ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে যোগদান করেছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব (গ্রেড-১) আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
সোমবার (০১ জুলাই) এসএমই ফাউন্ডেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ১৯৯৩ সালে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১১তম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। প্রায় ৩১ বছরের দীর্ঘ সরকারি কর্মজীবনে তিনি মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন ছাড়াও জনপ্রশাসন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩-তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বিটাকের মহাপরিচালক হিসেবে এসএমই ফাউন্ডেশনের পরিচালক পর্ষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন আনোয়ার হোসেন।
তিনি ১৯৬৪ সালে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম আব্দুল মালেক চৌধুরী ও মাতা মরহুমা উম্মেতুন নেছা চৌধুরী।
আনোয়ার চৌধুরী পড়াশুনা করেন আন্দিউড়া উম্মেতুননেছা হাই স্কুল, মুরারি চাঁদ কলেজ ( এমসি কলেজ) ও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে বিএসএস (অনার্স) ও এমএসএস ডিগ্রী লাভ করেন যথাক্রমে ১৯৮৬ ও ১৯৮৭ সালে। ২০১৪ সালে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি এমপিপিএম ডিগ্রী অর্জন করেন।
আনোয়ার চৌধুরী ১৯৯৩ সালে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। চাকরী জীবনে ১ম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হিসাবে মাঠ প্রশাসনে দীর্ঘ ২০ বছর কাজ করেছেন। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব, যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের উপ সচিব, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সদ্য তিনি অতিরিক্ত সচিব হিসাবে পদোন্নতি পান।
আনোয়ার চৌধুরী পেশাগত ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভের জন্য থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, জাপান, চীন, মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, স্পেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, ও তুরস্ক সফর করেন।
সরকারী দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও জনকল্যাণ মুলক দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আছেন।
তিনি জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক, ঢাকাস্থ মাধবপুর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের প্রতিষ্টাতা সভাপতি, সৈয়দ মজতবা আলী সৃতি পরিষদের সভাপতি, সিলেট বিভাগীয় চাকরিজীবি পরিষদের সহ সভাপতি, সিলেট রত্ন ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সম্পাদক, তরফ সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টা, Chittagong University Public Administration Ex Students Forum, Dhaka এর সাধারন সম্পাদক, হবিগঞ্জ নাগরিক কমিটি, হবিগঞ্জ এসোসিয়েশন, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ, ঢাকা অফিসার্স ক্লাব, ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার পৌর পাঠাগার, নেত্রকোনা সাহিত্য পরিষদ, নেত্রকোনা ডায়াবেটিস এসোসিয়েশন প্রভৃতি সংগঠনের আজীবন সদস্য ।
সোনাগাজী উপজেলায় কর্মরত থাকাকালে তিনি সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে একটি দৃষ্টিনন্দন মুক্তিযোদ্ধের সৃতিসৌধ নির্মান করেন।
আনোয়ার চৌধুরী নামে তিনি ভ্রমণকাহিনী ও সিলেট অঞ্চলের ইতিহাস – ঐতিহ্য নিয়ে বিভিন্ন সাময়িকি পত্রে লেখালেখি করেন।
তাঁর আগ্রহের ক্ষেত্র বৃহত্তর সিলেট তথা আসাম অঞ্চলের ইতিহাস, শিক্ষাবিস্তারের ইতিহাস, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং আলোকিত মানুষের জীবন ও কর্ম।
তাঁর লেখা বই “মেঘের দেশে পাহাড়ের দেশে”, “এশিয়ার দেশে দেশে”, “সিল্ক রুটের সন্ধানে: বংগ থেকে চীন”, “মাধবপুরের গুণীজন : জীবন ও কর্ম”, “হবিগঞ্জ প্রতিভা” ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।
সিভিল সার্ভিসে শ্রীহট্টের অবদান, হবিগঞ্জের আলোকিত মানুষ ইত্যাদি প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।
তিনি বেশকিছু ম্যাগাজিন / সাময়িকী সম্পাদনার সাথে সংশ্লিষ্ট আছেন। ভ্রমন সাহিত্যে অবদানের জন্য সম্প্রতি তিনি সৈয়দ মজতবা আলী পদক লাভ করেন।
আনোয়ার চৌধুরীর স্ত্রী ইশরাত জাহান শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত এবং দুই সন্তান আব্দুল্লাহ শাবাব আনোয়ার চৌধুরী ও আব্দুল্লাহ সাবিত আনোয়ার চৌধুরী ঢাকার নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত।
নিউজ /এমএসএম