পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় গৃহিনীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ চার লক্ষাধিক টাকা লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপরই জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাগুড়া গ্রামের আব্দুল মোতালেবের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার পর বাড়ির পিছনে চা বাগান দিয়ে বাড়ির বেড়া কেটে ভিতরে প্রবেশ করেন মুখোশ পরে কয়েকজন লোক। এ সময় বাড়িতে একা ছিলেন বাড়ির গৃহিনী ফরিদা বেগম। তিনি আব্দুল মোতালেবের স্ত্রী।
ঘরে প্রবেশ করেই বাড়ির গৃহিনী ফরিদা বেগমের গলায় ছুড়ি ঠেকিয়ে আলমারির চাবি চায় তারা। অস্ত্রের মুখে জিম্মি হয়ে কৌশলে অন্য চাবি দিলেও দুর্বৃত্তরা আলমারির সুকেশ বের করে উঠোনের এক কোণে এনে সঞ্চিত টাকাগুলো নিয়ে নেয়। আরেকজন ওই গৃহিনীর নাকের নাকফুলও ছিনিয়ে নিয়ে ঘরের পিছন দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ফরিদা বেগম।
পরে বিষয়টি জানতে পেরে বাজার থেকে বাড়িতে ছুটে আসেন ফরিদা বেগমের স্বামী আব্দুল মোতালেব। তিনি বিষয়টি আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশিদের জানালে মুহুর্তে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে ভিড় জমান। খবর পেয়ে এনসিপির হাবিবুর রহমান হাবিব ও জামায়াতের জয়নাল আবেদীনসহ অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও ছুটে আসেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুসা মিয়া।
জ্ঞান ফেরার পর ফরিদা বেগম জানান, লোকগুলোর মুখে মাস্ক পরা ছিল। ঘরে ঢুকেই তারা আমার গলায় ছুড়ি ঠেকিয়ে আলমারির সুকেশের চাবি চায়। অন্য চাবি দিলে তারা আমার নাকের নাকফুল ছিনিয়ে ও সুকেশ নিয়ে ঘরের বাইরে চলে যায়। সুকেশে চারলাখ টাকা বেশি ছিল বলে জানান ফরিদা বেগমের স্বামী আব্দুল মোতালেব। তবে ডাকাত দলের কাউকেই চিনতে পারেননি বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার।
প্রতিবেশি ঝুনু জানান, এ ধরণের ডাকাতির ঘটনায় এ গ্রামে কখনোই ঘটেনি। তাও সন্ধ্যার পর। দ্রুত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এসব ডাকাতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, এরকম ঘটনা আগে কখনো এখানে ঘটেনি। ডাকাতির পর থেকে এলাকায় এক ধরণের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অনলাইন জুয়া, মাদক প্রতিরোধ অত্যন্ত জরুরী। তা নাহলে আজ এ বাড়ি, কাল আরেক বাড়িতে এ ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিক মহল।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুসা মিয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিবারটির সাথে কথা বলেছি। সোমবার (১০ নভেম্বর) ফরিদা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। আসলে এটি ডাকাতি নয়, ছিনতাই। বিষয়টি তদন্তে একাধিক টিম কাজ করছে।