নোয়াখালি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধকালে বৃহত্তর নোয়াখালীর মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) কমান্ডার মাহমুদুর রহমান বেলায়েত (৭৮) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ৯ অক্টোবর (সোমবার) সকাল ১০টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, সকাল ১০টার দিকে মাহমুদুর রহমান বেলায়েত ঢাকার বাসায় স্ট্রোক করেন। এ সময় তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বেলায়েতের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে অসংখ্য নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তার ঢাকার বাসায় এবং গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমান। এ সময় এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
মাহমুদুর রহমান বেলায়েত নোয়াখালী জেলায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেকে ভূমিকা পালন করেন। তিনি চৌমুহনী এসএ কলেজের সাবেক ভিপি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বেগমগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সাবেক নোয়াখালী-১০ সংসদীয় আসন (বর্তমানে নোয়াখালী-৩) থেকে ১৯৭৩ সালে প্রথমবার এবং ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নোয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এইচ এম ইব্রাহিম, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ খান হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও মুলধারার রাজনীতিক এমএ সালাম, আমেরিকান প্রেসক্লাব অব বাংলাদেশ অরিজিন-এর সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন ও সাধারণ সম্পাদক হেলাল মাহমুদ। ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান, ওয়েলস আওয়ামীলীগ সহ সভাপতি মকিস মনসুর ও ইউকে বিডি টিভির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর, যুবলীগ বৃষ্টল বাথ এন্ড ওয়েষ্টের সভাপতি ইন্জিনিয়ার খায়রুল আলম লিংকন, জেএসএফ বাংলাদেশ এর হাজী আনোয়ার হোসেন লিটন, আওয়ামী লীগনেতা মাহবুবুর রহমান মিলন, ভূতত্ত্ববিদ গিয়াস উদ্দীন আহমেদ, শিক্ষানুরাগী মোসারেরফ হোসেন খান চৌধুরী, আওয়ামী লীগনেতা ফিরোজ মাহমুদ, ওসমান গনি, সুহাস বডুয়া হাসু, নুরুননাহার মেরী প্রমূখ ।
তার প্রয়ানে রাজনৈতিকসহ সকল মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। ঢাকায় কয়েক দফা জানাজার পর তাঁর প্রিয় মাতৃভূমি চাটখিলে মৃতদেহ আনা হয়। চাটখিলে সর্বস্তরের জনসাধারণের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।রাত ৮টা ২০মিনিটের সময় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা সর্বসাধারণের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়। তাঁর কফিনে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সহ অনেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মরহুমের জানাজায় নোয়াখালী ১আসনের এমপি এইচ এম ইব্রাহিম, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবির, চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র খালেদ সাইফুল্লাহ, সোনাইমুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার রুহুল আমিন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সোনাইমুড়ী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল,সহ মুক্তিযোদ্ধারা, চাটখিলের ইউএনও ,এসিল্যান্ড ,চাটখিল থানায় অফিসার ইনচার্জ, চাটখিলে কর্মরত পুলিশ প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নেতা কর্মীরা , ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া সহ সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন। সকলেই অশ্রুসিক্ত নয়নে তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতি চারণ করেন। তাঁর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে রাজনীতি করার কথা বলেন। ১০ অক্টোবর ১০টায় নোয়াখালীর কালেকটরি মাঠে তাঁর শেষ জানাজা শেষে মাইজদী শহরে তাঁকে দাফন করা হয় ।