ওসমানীনগর প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেট জেলার ওসমানীনগরে এক মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে বলৎকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে অভিযুক্তকে ৩০বার কান ধরে উঠবস করিয়ে এবং ২২ হাজার টাকার বিনিময়ে রফাদফার অভিযোগ উঠেছে।
কান ধরে উঠবস এবং সালিশের ২ মিনিট ৩২ সেকেন্টের একটি ভিডিও বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় উপজেলা জুরে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত সুপারকে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত করে সালিশ মিমাংসার মাধ্যমে ঘঠনাটি ধামাচাপার চেষ্টা করেন মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট এবং স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি।
অভিযুক্ত মো. আব্দুল কাদির সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লন্তীর মাটি গ্রামের মৃত নূরুল হকের ছেলে ও উপজেলার সাদিপুর ইউপির নূরপুর হাফিজিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা সুপারের দায়িত্বে ছিলেন। তবে, এই ঘটনায় আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুরপুর হফিজিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ১১ বছরের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে গত শনিবার দুপুরে জোরপূর্বক বলৎকার করেন মাদ্রাসা সুপার আব্দুল কাদির। বাড়িতে গিয়ে অসুস্ত হয়ে পড়লে নির্যাতিত শিক্ষার্থী তার পিতাসহ পরিবারের লোকজনকে ঘটনাটি বর্ননা দিলে শিশুর পিতা মাদ্রাসা কমিটি সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে নির্যাতিত শিশুকে তার পিতার মাধ্যমে উপজেলার তাজপুরে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তরিগরি করে গত রোববার মাদ্রাসা কমিটিসহ গ্রামের কয়েকজন মাদ্রাসার অফিসে শালিশের আয়োজন করেন। সালিশে অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার আব্দুল কাদিরকে সবার সম্মুখে ৩০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে ২২ হাজার টাকা জরিমানা সহ মোসলেকা আদায় করে চিকিৎসার জন্য শিক্ষার্থীর পিতাকে টাকা প্রদান করা হয়। কান ধরে উঠবস করার ভিডিওটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই এ ব্যাপারে নানা ধরণের মন্থব্য করছেন।
খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এ ব্যাপারে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
শালিশে অংশ নেন নুরপুর গ্রামের ইয়াওর আলী, আবিদ উল্যাহ, আফতাব হুজুর ও তজমুল আলীসহ আরো স্থানীয় কিছু ব্যক্তিবর্গ। সালিশকারী নুরপুর গ্রামের ইয়াওর মিয়া বলেন, মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পর আমরা কমিটির সবাই মিলে সাময়িক বরখাস্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করি।
অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার আব্দুল কাদিরের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) এসএম মাঈন উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।