স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক না থাকা ভালো সিদ্ধান্ত এবং আরও আগে এ আইন বাতিল করা দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক না রাখার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সে প্রসঙ্গে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি।
নির্বাচন কাঠামো ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আসলে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তাই ঘটছে। পার্লামেন্টে তো আর বিরোধিতা করার কোনো কার্যকর দল নেই। সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রয়োজনেই সব করছে। জনভাবনা বা জনদায় তো আর গুরুত্ব পায় না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক থাকা না থাকার বিষয়টিও ঠিক তাই।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল উল্লেখ করে এই বিশ্লেষক বলেন, ‘এ সরকার যখন প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলো তখন আমার মতো অনেকেই এর বিরোধিতা করলেন। কারণ আমরা জানতাম এর ফলাফল কী হতে পারে। তাই হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন কাঠামোই তো ভেঙে ফেলা হলো। একটি বিশেষ প্রতীক যে পেয়েছেন, সেই পেশিশক্তির বলে বিজয়ী হয়েছেন। অন্য কোনো দল বা প্রতীকের প্রার্থী প্রচার-প্রচারণাই ঠিকমতো করতে পারেননি। সবকিছুই তো দলীয় প্রভাবে ধ্বংস করা হলো। জনগণ তো বিকল্প খোঁজার কোনো সুযোগই পাচ্ছে না।
‘প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিধিতে ছিল না। ২০১৫ সালে আইন করা হয়। সরকার তার প্রয়োজনে আইন করেছে। এখন আবার সরকার তার নিজের প্রয়োজনেই আইন বাতিল করছে। এতে কার কী আসে-যায়?
আর অন্য দল তো নির্বাচনে আসেই না। তারা এই আইন খুলেও দেখেনি। কোনো দাবিও করেনি। গণতন্ত্রই তো নেই, প্রতীকে কী আসে-যায়! এসব কথা বলেও তো লাভ নেই আর। আইন নিয়ে আলোচনা হয়, বিতর্ক হয়। পার্লামেন্টে তো এসব নিয়ে আর কোনো বিতর্ক হয় না। সব ‘হ্যাঁ’ যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক না থাকা ভালো সিদ্ধান্ত। আরও আগে এ আইন বাতিল করা দরকার ছিল’ বলছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার তৃণমূলে বিভাজন কমাতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিজেদের মধ্যকার বিভাজন নিরসন করার যে কথা ভাবছে, তা দলের ব্যাপার।
আমরা আসলে এ ব্যাপারে মন্তব্যও করতে পারি না। দলের বিভাজন তো আগেও ছিল। এবার জাতীয় নির্বাচনে হয়তো বেশি হয়েছে। বিশেষ করে তৃণমূল আওয়ামী লীগ এখন নানান ভাগে বিভক্ত। এ বিভাজন রাজনৈতিকভাবেই নিরসন করা দরকার আওয়ামী লীগের।
নিউজ /এমএসএম