রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে জাতীয় পতাকা স্ট্যান্ডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত মাধবপুরে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৪ পঞ্চগড়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা নবিজুল ইসলাম সমাহিত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সরকার কাজ করছে- পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ওয়েলস আওয়ামী লীগের উদ্দ্যোগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপিত পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের যা করার দরকার তা আমরা করব পার্বত্য উপদেষ্টার সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় শ্রেষ্ঠ থানা শ্রীমঙ্গল উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর উদ্যোগে পালিত হলো বাংলা নববর্ষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ অন্যান্যদের বিরদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত: আন্তর্জাতিক জনপ্রশাসন দিবস আজ

সংবাদদাতার নাম :
  • খবর আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২
  • ২০৬ এই পর্যন্ত দেখেছেন

স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-১৯৭৯ তে সম্পদের হিসাব নেয়া সংক্রান্ত বিদ্যমান ক্ষমতা প্রয়োগ হচ্ছে না। একাধিকবার প্রয়োগের উদ্যোগ নিলেও কর্মচারীদের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আরও কঠোর করে বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

কিন্তু সচিব কমিটিতে বিদ্যমান বিধিমালাকে দুর্বল করে দেওয়ার পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কঠোর অবস্থান থেকে পিছু হটছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে আজ আন্তর্জাতিক জনপ্রশাসন দিবস পালিত হচ্ছে। দিনটি উপলক্ষ্যে করোনার আগ পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও এবার কোনো সরকারি উদ্যোগ নেই।

গত ৩১ মে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে বিধিমালার সংশোধন প্রস্তাব ওঠে। ‘সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-২০২২’ সংশোধন প্রস্তাব অনুযায়ী এনবিআরের পাশাপাশি স্ব স্ব দপ্তর সংস্থা তাদের কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব যেন নেন তা নিশ্চিত করতে বলা হয়। বিদ্যমান বিধিমালায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদের হিসাব দেয়ার বিধান থাকলেও আয়কর বিবরণীর বিষয়টি উল্লেখ নেই।

ফলে যারা আয়কর বিবরণী জমা দেন, তারা এটিকে অজুহাত দেখিয়ে সম্পদের হিসাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। বিধিমালার খসড়া অনুযায়ী, এনবিআরে সম্পদের হিসাব দিলেও সরকারি কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে পৃথকভাবে সেই হিসাব জানাতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারিত ছক পূরণ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ৫ বছর অন্তর ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে হবে।

এতে আয়করের বিবরণী জমা দিলেও চলবে, যদি এর বাইরে অন্য কোনো সম্পদ না থাকে। কিন্তু সচিব কমিটির বৈঠকে এনবিআরের মাধ্যমে দেয়া ট্যাক্স রিটার্নই যথেষ্ট-এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছে। এখন এই বিষয়টির আইনগত দিক খতিয়ে দেখতে সেটা আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিধি) আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সচিব কমিটি কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। এখন এই বিষয়গুলোর আইনগত দিক খতিয়ে দেখবে লেজিসলেটিভ বিভাগ। এরপর বিধিমালার সংশোধনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সচিব কমিটির পর্যবেক্ষণগুলো চূড়ান্ত কিছু নয়, আইনগত দিক খতিয়ে দেখা হবে। এখনই বিস্তারিত মন্তব্য করার সময় হয়নি।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ, লেখক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া বলেন, দুর্নীতির যে চিত্র তা রোধ করার জন্য বিদ্যমান বিধিমালাটি কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন। সদিচ্ছা নিয়ে প্রয়োগ হলে দুর্নীতির লাগাম অনেকটাই টানা সম্ভব। তিনি বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এটিতে প্রয়োজনীয় কঠোরতা না এনে দুর্বল করে ফেললে দুর্নীতি আরও বাড়বে। ফিরোজ মিয়ার মতে, সরকারি কর্মচারীদের অনেকেই উদাহরণ দেন যে, রাজস্ব বিভাগে জমা দেওয়া ট্যাক্স রিটার্ন দেখলেই সরকার পারে। আলাদাভাবে সম্পদের হিসাব দিতে হবে কেন। বাস্তবতা হচ্ছে এনবিআরে জমা দেয়া সম্পদের হিসাবে অনেকে ফাঁকিবাজি করে। তা ছাড়া সরকার চাইলেই এনবিআর থেকে অন্য কোনো দপ্তর সংস্থাকে কারও সম্পদের তথ্য দিতে পারে না। আইন অনুযায়ী সেই সুযোগ নেই।

বিধিমালায় এমন সংশোধন আনলে সেটা জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। বুধবার বলেন, সরকারের নির্বাচনি প্রতিশ্রুতিতেও দুর্নীতিবিরোধী উদ্যোগের কথা উল্লেখ আছে। এমন অবস্থায় বিদ্যমান বিধিমালাকে দুর্বল করার উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করে দেখবে আশা করি।

এদিকে বিধিমালা সংশোধন সংক্রান্ত বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনবিআর থেকে হিসাব নেওয়ার বিষয়টিতেই বেশির ভাগ মতামত এসেছে। কিন্তু এনবিআর থেকে রিটার্নের তথ্য অন্য সরকারি দপ্তর-সংস্থাকে দেওয়ার বিধান নেই। এমন প্রশ্নের জবাবে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যমান আইনে সেই সুযোগ আছে কি না তা বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনে এমওইউ (মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) স্বাক্ষর করে কোনো ব্যবস্থা করা যায় কি না সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হবে।

তবে এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে আরেক কর্মকর্তা বলেন, এমওইউ দিয়ে আইনি বাধা পার হওয়ার সুযোগ নেই। এই বিষয়গুলো শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সবাই জানেন। বস্তুত সম্পদের হিসাবের বিষয়টিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলার জন্যই এ ধরনের পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যারা যখন ক্ষমতায় থাকেন তারা নিজেদের সময়টা নির্বিঘ্নে পার করে দিতে চান। কেউ হিসাবের মুখোমুখি হতে চান না। এই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুক্তি দিয়ে বলেন, যদি এনবিআরে রিটার্ন দাখিল করাই যথেষ্ট হয় তাহলে সেই হিসাব পাওয়ার জন্য আর চেষ্টার দরকার কী। এনবিআর তো সরকারি প্রতিষ্ঠানই। তারা তো তাদের মতো কার্যক্রম গ্রহণ করছেই।

উপেক্ষিত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অন্তত দুবার সম্পদের হিসাব চেয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব নিয়ন্ত্রণাধীন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর-সংস্থায় দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ৯৫ শতাংশের বেশি সরকারি কর্মচারী সম্পদের হিসাব দেননি বলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

ইউকেবিডিটিভি/ বিডি / এমএসএম

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102