বিনোদন ডেস্ক: অবশেষে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌসের মান-অভিমান ভাঙল। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) তাদের মধ্যকার চলমান দ্বন্দ্বের অবসান ঘটায় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। সংগঠনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের হস্তক্ষেপে এই বিরোধের মীমাংসা হয়েছে বলা জানানো হয়।
এদিন এফডিসিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে মাহির বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ‘ভুল’ বলে জানান প্রযোজক জেনিফার। একই সঙ্গে প্রযোজকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোও তুলে নেন মাহি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মাহি বলেন, ‘শিল্পীরা ফুলের মতো, খুবই নরম। শিল্পীদের যদি আদর করে কিছু বলা যায়, সবকিছু করা সম্ভব। ১২ ঘণ্টার জায়গায় ২৪ ঘণ্টা কাজ করানোও সম্ভব; আমি এমন অনেক কাজ করেছি। আমি আপুকে (জেনিফার ফেরদৌস) বলব, যা যা হয়েছে সবকিছু কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে। যদি ফেসবুকে আর্শীবাদের একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ হতো, সবকিছু শেয়ার করা হতো, তাহলে এটা হতো না। সিনেমাটি শুধু আপুর নয়, আমার, রোশনের, পরিচালকের।’
তিনি আরও বলেন, ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে। আমাকে নিয়ে আপুর মুখে যখন অন্যরকম কথা শুনছিলাম, রেগে গিয়ে বলছিলেন, তখন আমারও মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। যাই হোক, যা বলেছি সব ভুয়া।’
প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস বলেন, ‘বিগত তিন সপ্তাহ ধরে আমাদের ‘আশীর্বাদ’ সিনেমার একে অপরকে নিয়ে যে ধরনের বুলিং করা হচ্ছিল, সেটার আজ অবসান হলো। আমাদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল তার সুরাহা হয়েছে। একজনের মাধ্যমে আসলে আমাদের কথাবার্তার ছড়িয়ে পড়ে। এটা আমরা এখন বুঝতে পেরেছি।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, প্রযোজক শামসুল আলম, ‘আশীর্বাদ’ সিনেমার পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, চিত্রনায়ক জিয়াউল রোশন প্রমুখ।
আজ শুক্রবার মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘আশীর্বাদ’ সিনেমাটি। এতে মুক্তিযুদ্ধের পাশাপশি এ সময়ের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে শিল্পী সমিতিতে প্রযোজকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন মাহি। অভিযোগে তিনি লেখেন, ‘সম্প্রতি ‘আশীর্বাদ’ সিনেমার প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা অভিযোগ এনে বাজে মন্তব্য করে যাচ্ছেন, যা ইতোমধ্যেই ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই সঙ্গে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার হুমকি দিচ্ছে তারা।’
মাহি আরও লেখেন, ‘প্রযোজক জেনিফারের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য ও জিঘাংসামূলক কর্মকাণ্ডে আমি বিব্রত। এতে আমার মানহানি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এসব বক্তব্যে জনমনে শিল্পীদের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এটা চলচ্চিত্র শিল্পীদের ইমেজ ক্ষুণ্ন করছে।’ তিনি জেনিফার ফেরদৌসের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। একই সঙ্গে তার মানহানির বিচার করে শিল্পীদের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখার অনুরোধ জানান।
ওই দিনই এফডিসিতে প্রযোজক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জেনিফার ফেরদৌস। সে সময় তিনি বলেন, ‘আমি দুদিন আগেই মামলা করতাম। আমার অনেক বড় ক্ষতি করেছে মানিক (পরিচালক)। সিনেমার ৩০টার বেশি প্রেক্ষাগৃহ পাওয়ার কথা ছিল। এখন ৯-১০টা প্রেক্ষাগৃহও পাচ্ছি না। এর ক্ষতিপূরণ পরিচালক, মাহি ও রোশানকে দিতে হবে। আমি অবশ্যই মামলা করব। এটা অনুদানের সিনেমা, ফাজলামো নয়। এই টাকা আমি তুলে দেখাব।’
সে সময় ‘আশীর্বাদ’র প্রযোজক আরও বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমাকে যদি তাদের বিরক্ত লাগে, তাহলে কাজ করল কেন? মাহি ছাড়া কেউ ফুল সাইনিং করা ছিল না। পরিচালক মানিক অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। কলাকুশলীদের তিনি ঠিকমতো টাকা দেননি। ৫০ হাজার টাকা যাকে দেওয়ার কথা, তাকে দিয়েছেন ১৫ হাজার। এক লাখের জায়গায় দিয়েছেন ৫০ হাজার।
ইউকেবিডিটিভি/ বিডি / এমএসএম