স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০২৪-এর ফেব্রুয়ারি থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে ৬১০ জন সাপের দংশনের শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১০ জুলাই) মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রাসেল ভাইপার নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
তিনি জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০২৪-এর জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত মোট ৪১৬ জন রোগী ভর্তি হয়, তার মধ্যে বিষধর ৭৩টি এবং ১৮টি রাসেল ভাইপার। এদের মাঝে মোট ১১ জন রোগী মারা যান, যার মধ্যে রাসেল ভাইপারের দংশনের কারণে মারা যান ৫ জন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাসেল ভাইপার নিয়ে সারা দেশে বিভিন্ন তত্ত্ব, তথ্য গুজবে আতংক বিরাজ করছে। বাংলাদেশে সর্পদংশন নীতিগতভাবে একটি স্বীকৃত গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। ২০২২ সালে পরিচালিত জাতীয় জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের ৪ লাখের অধিক মানুষ সর্পদংশনের শিকার হন যার মধ্যে দুঃখজনকভাবে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন।
রাসেল ভাইপার ভাইপারিড গ্রুপের একটি বিষাক্ত সাপ, বাংলাদেশে রাসেল ভাইপারের অস্তিত্ব এবং এর দংশনে মৃত্যুর ইতিহাস ১৯২০ সালেই স্বীকৃত আছে। ২০১৩ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাসেল ভাইপার অথবা উলুবোড়া সাপের দংশনের প্রথম রিপোর্ট হিসেবে লিপিবদ্ধ আছে, প্রাথমিকভাবে রাজশাহী ও বরেন্দ্র অঞ্চলে এর প্রভাব বেশি দেখা গেলেও পরবর্তীতে ধীরে ধীরে রাসেল ভাইপারের বিস্তৃতি ২৭ টি জেলায় ছড়িয়েছে।
ডা. রোবেদ আমিন জানান, বিষধর সর্পদংশনের স্বীকৃত চিকিৎসা হচ্ছে অ্যান্টিভেনম। দেশের প্রধান বিষধর সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা ঘোড়ার শরীরে প্রয়োগ করা, ঘোড়ার রক্তের সিরাম থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এন্টিভেনম তৈরি করা হয়।
বাংলাদেশে বর্তমানে এন্টিভেনম তৈরি করা হয় না। ভারতে তৈরি (৪টি প্রধান বিষধর সাপের বিষয়ে বিরুদ্ধে প্রস্তুত) এন্টিভেনম সংগ্রহ করে অসংক্রামক ব্যাধি কর্মসূচি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এন্টিভেনম সরবারহ করে থাকে।
এন্টিভেনম ক্রয়, বিতরণ, সংরক্ষণ, ব্যবহার, ব্যবহার পরবর্তী প্রভাব (নজরদারি) দেখার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কমসূচি না থাকা সত্বেও এন্টিভেনম প্রয়োগের সুফল লক্ষ্মণীয়।
নিউজ /এমএসএম