সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০৩:১৩ অপরাহ্ন

যানজটের শহর নবীগঞ্জ! দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী

এম,এ আহমদ আজাদ
  • খবর আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৭৪ এই পর্যন্ত দেখেছেন

যানজটের শহরে পরিনত হয়ে গেছে নবীগঞ্জ। নবীগঞ্জ পৌর শহরে প্রতিদিনই যানজটের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী ও অসহায় মানুষজন। এদিকে নিয়মনীতি তোয়াক্কা করছেন না গাড়ীর মালিক-শ্রমিকরা। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কে যত্রতত্র স্থানে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে সিএনজি অটোরিক্সা, টমটম ও মিনি বাসের অবৈধ স্ট্যান্ড।

শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রধান সড়কের  উপর বড় বড় ট্রাক দাড় করিয়ে লোড, আনলোড করা হয় ধান-চালসহ বিভিন্ন পণ্য। রাস্তার উভয় পাশে দাড়িয়ে থাকে সিএনজি। এতে প্রতিদিনই লাগছে যানজট, এতেই বাড়ছে ভোগান্তি।কয়েক দফা ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযান হলেও আবারও ফুটপাতে দোকান পাট বসায় আবারও যানজট লেগেই আছে।

নবীগঞ্জ পৌর শহরে পানি নিস্কাশন ও ময়লা আবর্জনা পরিস্কারের সুষ্টু ব্যবস্থা না থাকায় অতি বৃষ্টির ফলে জমে থাকা আবর্জনার স্তুপ পচেঁ দুর্ঘন্ধের সৃষ্টি হয়। পৌর শহরের মধ্যে পানি নিষ্কাশনের কোনো সুষ্টু ব্যবস্থা নেই। যে সব ড্রেন নির্মান করা হয়েছে তা পানি নিস্কাশনের জন্য যথেষ্ট নয়। আর শহরের ভিতরের মুল সড়কে যত্রতত্র বাস ও সিএনজি দাড় করিয়ে যাত্রী উঠানামা করার ফলে যানজট লেগেই আছে। নির্ধারিত কাচামালের দোকানের জন্য ব্যবস্থা থাকলেও তারা সড়কের উপর দোকান পেতে ব্যবসা করছেন।প্রশাসনের লোকজন এসব দেখেও না দেখার ভান করছেন।

পানি নিস্কাশনের দুটি ড্রেন থাকলেও ড্রেন গুলোতে ময়লা আবর্জনায় ভরপুর হয়ে পানি নিষ্কাশনে বাধার সৃষ্টি করেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো শহরের মধ্যে পানি আর কাদা জমে যায়। ফলে শহরবাসীর স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়। ময়লা-আবর্জনা ফেলার কোনো স্থান নেই। সব ময়লা আবর্জনা ফেলা হয় থানার ডাকবাংলোর সামনের খালে ও সদর হাসপাতাল গেইটের সামনের খাল সহ যত্রতত্র স্থানে। ফলে এসব জন গুরুত্বপূর্ন স্থানে ময়লা ফেলায় দুর্গন্ধে জন সাধারন নাকে হাত দিয়ে চলাচল করেন।

শহরে তীব্র যানজটে অতিষ্ট শহরবাসী। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা, চাকুরীজীবি, কর্মজীবি ও পেশাজীবিসহ নাগরিকদের চরম ভোগান্তিও সৃষ্টি হচ্ছে এই যানজটের কারনে। উপজেলা প্রশাসন যানজট নিরসনে উদ্যোগী ভুমিকা নেয়ার জন্য একাধিকবার আইনশৃংখলা মিটিংয়ে পৌরসভাকে তাগিদ দেয়া সত্বেও পৌর কর্তৃপক্ষের নীরবতায় হতাশা দেখা দিয়েছে। সরকার দলীয় নেতাকর্মীরাও যানজটের কারনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তাদের দাবী, বিএনপির মেয়র হওয়ার কারনে, সরকারকে নিয়ে সাধারণ মানুষের বিরূপ মনোভাব তৈরী করার হীন উদ্দ্যেশেই মেয়র যানজট নিরসনের কোন উদ্যোগ গ্রহন করছেন না।

শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, থানার পয়েন্ট, ওসমানী রোড (উত্তরা ব্যংকের সামন), হাসপাতাল সড়কের খালিক মঞ্জিলের সামন, হাসপাতালের গেইটের নিকট, শেরপুর রোডের রাজা কমপ্লেক্সের সামন, শেরপুর রোডের বাংলা টাউনস্থ ইসলামী ব্যংকের সামন, রুদ্রগ্রাম রোডের সোনার খনি-ব্রীজ পর্যন্ত, এছাড়াও শহরের নতুন বাজার মোড়, প্রায় সময়ই প্রধান সড়কের উপর দাড়ানো থাকে সাড়ি সাড়ি ছোট বড় গাড়ী। এসময় পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে শহরে যানজটের কারন হলো এক শ্রেনীর ব্যবসায়ীরা নিজের স্বার্থের জন্য মালবাহী ট্রাক-ট্রাক্টর দিনদুপুরে রাস্তার উপর দাড় করিয়ে মালামাল লোড-আনলোড করিয়ে থাকেন। এতেও যানজট ব্যাপক ভাবে বেড়ে যায়।

এ ব্যাপারে আইন শৃংখলা কমিটির মিটিংয়ে শহরের যানজট নিরসনের জন্য একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি আজও। মাঝে মধ্যে অভিযান হয় কিন্তু অভিযান বন্ধ হলেই যে যার মতো করে রাস্তার উপর গাড়ি দাড় করিয়ে যানজটের সৃষ্টি করে। গত সোমবার আইন শৃংখলা কমিটির মিটিংয়ে যানজট নিরসনের জন্য পৌর কতৃপক্ষকে দায়ী করেন।

নবীগঞ্জ বাজার থেকে সরকার প্রতি বছর লাখ-লাখ টাকার রাজস্ব পেলেও দৈন্য দশার হয়না কোনো সমাধান। শহরের নতুন বাজার এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে কাচামালের বাজার। ফলে সড়কের পার্শ্বে কোনো জায়গা না থাকায় গাড়িগুলো সড়কের উপর দাড়িয়ে যাত্রী উঠা নামা করানোর কারণে লেগে থাকে যানজট। নবীগঞ্জ পৌর শহরের সালামত পুর নতুন বাস ষ্টেশন নির্মান হলেও ঐ বাস ষ্টেশন নামে আছে কাজে নেই।

কাচামাল ব্যবসায়ী মালিক মিয়া জানান, আমাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান করা হলে আমরা চলে গেলে সেখানে সারদিন বসে একশ টাকার বেশী বিক্রি হয় না। এখানে বসে অন্য কাচামাল ব্যবসায়ীরা ২/৩ হাজার টাকার বিক্রি করে থাকে। আমরা স্থায়ী জায়গা জায়গায় যেতে চাই না। ব্যবসায়ী মুশাহিদ আলী বলেন বাজারের যান সমস্যার সমাধান সহ চাই সার্বিক উন্নয়ন।

পৌর মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন, নবীগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে বাস ষ্টেশন, কাচা বাজার, ড্রেন নির্মান করা হয়েছে এবং অচিরেই এর স্থায়ী সমাধান করার চেষ্টা চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন শহরে ময়লা আবর্জনা ফেলা ঠিক নয়। আমরা ডাক বাংলোর সামনে একটি নদীতে ময়লা ফেলছি। ময়লা ফেলার জন্য ও শহরের পরিষ্কার করার জন্য আলাদা কমিঠি গঠন করা হয়েছে।

পৌরসভার মেয়র বলেন. আমরা যানজট নিরসনের জন্য সর্বাত্তক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কয়েক দফা ফুটপাতে অভিযান চালিয়ে দোকানপাট উচ্ছেদ করলেও উচ্ছেদের পরপরই তারা আবারও জায়গায় চলে আসে। এখন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এসব ফুটপাতের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ করতে হবে। কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ শহরে মোতায়েন করা হলে যানজট নিরসন হবে বলে মনে করি। আমরা বিষয়টি নিয়ে আইন শৃংখলা কমিটির সাথে আলোচনা করবো।

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102