শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মাধবপুরে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৪ পঞ্চগড়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নবিজুল ইসলাম সমাহিত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সরকার কাজ করছে- পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ওয়েলস আওয়ামী লীগের উদ্দ্যোগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপিত পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের যা করার দরকার তা আমরা করব পার্বত্য উপদেষ্টার সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় শ্রেষ্ঠ থানা শ্রীমঙ্গল উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর উদ্যোগে পালিত হলো বাংলা নববর্ষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ অন্যান্যদের বিরদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ দূতাবাস ব্রাসিলিয়ায় বাংলা নববর্ষ উদযাপিত

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ এর পটভূমি ও তাৎপর্য নিয়ে যুক্তরাজ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

শেখ মোহাম্মাদ আনোয়ার
  • খবর আপডেট সময় : রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫
  • ৩৯ এই পর্যন্ত দেখেছেন

যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ এর পটভূমি ও তাৎপর্য নিয়ে  এক আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নইম উদ্দিন রিয়াজের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক,  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমদ চৌধুরী,  সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, দফতর সম্পাদক শাহ শামীম আহমদ, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক আ স ম মিসবাহ, যুব বিষয়ক সম্পাদক তারিফ আহমেদ, প্রচার সম্পাদক মাসুক ইবনে আনিস, ভিপি খসরুজ্জামান, আহমেদ হাসান, সেলিম আহমদ খান, ও জামাল আহমেদ খান  সহ আওয়ামী লীগ যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ  সহ অংগ সংঠন সমূহের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা বলেন, ৭ ই মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় ও অলঙ্ঘনীয় দিন। ৭ মার্চের চেতনা অবিনশ্বর। আমাদের মহান নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান বর্তমানে শহিদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে বজ্রকণ্ঠে একটি মহাকাব্য রচনা করেছিলেন। সেই মহাকাব্য ধারণ করেছিল হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতির মুক্তির বার্তা। ঐ দিনই বাঙালি জাতির মহানায়ক দ্বিধাহীন চিত্তে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধুর দরাজ কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল বাঙালির হৃদয় থেকে হৃদয়ে অনুরণিত শব্দমালা। স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় সমগ্র বাঙালি জাতিকে একসূত্রে গাঁথা সেই মহাকাব্যের শ্রেষ্ঠ পংক্তি, ‘আর দাবায় রাখতে পারবা না’।


বক্তারা আরও বলেন, আজ অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস বাহিনী, দেশবিরোধী ও স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিপুষ্ট গোষ্ঠীকে প্রত্যক্ষভাবে মদদ জোগাচ্ছে। এই অপশক্তির প্রতিভূই অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক জোরপূর্বক দখলদার ইউনূস গং। অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এই অশুভ শক্তি রাষ্ট্রের সকল পর্যায় থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর। কোনো কোনো জায়গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাতিল করে তার পরিবর্তে কুখ্যাত রাজাকারের নাম বসিয়েছে। এমনকি ৭ মার্চসহ ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ অন্যান্য জাতীয় দিবসসমূহ রাষ্ট্রাচার থেকে বাদ দিয়েছে। ‘জয় বাংলা’-কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রদত্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দিয়েছে। এই অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং পরিকল্পিতভাবে বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল অর্জনসমূহকে ধূলিসাৎ করার অপতৎপরতায় লিপ্ত। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে এই দেশবিরোধী ও গনবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে গণশক্তির জাগরণ আশু প্রয়োজন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত সেই গণশক্তিকে রুখার সাধ্য কারো নাই। উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সমূলে এদের বিনাশই একমাত্র সমাধান।

‘জয় বাংলা’ স্লোগান এবং জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৭ মার্চের ভাষণ যুগে-যুগে বাঙালিদের বিশ্বের বুকে আত্মমর্যাদার সাথে মাথা উঁচু করে চলতে এবং মা-মাতৃভভূমির তরে লড়াই-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে সকল বক্তারা অভিমত ব্যাক্ত করেছেন।

অপরদিকে  যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ওয়েলস শাখার পক্ষ থেকে  ৭ই মার্চ  বৃটেনের ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফ শহরে এক আলোচনা  সভা আয়োজন করা হয়।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ওয়েলস আওয়ামী লীগের  সভাপতি  মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর সভাপতিত্বে এবং ওয়েলস আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক, এম.এ.মালিক এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা  সভায় বক্তব্য রাখেন ওয়েলস আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম নজরুল, সহ সভাপতি এস এ রহমান মধু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মর্তুজা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব লিয়াকত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মল্লিক মোসাদ্দেক আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আনোয়ার, ওয়েলস যুবলীগের সাবেক সভাপতি জয়নাল আহমদ শিবুল, সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল ওয়াহিদ বাবুল, ওয়েলস বঙ্গবন্ধু পরিষদের  সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইকবাল আহমেদ, ওয়েলস যুবলীগের সভাপতি ভিপি সেলিম আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মফিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহ সভাপতি আবুল কালাম মুমিন, সহ সভাপতি রকিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ বি রুনেল, ওয়েলস ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ বদরুল হক মনসুর, ও সাধারণ সম্পাদক  শাহ জাহান তালুকদার শাওন, সহ  অন্যান্য  নেতৃবৃন্দ।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ এর এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাঙালী জাতির উদ্দেশ্যে যে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেছিলেন। এই জ্বালাময়ি ভাষণ সকল বাঙালীদেরকে উদ্দীপ্ত করে এনে দেয় অসীম সাহস। রক্তে আগুন জ্বালায় মুক্তিকামী মানুষের। বাঙালী জাতিকে করেছিলো সংগ্রামী চেতনায় উজ্জীবিত। ৭ই মার্চ দিনটি বাঙালি রাজনৈতিক কবির এই শব্দযুগল ভাষণ বাঙ্গালীর অধিকার, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার আন্দোলনের মূলমন্ত্রে পরিণত হয়। উত্তাল একাত্তরে শেখ মুজিবের ভাষণে সেদিন পুনজাগ্রত হয়েছিলো গোটা জাতি। সংকল্পে মুষ্টিবদ্ধ হয়েছিলো অত্যাচারী হানাদারদের বিরুদ্ধে।

বঙ্গবন্ধুর দেয়া দীর্ঘ ভাষণে তিনি পূর্ব বাঙলার মানুষের ওপর যুগ যুগ ব্যাপী চলতে থাকা অত্যাচার-লাঞ্ছনা-বঞ্চনা আর উৎপীড়নের প্রতিবাদে স্বাধিকারের প্রশ্নে পাকিস্তানি শোষক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়াবার প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালের পর সুদীর্ঘ ২৩ বছরের শোষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে বাঙালি জাতির জাতিসত্ত্বা, জাতীয়তাবোধ এবং জাতিরাষ্ট্র গঠনের যে ভিত রচিত হয় তারই পরবর্তী দিক-নির্দেশনা ছিলো জাতির জনকের সেদিনের ভাষণে। ১৯৭০ এর নির্বাচনে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেন বাঙ্গালীর মুক্তির দিশারী, সংগ্রামী বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা,হাজার বছরের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান, যাকে বাঙ্গালী তাদের অবতার হিসেবে, মহানায়ক হিসেবে জানে জাতির জনক শেখ মুজিবর রহমান।যাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বহু রক্তাক্ত পথ পাড়ি দিয়ে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষন। এজন্যে পুরো জাতি ছিল অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান। সারা দেশ থেকে আগত লক্ষ লক্ষ জনতার অপেক্ষা, শেষে আসলেন মহানায়ক, বাঙ্গালীর প্রানের নেতা।

বঙ্গবন্ধু, কোন কাগজে লেখা কবিতা নয়, কারো বলে দেওয়া কোন ভাষন নয়, তাঁর হৃদয়ের গভীর অনুভুতি, দেশমাতৃকার প্রতি অসীম ভালোবাসা, বাঙ্গালীর প্রতি অসীম মমত্ত্ববোধ সবকিছু মিলিয়ে দরাজ কন্ঠে পাঠ করলেন তার অমর কাব্য এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। জাতির জনকের সেদিনের দেওয়া ভাষণে তিনি আত্মপরিচয়, স্বাধীনতা, অধিকার এবং মুক্তি অর্জনে যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন।তার সেই বজ্রকণ্ঠের ভাষনটি ইতিমধ্যে সর্বকালের সকল বিপ্লবী মহানায়কদের ভাষনের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বলে সীকৃতি লাভ করেছে। আজকের এই দিনে সেই বঙ্গবন্ধুকে সরণ করছি যার চিন্তায় চেতনায় বাঙ্গালী জাতির সম্পৃক্তি ও অক্ষয় ভালোবাসা মিশ্রিত বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আজকের এই বাংলা ও বাঙ্গালী। যার জন্য জাতি পেয়েছে লাল বৃত্ত সবুজ পতাকা।

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102