নবীগঞ্জের ওপর দিয়ে হয়ে গেছে ভয়ংকর শিলা বৃষ্টি। মাত্র ১০মিনিটের শিলাবৃষ্টি ও কাল বৈশাখিঝড়ের কীরণে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে নবীগঞ্জ শহরসহ ৫০/৬০টি গ্রামের বিদ্যূৎ ব্যবস্থা। এই তান্ডব ভয় ধরিয়েছে মানুষের মনে।ভাবিয়ে তুলেছে অনেককে। শিলার আঘাতে মাথা ফেঁটেছে অনেকের। ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়েছে, ভেঙেছে সিএনজি অটোরিকশার কাচ। বাধাগ্রস্ত হয়েছে যান চলাচল। অনেকের বাড়ি ঘরের ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছাদ ছাইনি বোর্ড ভেঙ্গে পড়েছে।
রোববার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঝড়ো হাওয়ায় শীতল হয়ে আসে প্রকৃতি। এরপর ঝড়ো বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। এক একটি শিলা যেন বড় বড় পাথর। শিলাবৃষ্টিতে চলাচল করা অসংখ্য যানবাহনের গ্লাস ভেঙে পড়েছে। ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। কারও কারও বাসার টিনের চালা ফুটো ও জানালার কাচ শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন খোলা জায়গায় ও রাস্তায় অবস্থান করা অনেকেই।
নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রচÐ শব্দে মনে হয়েছিল ঘরের টিন ছিদ্র হয়ে যাচ্ছে। ফরিদপুর গ্রামের আব্দুস ছোবহান বলেন, এ রকম বড় শিলাবৃষ্টি আগে কখনো দেখেননি তারা। তাদের এলাকায় কাচা ঘরবাড়ি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
দক্ষিন দৌলত পুর গ্রামের প্রবীন মুরব্বি আব্দুস ছোবহান বলেন, জন্মের পর থেকে এতো বড় বড় শিলা বৃষ্টি পড়তে দেখিনি। শীলার আঘাতে বেশ কয়েকটি যানবাহনের গ্লাস ভেঙে যেতে দেখেছেন তিনি। একেকটি শিলার ওজন হবে প্রায় ২০০ গ্রামের উপরে।
আউশকান্দি বাজার এলাকার পান-দোকানি আলম মিয়া বলেন, ‘আমার বয়স ৫০ পেরিয়ে, কখনো এরকম বড় আকৃতির শিলা বৃষ্টি হয়েছে, জানা নেই। ’
সংবাদকর্মী মুশাহিদ আলী বলেন, আমার দেখা মতে, এ ধরনের বড় বড় শিলা বৃষ্টি আগে কখনো হয়নি। এ রকম শিলা বৃষ্টি গ্রামাঞ্চলে হওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, মাত্র ১০ মিনিট শিলা বৃষ্টির পর হবিগঞ্জ জেলার সব উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এতে প্রভাব পড়েছে ঈদ বাজারে। ক্রেতারারা ঈদের কেনাকাটা করতে স্বাভাবিক যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হয়েছেন, পড়েছেন ভোগান্তিতে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানেও শিলা বৃষ্টিতে অসংখ্য যানবাহনের কাচ ভেঙেছে। মহাসড়কের মধ্যে শিলার আঘাতে গাড়ির কাচ ভেঙে একজন যাত্রী আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এছাড়া শিলা বৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ। রাত সাড়ে ১০ টার পর থেকে বিদ্যুৎহীন রয়েছে পুরো নবীগঞ্জ। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়নি।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ সুত্রে দিয়ে নবীগঞ্জ পল্লী বিদ্যূৎ অফিসের এজিএম মোঃ ফয়জুল্লাহ বলেন, ঝড় ও শিলা বৃষ্টির কারণে হবিগঞ্জ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলায় শহরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ লাইন ও খুঁটি সব লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে। ফলে মেরামত কাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে না। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনো নিরোপন করা হয়নি।