতে হাজির হয়েছে জেনে সাথে সাথে আসামীকে ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছি। আজ রিমান্ড শোনানি হবে। আমরা আশাবাদী শিগ্রই মামমলার মুল রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।