শিপন আহমদ,ওসমানীনগর: সিলেটে জেলার ওসমানীনগরে স্থানীয় সরকার বিভাগের রাস্তার পাশে থাকা ৩টি বড়-বড় গাছ সংঘবদ্ধ প্রভাবশালী চক্র কর্তৃক কেটে নেয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারী রাস্তা থেকে অনেকটা প্রকাশ্যে গাছ কেটে গাড়ি যোগে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎতের ঘটনার ৭ দিন অতিবাহিত হলেও স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে রহস্যজনক ভুমিকা পালন করছে। উপজেলা এলজিইডি বিভাগ সরেজমিন পরিদর্শন করে গাছ কর্তনের সত্যতা পেয়ে কার্যত কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গত ১৫ মার্চ সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ ও প্রতিবাদ সভা করে কর্তনকৃত গাছ উদ্ধারসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের মৃত আছমত উল্যার পুত্র ফারুক মিয়া,তার পুত্র শামিম মিয়া ও নূর ইসলামসহ ৬/৭জন মিলে রবিবার ১৩ মার্চ ভোরে স্থানীয় কাদীপুর গ্রামের এলজিইডির আওতাধীন উদর কোনা-কাদিপুর রাস্তার মদরিছ আলীর বাড়ির সামন থেকে একটি চাম্বল ও দুইটি মেহগুনি জাতের গাছ কেঠে বিক্রি করে দিয়েছে।ওই দিন ফজরের নামাজ শেষে গ্রামের বাসিন্দা সাইস্তা মিয়া ও জাবেদ আহমদসহ আরো কয়েকজন দেখতে পান ফারুক মিয়াসহ তার পুত্রদ্বয় এবং ৬/৭জন লোক মিলে রাস্তার গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা উপজেলা এলজিইডি,বন বিভাগ এবং ইউএনও‘র কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় মঙ্গলবার কাদিপুর গ্রাম বাসীর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন প্রবীন শালিস ব্যাক্তিত্ব কদর আলী, গ্রাম পঞ্চায়িত কমিটির সভাপতি মোতোয়াল্লি সাইস্তা মিয়া, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান, বশির মিয়া, সাবেক ইউপি সদস্য নেপুর আলী, সাবেক মেম্বার নুরুল ইসলাম শফিক, সমাজ সেবক কাওছার আহমদ, জাবেদ আহমদ, মানিক মিয়া, আকবর মিয়া, তখলিছ মিয়া, ডা: সুবুধ চন্দ্র, আব্দুল হক লেবু প্রমুখ।
সভায় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের রাস্তাটি পাকা করনের পর থেকে বিভিন্ন ভাবে রাস্তার ক্ষতি সাধন করে রাস্তার পাশে থাকা গাছ পালা কেটে নিয়ে যাচ্ছে ফারুক মিয়া ও তাঁর সহযোগীরা। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে অলিখিত সখ্যতা রেখে বেশ কিছুদিন ধরে উদর কোনো-কাদিপুর রাস্তার একাধিক ছোট গাছ সরকারের অনুমতি ছাড়া সময়ে অসময়ে কেটে নিচ্ছেন তারা। প্রতিনিয়ত এ রখম ছোট বড় গাছ কেটে নেয়ার ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় এলাকার রাস্তার পাশে থাকা গাছ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা। সভায় জরুরী ভিত্তিত্বে গাছ কর্তন কারিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোড় দাবি জানানো হয়েছে।
কাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী বশির মিয়া,সাইস্তা মিয়া,জাবেদ আহমদ, সাজ্জাদুর রহমান, কদর আলী, কাওছার আহমদসহ অনেকেই জানান,রাস্তাটি এলজিইডির অধিনস্থ হওয়ায় আমরা পঞ্চায়েতের কাজে যেখানে গাছ কাটতে সাহস পাই না।সেখানে প্রভাবশালী ফারুক মিয়া চক্র প্রতিনিয়ত রাস্তার গাছ কেটে নেয়াসহ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি সাধনের চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে নিরব থাকায় বর্তমানে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে রাস্তার কাছ কেটে অন্যত্র বিক্রি করে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে।এসব যেন দেখার কেউ নেই।
ওসমানীনগরের অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে থাকা বালাগঞ্জ উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) শেখ মখলিছুর রহমান জানান, কাদিপুর এলাকার এলজিইডি রাস্তা থেকে ৩টি বড় গাছ কেটে নেয়ার প্রাথমিক সত্যতা মিলছে। এলজিইডি সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, খবর পেয়ে উপজেলা এলজিইডির পক্ষ সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাস্তার গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে। রাস্তার গাছ কর্তন করে নিয়ে যাওয়ার সময় যেহেতু গ্রামবাসী লোকজন অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে পারছেন। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।