শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন

কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক”- এর লেখা একগুচ্ছ কবিতা

কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক
  • খবর আপডেট সময় : শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪
  • ১৩৭ এই পর্যন্ত দেখেছেন

বহুরূপী অশ্রু এবং চিন্তা চোখ             

খোলা জানলার ওপিঠ ওধারে

স্মৃতিছুট্ গল্প এসে দাঁড়ায় ,—-

চোখের পাতায় বিবর্ণ আবেগ গুছিয়ে তোলা থাকে ; অন্য দূরের কাব্যরেখা গুলো ধুয়ে যায় বহুরূপী অশ্রুতে !

এভাবে চিন্তাচোখ মন আগুনে দগ্ধ পুড়ে ওঠে ,—-

কিছু অপাড় প্রশ্নে আমিত্ব ডোবে দারুণ সর্বনাশে !

খোলা জানলার এপাস আড়ালে বিবেক নিঃশব্দ নিয়মে অকৃপণ হেসে ওঠে , ……

ঘরের দর্পণে অবাক বিস্ময়ে উল্টো ভেসে ওঠে অ – আ – ক  – খ  !!_________________________________

একক একাত্তর

মধ্যবর্ত্তী পথে

একাত্তর’- এর হাওয়া একা , তবুও যেভাবে বিছিয়ে দিয়েছি অমলিন রক্তের দাগ ; সবটুকু ভালবাসা পালিত কাব্যের ব্যাকরণে !

এই মাটি নিয়েছে চিনে কবরের লাশের ঘুম ; তবু বাসকক্ষে নীরবতা আঁকা হয়েছে শ্রদ্ধার রঙ দিয়ে ,….

চেনা মুখের ঢল ; অন্য কোন শব্দের বর্ণপরিচয় দর্পণে শৈল্পীক সৃজনে কথা বলে , তবু মধ্যবর্ত্তী রাস্তায় কেউ একজন উন্মাদ ভোর রাতে ২১শে ফেব্রুয়ারী বলে আজান দিয়ে ওঠে !!__________________________________https://www.youtube.com/live/Vqn7gwsgf-4?si=rvnO1MebHQbMHXPS

    এক অন্য ঈশ্বরীর 

যথেষ্ট এ বদঃভ্যাস বধির এ চোখ ফিরে সারা দেয়নি অন্য স্বপ্ন দেখে ! শব্দে উড়ছে নির্বাক উচ্চারণ ; চেনা ছবির ক্যানভাসে রাস্তাটা ধূসর ছায়াময় কিম্বা বিবর্ণ বেয়াব্রু অতল ,—–

এখানে অপমৃত্যু হয়েছে কতবার কতভাবে নীলাম্বরী নামক ঈশ্বরীর ; সেতো অভিন্ন সাধারণ বিরহী ৷ তবুও বহু শতকের অন্ধকারে অশ্রাব্য ওর শরীর দেখেছি জন্মলগ্ন থেকে বহুবার !

এই পথ ধরে কতদিন কতবার অচেনা ঈশ্বর হেঁটে গেছে নীলাম্বরীর জন্য ! বাতাস ওই সময় থমকে থেমে ছিল গোটা রাত ; অদূরে চাঁদের আকাশ হাসনুহেনার গন্ধ মেখে মনে মনে নিজের শরীর নিয়ে পুড়েছিল ,—– যদিও হাত এগিয়ে দিতে অনেকটা সময় নিয়েছে ; মধ্যরাতে শ্মশান সেভাবেই মৃত্যুর নীরবতা নিয়ে কিছুটা ঘুমন্ত , বাকিটা নির্ঘূম দুঃস্বপ্নে একেকার !

সেভাবে না থেমে চলেনি পথ পথিকের ছায়া ; তারাও দেখেছে ওকে ধর্ষীতা হতে নিশাচর এক মদ্যপ পুরুষের সৌখিন দোষে !

সহজ শর্তে বিকলাঙ্গ স্মৃতি  এ্যালবাম গুছিয়ে তুলে রাখি আমিষ গন্ধে মেশা পুরো আকাশটায় ; এভাবে সময় হারিয়ে যেতে যেতে মনের মানচিত্র জিজে ওঠে প্রাচীন মন্ত্র শুনে !

অন্য এক দিন বিশ্রী ভাবে ঘুমিয়ে পড়েছিল ওপাড়ের সভ্যতা ; কান্নার দাগ নির্ণয় হয় স্নান ঘরের দর্পণে ! ওখানে চুপ নৈঃশব্দে টানা দাঁড়িয়ে ছিল পাষন্ড দেবতা ,—- কথাহীন চোখ যোনি আর লিঙ্গের প্রহসনে প্রত্যন্ত গভীরে উন্মাদ হয়ে ছিল ; সেই ছায়াছবি দেখে !

এই কতজন্মের অন্য আমি গুলো চেহারা বদলে নির্বাক স্ট্যাচু হয়ে আছি ! বিপরীতে সবটাই অজানা চাদর ঢেকে দেয় আবছায়া দৃশ্যের জগত ,—— ক্যামেরার পিছনে ব্যাপ্ত জিজ্ঞাসা ; অন্তর্গত বেহায়া , অনেকটাই মন্ডুহীন !

স্পর্শপাপ ছুঁয়েছে অন্য চোখ ; এই আঁঠার মত সমস্ত নিশি ধুসর রাত অবশিষ্ট দেহের গন্ধে শুনতে পেয়েছে মন ভাঙা ঝিঁঝিদের নির্বাক আর্তনাদ ! এই রাতে বাকি জন্মের অসুখ গুলো পথ পাল্টিয়েছে অনুচ্চারিত গিরগিটির মৈথুন দেখে !

ওই ঈশ্বরীর দেহ পুড়ছে ইহকাল – পরকাল নিয়ে ,—- অন্য চেহারার এক পুরুষ পুরো রাতটাই নতুন করে আহ্বান করছিল ওর চিতার সামনে দাঁড়িয়ে !

মৃত্যুর ঘরে অন্তর্ধান নিল পরিত্যক্ত স্বপ্ন গুলো ,—- পাশের বন্ধ ঘরটায় নরক যন্ত্রণা ভুগছিল অসম্পূর্ণা এক কবিতা !

ওই অদূরে কিছু কিছু অভিশাপ রাস্তার ওধারে গাছ হয়ে জন্মে ছিল অলৌকিক সময়ে ! হায় ঈশ্বর ! হায় দূরভাগ্য !!__________________________________

বেদ-ঈশ্বররের ইতিকথা

জল রঙের আকাশ

প্রাচীন মিশরের পিরামিড ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় , স্বপ্ন ছেঁড়া পেট কাটা ঘুড়িটা ; বেমালুম পলাতক !

তবুও নিয়েছি চিনে গোটা বিশ্বের অন্তিম রেখা ,….. দূরে অন্য কোথাও আবিস্কারের গন্ধ স্বপ্নের ভিতর নির্ঘূম ৷

জল রঙের চোখ ; জীবন দেখেছে মৃত্যুর পর ! সেই এক দিন নিজের নামে শয়তান পুষেছে হাতের রেখায় ,….. কথা নষ্ট করে বেদ-ঈশ্বর ভাবুক আগুনে আঁকে সর্বনাশী এক নারীর শরীর ! তবু ঠিকানাহীন বেপাত্তা সেই ঘুড়িটা !!__________________________________

বিমূর্ত চোখ কিন্তু দৃশ্য অবুঝ

ক্যানভাসটায় সবেমাত্র আলো-র রঙ আঁকতেই এস্ট্রে জুড়ে কারণহীন টুকরো কিছু আঁধপোড়া সিগারেট গুলো হৃদয় বিক্রেতার অভিলাষ নিয়ে একপ্রকার উত্তাপহীন জটিল নীরবতায় ভীষণ নির্বাক !

যেটাই ভেবেছি ; অন্য ছবি এসে দাঁড়ায় নিষিদ্ধ তুলিতে ,— জানলার ওপাশ থেকে তর্কবাজ কোকিল আকাশ পোড়া দুপুরে একটানা নির্বাচিত কবিতা বলে চলে !

গোটাটাই ভারসাম্যহীন দৃশ্য ; চোখের মধ্যে আয়ুহীন স্বপ্নের আস্ফালন ,—– এভাবেই এক একটা ছবি অস্তিত্বের মেঘে কৃপণ ; অন্যথায় ঝাপ্সা নির্বাক !

বাড়িটার ভেতর কেউ একজন  গাজন – সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশ প’ড়ে প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে বহুক্ষণ এক জায়গায় বড় স্থির !

ভিতরে ইট খষা এই ঘরে  শর্তহীন নিরুত্তাপে ভরা একপাত্র চায়ের কাপে নিঃশব্দে চুমুক ; এ’ভাবেই অহেতুক ! যেটা চাইছিলাম ভিতরময় নির্বোধ অন্য এক ভাব নিয়ে অচেনা অস্পষ্ট ,—-  অতএব চিন্তার বহির্ভূত অবৈজ্ঞানিক !

নতুন কিছু বিশ্লেষণ অনেক কালের ভিতর শতছিন্ন ; ক্যানভাস থেকে থুতু – ক্লেদ – রক্তে রক্তে গল্পের শেষ অধ্যায় !

বাড়িটার অন্য ঘর গুলোতে সকাল – দুপুর – সন্ধ্যা এবং রাত ; একই রকম রুগ্ন – জীর্ণ সৃজনহীন বাস্তব ,—- যদিও গোটা অনেকটা সময় প্রাচীন ঘড়িটার পরোয়া করে না ! আমি কি অন্য কোন আকাশের কাছে ভাবনা ভিক্ষা করতে এসেছি ; তাইতো দারুণ শূন্যতায় ছড়িয়ে দিয়েছি আমার অপলক তাকিয়ে থাকার সবটুক ভাবনার অসুখ !

কেউ ওধার থেকে  আসেপাশের ভয় ও লজ্জা সরিয়ে নিঃশব্দে হেঁটে এলে ;  দূরের সাজিয়ে রাখা চিন্তাগুচ্ছ মুছে যায় ক্যানভাস থেকে !

কিছুদিন ধরে শরীর আঁকছি , অন্য এক অলৌকিক মূর্তি এই ঘরের দর্পণে আশ্চর্য ভাবে উলঙ্গ বিপরীত ; তবুও অবুঝ হয়ে পুড়ে ওঠে প্রতিদিনের আস্পর্ধাগুলো !

ক্যানভাস থেকে কথা বলে এ’বাড়ির ঘর দোর , চেনামুখ গুলো পরিচয়হীন ; যেন ঐতিহাসিক ,—– চোখে চোখে শহরের গলি – রাস্তাঘাট সব কিছু ভিজে ওঠে অকালবর্ষণে !

অবশেষে ক্যানভাস থেকে নীল – কালো – লাল কিন্বা বেগুনী রঙেরা গলে গড়িয়ে পড়ে ; অবশেষে ঠোঁটে জ্বলে ওঠে চারমিনার সিগারেট !!__________________________________

স্বপ্নদ্বীপ এবং অন্যান্য নিরীহ শব্দেরা

যেটুকু বাকি ছিল

তার সবটা দিয়ে সময়লগ্নের তিথিক্ষণে মৃত্যু ঠেকানো কবচ গড়লাম ; তবু সে অপঘাতে অকস্মাৎ  মরলো ! ছেলেটা যাদের জ্বালায় মনে মনে এতকাল জ্বলছিল ; সেই সব বকে যাওয়া অসভ্য ঘৃণ্য ছেলে গুলোর অন্যায় – অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মৃত্যু নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো চির দিনের জন্য !

দেখে নিও সময় ওদের ক্ষমা করবে না , …..

এখন শহরের সব রাস্তায় চিরকালের  অসুখ ; এখানে নির্বোধ হয়ে ঘুরছে স্বপ্নদ্বীপের মৃত্যু নিয়ে আলোচনা , …..

অন্য দিকে ব্যাথা নিংড়ানো মন নিয়ে আসে-পাশের রাস্তায় কেউ – কেউ ওই সব কুচক্রি বর্বর হিংস্র অকর্মণ্য জানোয়ারদের ভয়ে ভেতরে ভেতরে নিঃশব্দ নিরবতা নিয়ে চুপ করে ছিল ! এটাই ঘটে যাওয়া বহতা সময়ের করুণ পরিণতি ; সেই কারণে প্রতিবাদ – সভা – সমাবেশ দিন কেটে যাচ্ছে সংবাদে সংবাদে এভাবে চিরাচরিতের মত ! অন্যদিকে দল বাঁচানোর কৃত কৌশল পরিপাটি উক্তি কিম্বা তর্ক-বিতর্ক  টিভিতে টিভিতে ; এরই মধ্যে নানান বিজ্ঞাপন রিরোতি !  কী এক দুর্বোধ্য স্বপ্নের মত লাগছিলো স্বপ্নদ্বীপের মৃত্যুটা ; যাদের কারণে ছেলেটা অকালে শেষ হয়ে গেল সেই সব খুনি ইপ্টেজারদের জন্য অগুন্তি ছি ছি কিম্বা নতুন আবিষ্কৃত খিস্তি-টিস্তি পরিপটি ভব্যতায় দিয়েছি কত – শত বার ; প্রকাশ্যে নয়তো মনে মনে ! স্বপ্নদ্বীপের নির্মোহ মাখা গাঢ় নিঃসঙ্গ ছায়া-ছায়া অস্পষ্ট কায়া অস্ফুটে বলতে চেয়েছে “আমাকে মেরোনা , আমি বাঁচতে চাই , আমাকে বন্ধুরা বাঁচতে দাও ! যারা ছেলেটাকে  মারলো ;  এদের জন্য বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে কেঁদেই চলেছে অহর্নিশ ,….  ভেতর থেকে নির্জন রাতের অন্ধকারে সভ্য-ভদ্র সেজে থাকা ছদ্মবেশী বর্বর জানোয়ার গুলো মাথা উঁচু করে প্রকাশ্যে ঘুরছে ফিরছে হাসছে নির্ভয়ে কথা বলছে বিদ্যাস্তম্ভের চাতালে !

চিত্রপট এভাবেই বদলে যায় , গেছে সময়ে ; বিচ্ছিরি স্বপ্ন নিয়ে মজে আছে এ দেশের প্রতিটা ঘর – বাড়ি এবং অন্য কোনো অন্তরের অন্তঃস্থল ! তবু উদ্ভিন্ন চোখের ভাষায় ভালোবাসা মাখা মন আমার মতো প্রতিবাদি বোকাকে নরকে পাঠায় !

শেষবার এই রাজপথে

গত জন্মের আয়না ভাঙার শব্দ পেয়েছিল স্বপ্নদ্বীপ ! ওর মৃত চোখ দুটো নিষ্পলক ছিল অনেকটা সময় ধরে , সেখানে মৃদু কান্নার চাপা আওয়াজ কেউ শুনতে পায়নি ; শোনার চেষ্টাও করেনি ! ___________________________________

দর্পণে পিপরীত মেরুকরণ     

অন্য দরজায় শয়তান  এসে দাঁড়ালে অনুমানের ফর্দ ঝাপসা হয়ে যায় ! এটাও আমাদের অস্তিত্বের সংকট ; তা না হলে বিভিষণপ্রথম দল পালটানোর সাহস পায় !

মাঝেমধ্যে মোমবাতির নিচে অন্ধকার স্পষ্ট হয়ে ওঠে , তাই  জ্যোৎস্না পেতে দিয়েছি প্রাচীন বৃক্ষের নিচে ,—– কেউ একজন মনস্তত্ত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষগুলোকে ঠকাচ্ছে সমষ্টির সমর্থন  চরিতার্থ করার জন্য !

এভাবেই চলছে দুনিয়া ; যা কিছু পালটেছে সবটাই নড়বড়ে ঘড়ির কাঁটা ! এটাই নাকি ঐতিহাসিক বিপ্লব !! বাকিটা ঈশ্বর চিহ্ন দিয়ে আঁকা ……. ___________________________________

চোখ  দুটো  আকাশ  ডেকেছে  মনে  মনে

ফেরবার পথে নতুন মেঘ স্পর্শে চেয়েছে ; একথা মাটির

লতাপাতারা কোনোকারণে বোঝেনি, — বোঝনি  তুমি

সেজন্যে বৃষ্টির অমোঘ গন্ধে নড়ে ওঠে নিশীথের নৌকার পাল

ফেরবার পথে খুব কাছে ছিল আকাশের এক কোটি তারা

হাত ডুবে ছিল বিন্দু বিন্দু আলো

সমস্ত দিনের কাছে আজ রাতের জন্মদিন

এই প্রথম ছন্দমিলে যাবার কথা বৈরাগী ভিখারী কবি জানতে

পেরেছে ……  প্রত্যেক পাতাতে শব্দ স্পন্দন আগুনে স্নান করে  !

ফেরবার পথে দুর্যোগ হলে

আলোর মধ্যে সাঁতারে গেছে বৃষ্টিঝড়

অনেক রাতে নদীতীরে ভেসে আসা মৃত্যুকাল

মহত কষ্ট নিয়ে বেঁচে ওঠে  !  নতুন শরীর থেকে জ্যোৎস্না অদৃশ্য

হবে – হবে ক’রে আশৈশব নির্জনতা বাতাসে ছোঁয়ায় আদিম

ঝড়ের আগামী তান্ডব ****

এই দিকে বেঁকে গেছে চোখ ঢাকা ভৌতিক অতীত

দ্বিধায় – দন্দে নিঃশ্বাস নীল এই জীবন —

যেখানে স্বপ্ন বদল করে কবিতা লেখা মন

স্মৃতির হাত ধরে কঠিন মুখ গুলো ব্যক্তিগত বন্দনা করে

নিজেরা নিজেই ।

ফেরবার পথে ঘুমন্ত কিছু ভুল নম্রতায় নত

অপার্থিব বিষণ্ণতায় ব্যস্ত ছিল সময়ের ঘূর্নি দুনিয়া ***

এই একা একা চোখ দুটো আকাশ ডেকেছে মনে – মনে

বৃষ্টির ভেতর থেকে একদল ভিক্ষুক ছায়ারা ইচ্ছা মত লুকিয়ে

যায় মেঘের আড়ালে —

এই একা একা নির্বোধ রেখাগুলো জল কাদায় অশরীর

এখানে বাতাস প্রার্থনায় হৃদয় পাইনি একমুঠো ক্ষমা

অথচ শেষ দিন চাঁদ ফুরিয়ে গেলে কবিতার নীল দেহ গভীরে

শুনতে পায় বৃষ্টির বহতা চলাফেরা  !

কথা হয়েছিল বেশ কিছু সময়

এইযে মৃত্যুময় দিন কতটুকু দেখেছে হৃদয়

সর্বনাশের রাস্তায় বুক চেপে কেঁদে ওঠে অন্ধ বিকেল —

ফেরবার পথে সে তবু একটিবার বলেনি ; থেকে যাও !

প্রাণ দেব, দেহ দেব, একবার মাথা খাও — থেকে যাও  !

একটু সুখ থেকে প্রতিভূ সময় নিয়ে ছিল বাঁচার সঞ্জীবনী

ঘোরতর দুঃখের ভেতর সহজ সরলতা ছায়ার মত জ্যোৎস্না

পেতে দিলে, সেখানে ঘুমিয়ে পরে মিথ্যা বিশ্বাস ****

ফেরবার দিন সব কিছু ফেলে চলে এলে

স্বভাবতই উদার মনে হয় অতলান্তের নিজেকে

নতুন কাব্য থেকে অমৃত অক্ষর গুলো চাপা দীর্ঘশ্বাস ছড়ায়

এই একা একা স্মৃতির বহু দূরে চলে যেতে হবে  !

অখন্ড চিন্তা ঘুর অলিন্দে বেশ ছিল

এবার মৃত্যু এবং মৃত্যুর রাস্তার ভেতর স্বপ্নাতুর হৃদয়

দিকহারানো সন্ধ্যায় উড়তে শুরু করলে ( ভুল করলাম, – চলতে

শুরু করলে ) নেশাগ্রস্তের মতো ঘৃণ্য দেখায়  !

শেষবার তার চোখে সামান্য কিছু স্বপ্ন বৃষ্টিবিন্দুর মত দেখা দিলে

কত উঁচুতে আকাশ ; সেটা মিলিয়ে গেল কান্নায় ****

এবার লোকজন জানিয়ে প্রাণ দেব

এবার শ্মশান মাটিতে ঘুমন্ত এই শরীর আগুন খাবে , পুড়ে যাবে ,

উড়ে যাবে, — তখন বলে দেখো ; ভালোবাসি  !

তাহলে মৃত্যুর পরও শেষ করবো নিজেকে *****

তারাভরা রাতে ছাই হব —

ঘোরতর ঘৃণায় সতেজ অসহবাসের দুঃখ

শেষ চিনিতে প্রেম চাইতেই ঋণী রইলাম যন্ত্রণার কাছে

এভাবে কবিতার অতল স্বপ্নময় কথা পথে

অপার্থিব স্মৃতি সঙ্গী ; একমাত্র তুমি —

সারাটা দিন বুকের ভেতর জেগে আছে আবিঙ্গনের নীল আকাশ

এই পথে চুরি হয়ে গেছে আমার আমিটার

অথচ তোমার জন্য কিছু বলেনি ; ব্যথা গোপন করেছি কতবার

হিসেব রাখিনি একবারও   !!

___________________________________

কবি পরিচিতিঃ  বাংলা কাব্য সাহিত্যের অন্যতম একজন জনপ্রিয় কবি হলেন বিদ্যুৎ ভৌমিক ৷ জন্ম ১৬ ই জুন , ১৯৬৪ পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার সাংস্কৃতিক পিঠস্থান শ্রীরামপুরের ঝিলবাগান অঞ্চলের “কুসুম কুঞ্জ”- এ ৷ পিতা ৺পিযুষ কান্তি ভৌমিক এবং মাতা ৺ ছায়ারাণী ভৌমিক ৷ ছাত্র জীবনের হাতেখড়ি শ্রীরামপুরের পূর্ণচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় ৷ মাত্র আট বছর বযসে প্রথম ছড়া লেখা দিয়ে তাঁর আত্মপ্রকাশ ৷ পরবর্ত্তী সময়ে বাংলা কাব্য সাহিত্যের সব শ্রেণীর পত্র-পত্রিকা , কবিতা সংকলনে একমাত্র কবিতা ও শিশু- কিশোরদের জন্য ছড়া লিখে কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক দু’ই বাংলার পাঠকদের মনের মণি কোঠায় পৌঁছে গেছেন ৷ তাঁর কবিতার মধ্যে নিজস্ব একটা ব্যতিক্রমী ঘরানা তিনি সৃষ্টি করেছেন ৷ তাঁর অন্যতম কাব্যগ্রন্থের মধ্যে  ১ ) কথা না রাখার কথা ২) নির্বাচিত কবিতা ৩) গাছবৃষ্টি চোখের পাতা ভিজিয়েছিল ৪ ) নীল কলম ও একান্নটা চুমু ,— ইত্যাদি ৷

দয়া করে খবরটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই ক্যাটাগরিতে আরো যেসব খবর রয়েছে
All rights reserved © UKBDTV.COM
       
themesba-lates1749691102